নদী বাঁচাতে ভোট চাইছেন তারক
পঞ্চায়েত ভোটের উত্তাপে তেতে আছে পশ্চিমবঙ্গ। সহিংসতার আবহে এই পঞ্চায়েত ভোটেই দেখা গেল অন্যরকম ছবি।
অন্য ছবি
পঞ্চায়েত ভোটের উত্তাপে তেতে আছে পশ্চিমবঙ্গ। সহিংসতার আবহে এই পঞ্চায়েত ভোটেই দেখা গেল অন্যরকম ছবি। নদী বাঁচানোর বার্তা নিয়ে ভোটে লড়াইয়ের ছবি।
জলঙ্গি বাঁচাতে
জলঙ্গি নদী বাঁচানোর বার্তা নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে নেমেছেন কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের মায়াকোলের বাসিন্দা তারক ঘোষ। জেলা পরিষদের ২৪ নম্বর আসন থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তিনি।
দূষিত নদী
তারকের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তারা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর বর্ষার সময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে জলঙ্গি নদী ও সুতির খালের জল বাড়তে থাকে। সুতির খালের জল ঢুকে দূষিত হয় জলঙ্গি নদী।
কালো জল
বর্ষাকালের শুরুতে কিছুটা হলেও বেড়েছে জলঙ্গি নদীর জল। কিন্তু সেই জলের রঙ কালো। আর সেই কারণে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নদী-সংলগ্ন এলাকার কৃষিজীবি ও মৎস্যজীবীদের। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, প্রতি বছর একই ঘটনা ঘটলেও তেহট্ট ২ ও জেলা প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই কেন?
দূষণরোধে কাজ হয় না
নদীকর্মী দেবাঞ্জন বাগচি বলেন, “জলঙ্গির দূষণ নিয়ে প্রশাসনের কাছে বহুবার জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। ভোটের আগে প্রার্থীরা নদী সংস্কারের অঙ্গীকার করে গেলেও ভোট মিটলে কাউকে পাওয়া যায়নি, তাই এবার নিজেদেরই প্রার্থী দিতে হয়েছে।”
উদ্যোগীা পরিবেশকর্মীরা
নির্দল প্রার্থী তারককে নিয়ে অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় প্রচার চালাচ্ছেন দেবাঞ্জন, কৌশিকের মত পরিবেশকর্মীরা, যারা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন জলঙ্গিকে বাঁচাতে। কৌশিক নিজের চিকিৎসক পেশার ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করছেন শুধুমাত্র নদী বাঁচানোর তাগিদে।
মরে যায় মাছ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পচা-কালো জল জলঙ্গি নদীতে প্রবেশ করতে শুরু করার ফলে নদীর রং কালো হয়ে গিয়েছে। এই কালো দূষিত জলের কারণে আগের মতো এবারেও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরার আশঙ্কা করছেন মৎস্যজীবীরা। বছরভর মাছ বিক্রি করে যাঁদের সংসার চলে, মাছ মরে গেলে রুটিরুজিতে টান পড়বে তাঁদের, আশঙ্কা মৎস্যজীবীদের।
প্রতীক দামামা
‘দামামা’ প্রতীকে লড়বেন পেশায় রঙের মিস্ত্রি তারক। স্থানীয় মানুষ মনে করছেন, নদী বাঁচানোর এই অভিনব উদ্যোগ একপ্রকার বিরল।যা সকলের নজর কেড়েছে। রাজনৈতিক কচকচানির বাইরে গিয়ে শুধুমাত্র পরিবেশ রক্ষার তাগিদ থেকে একজন মানুষ ভোটের ময়দানে নেমেছেন, এই দৃষ্টান্ত খুব একটা দেখা যায়নি আগে।
দূষণের জন্য চাষ ছেড়েছেন
তারক জানালেন, আগে তিনি চাষ আবাদই করতেন। নদীর দূষণ প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল তাতে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই তিনি রঙমিস্ত্রির পেশা অবলম্বন করেন। যে কারণে তাকে জেলার বাইরেও যেতে হয়। তারকবাবু বলেন, “জলঙ্গি নদীকে বাঁচাতে আমরা সবসময় চেষ্টা করি। মানুষকে সচেতনও করে এসেছি, কিন্তু এবার ভোটে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রভাব ফেলবে?
নদী বাঁচানোর জন্য ভোটের ময়দানে তারক। পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে সমানে প্রচার করছেন তিনি। তার এবং পরিবেশকর্মীদের এই যুদ্ধ কি মূলধারার রাজনীতিকে চাপে ফেলতে পারে?