ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রাশিয়া ও জাপানে সুনামি
৩০ জুলাই ২০২৫বুধবার ভোরে রাশিয়ার পূর্ব প্রান্তে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছে। বিশ্বের ভয়াবহতম ভূমিকম্পের অন্যতম এই কম্পন বলে মনে করা হচ্ছে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল আট দশমিক আট। কম্পনের পরেই উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি হয়। এরপর জাপানের উপকূলে এবং রাশিয়ার উপকূলে প্রথম সুনামির ঢেউ দেখা গেছে বলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
আলাস্কা, হাওয়াই, নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণে এবং হনুলুলুতে সুনামি সতর্কতা জারি হয়েছে। হনুলুলুর উপকূল থেকে মানুষজনকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ৩০ সেন্টিমিটার বা এক ফুট উচ্চতার প্রথম সুনামির ঢেউ দেখা গেছে নেমুরো উপকূলবর্তী অঞ্চলে। জাপানের পূর্ব উপকূলের অঞ্চল এটি। এরপর আরো বড় সুনামির ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে রাশিয়ার সেভেরো-কুরিলস্ক উপকূলেও প্রথম সুনামির ঢেউ দেখা গেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রাশিয়ার দ্বীপ কুরিলে এই উপকূলবর্তী জনপদটি অবস্থিত। স্থানীয় গভর্নর ভ্যালেরি লিমারেনকো সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্থানীয় মানুষকে আগেই উঁচু জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সুনামির আঘাতে এখনো পর্যন্ত হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সুনামির আশঙ্কা না কাটা পর্যন্ত কাউকে উপকূলে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সেন্টার জানিয়েছে, হাওয়াই, চিলে, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং জাপানে এক থেকে তিন মিটার উচ্চতার সুনামি ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। রাশিয়া এবং ইকুয়াডোরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে তিন মিটারের চেয়েও উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে।
সুনামি সেন্টার জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পরেই গভীর সমুদ্রে সুনামির ঢেউ তৈরি হয়ে গেছে। সেই ঢেউ উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জাপানের সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়। জাপানের আবহাওয়া দপ্তর জানায়, রিখটার স্কেলে আট কম্পনমাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে রাশিয়ার পূর্ব দিকে। পরে অ্যামেরিকার আবহাওয়া দপ্তর জানায়, কম্পনের মাত্রা আট দশমিক আট। ভূপৃষ্ঠের ২০ কিলোমিটার নিচে কম্পন হয়েছে।
রাশিয়ার পেট্রোপাভলভস্ক-কামচ্যাটস্কি শহর থেকে ১১৯ কিলোমিটার দূরে ভূমিকম্পের উৎসস্থল বলে জানানো হয়েছে। কামচ্যাটস্কা পেনিনসুলা অঞ্চলে এই শহর অবস্থিত। যেখানে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার মানুষের বসবাস।
ভূমিকম্পের পর ওই শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ খালি পায়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন। ঘরের ভিতর জিনিসপত্র উল্টে গেছে। রাস্তায় দাঁড়ানো গাড়ি গড়িয়ে গেছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল পৌঁছায় এবং তারা স্থানীয় মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছে। ওই এলাকায় এখন বিদ্যুৎ নেই।
অন্যদিকে সাখালিন দ্বীপ থেকেও দ্রুত মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সেখানেও সুনামির আশঙ্কা আছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি)