মাংসের সুস্বাদু বিকল্প তৈরি করছে জার্মান স্টার্টআপ
২৫ মার্চ ২০২৫আরেক স্টার্টআপ মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে, যেটি খেতে সুস্বাদু হবে৷ এই দুই স্টার্টআপের কাজ নিয়ে ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে৷
সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপটির নাম ‘গ্রিনহাব'৷ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার ইয়াভরস্কি জানান, তাদের লক্ষ্য বিশ্বের সবার জন্য তাজা খাবার নিশ্চিত করা৷
বার্লিনের স্টার্টআপ ‘এসেনসিয়া ফুডস' মাংসের বিকল্প তৈরি করছে৷ ‘সলিড-স্টেট ফার্মেন্টেশন' প্রক্রিয়া ব্যবহার করে মাশরুমের শিকড় মাইসেলিয়াম থেকে এটি তৈরি করা হয়৷ কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা হেন্ডরিক কায়ে বলেন, ‘‘আমরা বলছি: সবার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা থাকা দরকার৷ সব পরিবার যেন এটা পেতে পারে, এমনকি নিম্ন আয়ের দেশের মানুষজনও যেন পায়৷''
এসেনসিয়া ফুডসের আরেক প্রতিষ্ঠাতা আর্জেন্টিনার ব্রুনো স্কোকোসা৷ বায়োফিজিক্সে পিএইচডি করেছেন৷ এছাড়া তিনি একজন শেফও৷ মাশরুম দিয়ে মাংসের একটি ভালো বিকল্প তৈরি করতে চান স্কোকোসা, কারণ, বর্তমানে যে ভেগান বিকল্প পাওয়া যায় তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন৷
স্কোকোসা বলেন, ‘‘উদ্ভিদ-ভিত্তিক যেসব বিকল্প আছে তার অনেকগুলোর সমস্যা হচ্ছে, সেগুলোতে প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করা হয়, যেটা খেতে সুস্বাদু না৷ তাই ঐ স্বাদে পরিবর্তন আনতে অনেক মসলা ব্যবহার করতে হয়৷ কিন্তু আমরা এমন কিছু ব্যবহার করছি না, যেটার স্বাদ পরিবর্তন করতে হবে৷''
ক্লারা কোম্পানির একজন খাদ্য বিজ্ঞানী৷ তিনি নতুন পণ্য উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যেমন এই ভেগান ড্যোনার কাবাব৷ সামান্য মসলা ছিটানোর পরই এটি খাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়৷ ক্লারা জানান, ‘‘এটা আসলে খুবই বহুমুখী- বিভিন্ন ধরণের পণ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে৷ যেমন সসেজ হিসেবে খাওয়া যায়৷ এছাড়া ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত করতে হয় এমন সব খাবার, যেমন কিমা করা মাংস, কাবাবের স্ট্রিপ- যেমনটা এখানে দেখতে পাচ্ছেন, মুরগির টুকরো- ইত্যাদি হিসেবেও খাওয়া যায়৷''
জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়েছে লাইপজিগের স্টার্টআপ গ্রিনহাব৷ খরা ও অতিবৃষ্টির কারণে ঘরে জন্মানো সবজির কোনো সমস্যা হয় না৷ তবে গ্রিনহাব একটি সফটওয়্যার তৈরি করছে যেটি দিয়ে এসব সবজির বৃদ্ধির উপর নজর রাখা যায়৷
গ্রিনহাবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা কাই প্লাট জানান, ‘‘সফটওয়্যারটা আসলে মালির মতো কাজ করে৷ এটা গাছের স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখে৷ পুষ্টির মাত্রার মতো পানির প্যারামিটার থেকে শুরু করে এটি গাছের সামগ্রিক অবস্থা মূল্যায়ন করে থাকে৷''
তবে সফটওয়্যারটি এখনও অভিজ্ঞ মালির মতো হয়ে উঠতে পারেনি৷ সে কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিতে চায় গ্রিনহাব৷ তাই এখন গাছের সর্বোচ্চ পরিচর্যার জন্য প্রয়োজন এমন সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ যেমন আলো, পুষ্টি ও আর্দ্রতার সঠিক মাত্রা কেমন হওয়া উচিত ইত্যাদি৷
গ্রিনহাবের আরেক প্রতিষ্ঠাতা ইয়াভরস্কি বলেন, ‘‘এগুলো বেশ জটিল প্রক্রিয়া, এবং কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত চমক নিয়ে আসে৷ যেমন, গাছ হয়ত ছত্রাক সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারে৷ তেমনটা হলে কী করতে হবে সেই সমাধান এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই৷''
তারপরও জার্মানির দুটি বড় গবেষণা সংস্থা গ্রিনহাবের সফটওয়্যার নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে৷ জলবায়ু পরিবর্তন উদ্ভিদের উপর কী প্রভাব ফেলে তা জানতে এটি ব্যবহার করতে চায় তারা৷ এসেনসিয়া ফুডসের মাংসের বিকল্পের প্রতিও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে- একটি জার্মান সুপারমার্কেট চেন ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে৷ তাই কোম্পানিটি এখন উৎপাদন বাড়ানোর পথ খুঁজছে৷
ফাবিয়ান ডিটমান/জেডএইচ