দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো উত্তর কোরিয়া

চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ ও তাইওয়ানের উপর চীনের হামলার আশঙ্কার মাঝেই তৃতীয় বড় সংঘাতের বীজ বপন করছে উত্তর কোরিয়া৷ সম্প্রতি একের পর এক অস্ত্র পরীক্ষার ফলে এমন আশঙ্কা বেড়ে চলেছে৷ এবার জাপান সাগর লক্ষ্য করে সে দেশ সম্ভবত দূরপাল্লার আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে বলে সন্দেহ করা হয়েছে৷ উত্তর কোরিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, যে সতর্কতা ও নজরদারির পাশাপাশি সম্পূর্ণ প্রস্তুতি বজায় রাখা হচ্ছে৷ ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা সম্পর্কে সেই বিবৃতিতে কিছু বলা হয় নি৷ জাপানের প্রশাসনের সূত্র অনুযায়ী ক্ষেপণাস্ত্রটি ১,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় প্রায় ৬,০০০ কিলোমিটার অতিক্রম করেছে৷ উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সোন-হুই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, সে দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নিরাপত্তা আরও বাড়ালে পিয়ং ইয়ং আরও জোরালো সামরিক পদক্ষেপ নেবে৷

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত তার দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় পড়েছে৷ তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায় নি৷ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ওপেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর কোরিয়া অভূতপূর্ব গতিতে যেভাবে প্ররোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ তিনি এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের তীব্র নিন্দা করেন৷ জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা বলেন, তার দেশ উত্তর কোরিয়ার প্ররোচনার জবাব হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ চালিয়ে যাবে৷ দক্ষিণ কোরিয়াও এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের নিন্দা করে উপযুক্ত পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে৷ গত ৩রা নভেম্বর উত্তর কোরিয়া একটি আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, সেটি বেশিদূর যেতে পারেনি৷

সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব অতিক্রম করার ক্ষমতা থাকলে কোনো ক্ষেপণাস্ত্রকে ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল বা আইসিবিএম বলা হয়৷ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী উত্তর কোরিয়া যে কোনো দূরত্বের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে পারে না৷ ২০১৭ সালেই সে দেশ কম শক্তিশালী আইসিবিএম পরীক্ষা চালিয়েছিল৷ অর্থাৎ  পিয়ং ইয়ং আন্তর্জাতিক নিয়মের তোয়াক্কা না করে সামরিক কার্যকলাপ আরও জোরদার করে চলেছে৷ ফলে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা আরও বাড়ছে৷ উত্তর কোরিয়া বহু বছর পর আবার পরমাণু পরীক্ষাও চালাতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে৷ দক্ষিণ কোরিয়া শুক্রবার পিয়ং ইয়ং-এর উপর আরও নিষেধাজ্ঞার ডাক দিয়েছে৷

উত্তর কোরিয়া সত্যি সফলভাবে আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করতে পারলে, সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের যে কোনো জায়গায় আঘাত হানতে পারে৷ এমন ক্ষেপণাস্ত্রের পরমাণু অস্ত্র বহন করার ক্ষমতাও থাকে৷ উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির পরিসর খর্ব করতে ওয়াশিংটন নতুন উদ্যোগ নিলেও চীন ও রাশিয়া এর বিরোধ করে চলেছে৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এপি)

২০১৭ সালের ছবিঘরটি দেখুন...