ভাস্কর্য ও ফ্যাশনের অভিনব মেলবন্ধন
১৭ জুন ২০২২চিনামাটির তৈরি অসংখ্য রিং দিয়ে মনোরম শব্দ সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ নেদারল্যান্ডসের শিল্পী সেসিল কেম্পারনিক এমন সব ভাস্কর্য সৃষ্টি করেছেন, যেগুলি সব ইন্দ্রিয় ছুঁতে পারে৷ নিজের সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমি এমন কিছু তৈরি করি, যা আগে কখনো দেখিনি বা শুনিনি৷ নতুন বস্তু, বিভিন্ন বস্তুর নতুন বিন্যাস যা আমাকে আনন্দ দেয়, আমার কাছে অদ্ভুত বা একেবারেই নতুন মনে হয়, সেগুলিই বেছে নেই৷''
সেসিল নেদারল্যান্ডসের টেক্সেল দ্বীপে বাস করেন৷ শিশু বয়সেই তিনি অত্যন্ত সৃজনশীল ছিলেন৷ তখন নাচ ও শিল্পকলা চর্চা করতেন৷ ফ্যাশন অ্যাকাডেমিতে এক বছর কাটানোর পর তিনি চারুকলার দিকেই ঝুঁকলেন৷ নানা ধরনের উপাদান নিয়ে কাজ শুরু করেন সেসিল৷ সেসিল বলেন, ‘‘প্রকৃতিই আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণা৷ বিশেষ করে জোয়ারভাঁটা, বাতাসের মতো পরিবর্তনের খেলা আমার ভালো লাগে৷ অনেকটা আমাদের ধমনীর রক্ত, বা হৃদস্পন্দনের মতো৷ প্রকৃতির এমন লীলা অনন্তকাল ধরে চলে৷’’
নিজের স্টুডিওতে তিনি সেরামিক ভাস্কর্যের মধ্যে প্রাণসঞ্চার করেন৷ ৬৯ বছরের এই শিল্পীর কাছে মাটির তাল নিয়ে কাজ অনেকটা সেই উপাদানের সঙ্গে সংলাপের মতো৷ তিনি ক্রমাগত নতুন কিছু শিখে চলেছেন৷ চূড়ান্ত মনোযোগ দিয়ে তিনি প্রত্যেকটি রিং তৈরি করেন৷ প্রান্তগুলি পানি দিয়ে এমনভাবে বন্ধ করে দেন, যাতে মাঝে কোনো বুদবুদ সৃষ্টি না হয়৷ সেসিল কেম্পারনিক বলেন, ‘‘মাটির একগুঁয়েমি আমার সত্যি খুব ভালো লাগে৷ সেটি যেন নিজের ইচ্ছাতেই চলে৷ কারণ, সপ্তাহে একবার, দুইবার আগুন জ্বালালে এমন সব কাণ্ড ঘটে, যা আমি ভাবতেই পারিনি৷ আমি আসলে এখনো আবিষ্কার করে চলেছি৷’’
নাচের প্রতি ভালোবাসা থেকেই সেসিল নিজের ভাস্কর্যের মধ্যে গতিশীলতা আনতে শুরু করেন৷ সঞ্চালনের ফলে যে শব্দ সৃষ্টি হয়, তা তথাকথিত এএসএমআর এফেক্ট ঘটায়৷ অর্থাৎ, সেই ভাস্কর্যের শব্দ শুনলে অদ্ভুত অনুভূতি হয়৷ সেসিল বলেন, ‘‘অর্থাৎ এটা আমার কাছে কোনো পদ রান্না করার মতো নয়৷ শিল্পকলা, সেরামিক বা নাচও করার মতো নয়৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তেমনই হয়েছে৷’’
সেসিল কেম্পারনিক ভবিষ্যতে নর্তকীদের সঙ্গে কাজ করতে এবং মঞ্চের জন্য শ্রুতিমধুর ভাস্কর্য ডিজাইন করতে চান৷
ওকেরি নিউতিনাজোর/এসবি