বৃহস্পতিবার বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সম্মেলন শেষ হচ্ছে
৬ জুন ২০০৮বার্তা সংস্থা এএফপি রোমে অনুষ্ঠানরত ঐ সম্মেলনের একটা খসড়া ঘোষণাপত্র সংগ্রহ করেছে যেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বনেতারা খাদ্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্ধ্বগতিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য সবধরনের পথ ব্যবহার করার কথা বলেছেন৷
তবে বিতর্কিত বায়োফুয়েল উত্পাদন ইস্যুতে ঐ খসড়া ঘোষণাপত্রে কঠোর কোনো সিদ্ধান্তের কথা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যদিও ব্রাজিল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বাকী সব দেশই বায়োফুয়েল উত্পাদনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে৷
খসড়া ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে যে, বায়োফুয়েলের ব্যবহার ও উত্পাদনের ক্ষেত্রে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে আরো গবেষণা প্রয়োজন৷
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএওর কর্মকর্তা কিথ ওয়েব বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তার উপর বায়োফুয়েল কতটা প্রভাব ফেলছে তা পরিমাপ করার জন্য একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে বিশ্বনেতারা একমত হয়েছেন৷
উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞরা বর্তমান খাদ্য সংকটের জন্য বায়োফুয়েল ক্রমবর্ধমান উত্পাদনকে অন্যতম কারণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন৷ কারণ মানুষের জন্য উত্পাদিত খাদ্যশস্যের অনেকখানিই বায়োফুয়েল উত্পাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
এছাড়া ৪৬ বছর পূর্বে কিউবার উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল তা নিয়ে সম্মেলনে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় চুড়ান্ত ঘোষণাপত্র তৈরীতে দেরী হচ্ছে বলে জানা গেছে৷
আরো কিছু ছোটোখাটো ইস্যুতে বিশ্বনেতৃবৃন্দ এখনো ঐকমত্যে পৌঁছুতে পারেননি বলে বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে৷
ঐ খসড়া ঘোষণাপত্রে আরো বলা হয়েছে যে, বিশ্বনেতৃবৃন্দ একট নতুন বিশ্ব বাণিজ্য চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যেখানে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে৷
এদিকে শেষ পর্যন্ত এই সম্মেলনের চুড়ান্ত কোনো ঘোষণাপত্র না থাকারও আশঙ্কা করেছেন কেউ কেউ৷ তারা বলছেন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ও ভূরাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিশ্বনেতাদের মাঝে এতটাই দূরত্ব দেখা দিয়েছে যে শেষ পর্যন্ত ঘোষণাপত্রের চিন্তা বাদ দেয়া হতে পারে৷
বিশ্বব্যাংকের মতে, গত তিন বছরে খাদ্যের মূল্য প্রায় দ্বিগুন বেড়েছে৷ ফলে গত ফেব্রুয়ারীতে আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুনে দাঙ্গায় চল্লিশজন মারা গেছে৷ আইভোরীকোষ্ট ও মৌরিতানিয়ায় প্রচন্ড বিক্ষোভ হয়েছে৷ সেনেগাল ও বুর্কিনা ফাসোতে দেশব্যাপী ধর্মঘট পালিত হয়েছে৷
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার থেকে বিশ্বের ১৮৩টি দেশের প্রতিনিধিরা ক্ষুধা নিবারণ ও সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করার উপায় বের করতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন৷