বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইএসএস)-এর পরিচালক এবং অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, "এর দুই ধরনের অর্থনৈতিক প্রভাব আছে। বাংলাদেশের স্বাভাবিক ব্যবসা -বাণিজ্য ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। আমরা এখন পাকিস্তান থেকেও আমদানি বাড়িয়েছি। এখন জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হবে। এবং ভারতের সাথে যে বাণিজ্য আমাদের, তা প্রধানত স্থল ও জল পথে হয়ে থাকে। পাকিস্তান প্রতিশোধ নেবে বলেছে। এখন যদি তারা ভারতের গুজরাটসহ অর্থনৈতিক হাবগুলোতে হামলা চালায়, তাহলে ভারতের সথেও আমাদের বাণিজ্যে কিছুটা হলেও বাধা তৈরি হবে। আমাদের রপ্তানিও বাধার মুখে পড়তে পারে। আমরা দুই দেশ থেকেই শিল্পের কাঁচামাল আনি । বিশেষ করে, পোশাক এবং ওধুধ শিল্পের জন্য। ফলে এখানে শিল্প উৎপদনের ওপরও প্রভাব পড়তে পারে।”
তার কথা, "এরই মধ্যে কয়েকটি এয়ারলাইন্স তার রুট পাল্টেছে। এখানে বড় সমস্যা হবে আকাশ ও সমুদ্র পথ নিয়ে। সেটা যদি হয়, তাহলে কিন্তু অন্য দেশের সঙ্গেও বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের সংকটের আশঙ্কা আছে। বাংলাদেশের জন্য অনিশ্চয়তা তো বটেই, এরই মধ্যে এই অঞ্চলেই অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক তৈরি হয়ে গেছে।”
"তৈরি পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হলে বাংলাদেশ সমস্যায় পড়বে। কারণ, পোশাক রপ্তানিতে লিড টাইম ৬০ দিন। এখন সমুদ্র, আকাশ পথ পরিবর্তন করতে হলে লিড টাইম তো বেড়ে যাবে। আমাদের এখনই এই বিষয়ে ভাবা উচিত,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, "ভারত-পকিস্তান যুদ্ধের প্রথম প্রভাব হলো মনস্তাত্বিক। সেই প্রভাব তো শুরু হয়ে গেছে। আমাদের পাশে দুইটি দেশে যুদ্ধ যদি প্রলম্বিত হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে তার প্রভাব পড়বে। অনেকেই হয়তো খেয়াল করে না, ভারতে কিন্তু তৈরি পোশাক রপ্তানি আমাদের কম নয়। আবার পাকিস্তানের সাথেও আমাদের ব্যবসা আছে। আমরা দুই দেশ থেকেই তুলা আনি, সুতা আনি। সেটা বাধার মুখে পড়লে আমাদের তৈরি পোশাক উৎপাদনও তো ক্ষতির মুখে পড়বে।”
"এই দুই দেশ ছাড়াও যদি আকাশ ও সমুদ্র পথে বাধা তৈরি হয়, তাহলে তো বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের সমস্যা হবে। আর ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিশ্বের শক্তিগুলো যদি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে কোনোভাবে, তাহলে কী পরিস্থিতি হবে ভাবাই যায় না,” বলেন তিনি।
তার কথা, "আমাদের অর্থনীতি ও বাণিজ্যের ওপর কী কী প্রভাব পড়তে পারে তার হিসাব এখনো শুরু হয়নি। তবে সরকারের উচিত হবে এখনই সব পক্ষকে নিয়ে বসে একটি আগাম হিসাব করা ও প্রস্তুতি নেয়া এবং একই সঙ্গে বিকল্পগুলোও ভেবে রাখা।”