বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি
২ জুলাই ২০০৮আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সম্প্রতি ঘোষণা করেছিল সরকারের সঙ্গে তথাকথিত সংলাপ বর্জনের কথা৷ দুই দলই দাবি করেছিল তাদের নেতাদের প্রথমে মুক্তি দিতে হবে৷
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন মনে করেন, পর্দার অন্তরালে অবশ্যই একটা বোঝাপড়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, আমার জানা মতে শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে পার্টি নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন সংলাপে অংশ গ্রহণ করার৷ এই পরিস্থিতিতেই শেখ হাসিনাকে বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি এবং খালেদা জিয়াকে শীঘ্রই মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ সরকার এবং বিরোধী দলের মাঝে সমঝোতা না হলে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হত না৷
সর্বশেষ আপোষটি এসেছে ক্রমবর্ধমান হারে সরকারের জনপ্রিয়তা হারানোর ফলে৷ খাদ্যদ্রব্যের উর্ধমূল্যের কারণে যে সরকার তার জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে তা নয়৷ অথচ বাংলাদেশে কয়েক সপ্তাহের অরাজকতার পর ক্ষমতায় আসার পর এই সরকার খুবই জনপ্রিয় ছিল ৷ দুই হাজার সাত সালের জানুয়ারী মাসে বাংলাদেশের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে তখন জনসাধারণ তাকে স্বাগত জানিয়েছিল৷ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সরকার বাংলাদেশের রাজনীতিতে শুদ্ধি অভিযান এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এর কথা ঘোষণা করে৷ ফলে হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়৷
মানবাধিকার সংস্থা এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর দক্ষিণ এশীয় গবেষক ফয়েজ আব্বাস এ জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অনেককে আটক করে রাখা হয়েছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ ছাড়াই৷ শুধু বলা হয়েছে, তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল৷
রাজনৈতিক দলগুলো দাবি করেছে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে৷ সরকার আশা করেছিল বয়স্ক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দুটি বড় দলের মধ্যে মতভেদ এবং বিদ্রোহ দেখা দেবে কিন্তু তা হয় নি৷ পার্টি কর্মীরা শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার অনুগতই থেকে গেছে৷
যাই হোক, বর্তমান তত্বাবধায়ক সরকার তার প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে৷