নাগপুরে সংঘর্ষ: আহত অন্তত নয় জন, গ্রেপ্তার ১৫, কারফিউ জারি
১৮ মার্চ ২০২৫নাগপুর এমনিতে শান্তিপূর্ণ শহর বলে পরিচিত। পুলিশ কমিশনারের নোটিশে বলা হয়েছে, নাগপুরের মাহাল অঞ্চলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের সমর্থকরা শিবাজি মহারাজের মূর্তির কাছে সমবেত হয়ে মুঘল শাসক আওরঙ্গজেবের সমাধি মহারাষ্ট্রের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানাতে থাকে। তারা আওরঙ্গজেবের প্রতীকী সমাধি পোড়ায়। এরপরই এটা নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়াতে থাকে।
আওরঙ্গজেবের সমাধি রয়েছে সাবেক আওরঙ্গাবাদ ও বর্তমান সম্ভাজি নগরে, যা নাগপুর থেকে অনেকটা দূরে।
এরপর সাড়ে সাতটা নাগাদ শখানেক মানুষ পাল্টা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেখান থেকে সহিংসতা ছড়ায়, সংঘর্ষ হয় বলে নোটিশে জানানো হয়েছে। প্রচুর দোকান, বাড়ি, গাড়ি-সহ যানবাহনে আগুন লাগানো হয়। পুলিশের দিকেও পাথর ছোঁড়া হয়। পুলিশ লাঠি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।
তারপর পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে বলে পুলিশ দাবি করেছে। সংঘর্ষে নয়জন আহত হয়েছেন, ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নীতিন গড়করির আবেদন
নাগপুর হলো মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করির শহর। আরএসএসের সদরদপ্তরও এই শহরে।
ঘটনার পর নীতিন গড়করি আবেদন জানিয়ে বলেছেন, সকলে যেন শান্তি বজায় রাখেন, কেউ যেন গুজবে কান না দেন।
নীতিন বলেছেন, ''আমি সকলকে আশ্বস্ত করে বলছি, যারা অন্যায় করেছে, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি জানেন। আমি সবার কাছে অনুরোধ করছিন, দয়া করে গুজবে কান দেবেন না।''
মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন
মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসের আবেদন, ''সকলে যেন আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেন। কেউ যেন আইন নিজের হাতে না নেন, গুজবে বিশ্বাস না করেন। নাগপুর শান্তিপূর্ণ মানুষের শহর। প্রত্যেকে এখানে একে অপরের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেন।''
তিনি বলেছেন, ''নাগপুরে মাহালে যা হয়েছে, তা একেবারেোই কাম্য ছিল না। মানুষ জড়ো হয়ে ইট ছুঁড়বেন, এটা হওয়া উচিত নয়। আমি সবাইকে আইন মেনে চলতে বলব। কেউ যেন শান্তিভঙ্গ না করেন। আমি ঘটনার উপর কড়া নজর রাখছি।''
বিরোধীদের বক্তব্য
উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা বিধায়ক আদিত্য ঠাকরে বলেছেন, ''রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগে এভাবে কখনো ভেঙে পড়েনি। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শহর নাগপুরের অবস্থা দেখে তা বোঝা যাচ্ছে।''
কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেছেন, ''গত কয়েকদিন ধরে নাগপুরে গোলমাল করার চেষ্টা চলছিল। বিভাজনের চেষ্টা হচ্ছিল। এই সহিংসতা কেন্দ্রে ও রাজ্যের শাসক দলের আসল চেহারা সামনে নিয়ে এল।''
এনসিপি নেতা ও সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে বলেছেন, ''নাগপুরের এই সহিংস তা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মানুষকে শান্ত থাকার অনুরোধ করছি। গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করছি। আসুন, আমরা সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করে সম্প্রীতি বজায় রাখি।''
জিএইঅচ/এসজি(পিটিআই, এনডিটিভি)