দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার সরকারি প্রস্তাব খারিজ
২৩ ডিসেম্বর ২০১০টেলিকম ও অন্যান্য কেলেঙ্কারির তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি নিয়ে সরকার ও বিরোধী পক্ষের দ্বৈরথ সমরে সরকারের ওপর ক্রমশই চাপ বাড়ছে৷ সরকারের কোন বিকল্প প্রস্তাবেই রাজি হচ্ছেনা বিরোধী দলগুলি৷ সরকারের তরফে সর্বশেষ প্রস্তাব ছিল, বিরোধী পক্ষ রাজি থাকলে এই ইস্যুতে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা যেতে পারে৷ সে প্রস্তাবও বিজেপি খারিজ করায় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বিরোধী পক্ষের সমালোচনা করে বলেন, তারা সংসদীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে উদ্যত৷ এজন্য দেশের কাছে তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত৷
বিজেপি মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন বলেন, ২০০৯ সালে এই ইস্যু নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে, তাতে কোন কাজ হয়নি৷ এখন চাই যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত৷ বিজেপির অপর শীর্ষ নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ মনে করেন, সরকারের যদি কিছু লুকোবার না থাকে তাহলে জেপিসি গঠনে বাধা কোথায় ? আর প্রধানমন্ত্রী যদি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সামনে হাজির হতে রাজি থাকেন, তাহলে যৌথ সংসদীয় কমিটির সামনে নয় কেন ? সিপিআই-এম সাংসদ বৃন্দা কারাতের অভিযোগ, দুবছর ধরে এত বড় দুর্নীতি চলেছে৷ প্রধানমন্ত্রী এবং প্রণববাবু তা জানতেন৷ টেলিকম মন্ত্রী রাজা যা করেছেন পত্রপত্রিকায় যা প্রকাশিত হয়েছ তাতে স্পষ্ট, প্রতিটি জিনিস তাঁরা জানতেন৷ কমিউনিষ্ট পার্টির নেতা ডি.রাজাও অনুরূপ মত ব্যক্ত করেন৷
টেলিকম কেলেঙ্কারি ও জেপিসি নিয়ে যে অচলাবস্থা চলছে তাতে সুশীল সমাজের প্রতিক্রিয়া কী ? দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্বরাজ বসু ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, শুধু নামেই সরকারি তদন্ত, নির্দ্দিষ্ট ফল কিছু বের হয়না৷ না হয় তার লজিক্যাল কনক্লুশন৷ যে মুহূর্তে তা জনমানসের আড়ালে চলে যায়, তারপর সব চাপা পড়ে যায়৷ যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের বিরোধীদের দাবি সরকারের মেনে নেওয়া উচিত৷ কোন একজন মন্ত্রীর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর দায়িত্ব এড়াতে পারেন বলে আমি মনে করিনা৷ সকলের মনে প্রশ্ন উঠেছে সরকার যদি এতই স্বচ্ছ হয়, তাহলে জেপিসি থেকে পিছু হটছে কেন ? অবশ্য জেপিসি হলেই যে সব কিছু বেরিয়ে আসবে তা মনে হয় না কিন্তু কিছু স্বচ্ছতা তো আসবে৷''
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক