ডয়চে ভেলের নতুন মহাপরিচালক বারবারা মাসিং
২০ জুন ২০২৫ডয়চে ভেলে শুক্রবার (২০ জুন) ঘোষণা করেছে, ১ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে বর্তমান মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেবেন বারবারা মাসিং৷
ডিডাব্লিউ ব্রডকাস্টিং কাউন্সিল এবং এর নির্বাচনি কমিটির চেয়ারম্যান কার্ল য়্যুস্টেন বলেন, "পরবর্তী মহাপরিচালক হিসেবে বারবারা মাসিংকে নিযুক্ত করতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত৷"
য়্যুস্টেন বলেন, "তিনি শীর্ষ-স্তরের নেতৃত্ব এবং সাংবাদিকতার দক্ষতাই নিয়ে আসছেন না, বরং একটি বৈশ্বিক গণমাধ্যমের এক চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে ডয়চে ভেলেকে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় কৌশলগত দূরদর্শিতাও রেখেছেন৷"
এর আগে ডিডাব্লিউ-র ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মাসিং৷ য়্যুস্টেন বলেন, ডিডাব্লিউ-র অনুষ্ঠান সম্প্রসারণের পাশাপাশি সংস্থাটিকে সুবিন্যস্ত করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন মাসিং৷ তিনি বলেন, "গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার জন্য একটি বিশ্বস্ত, স্বাধীন বৈশ্বিক কণ্ঠস্বর হিসেবে ডয়চে ভেলের ভূমিকা জোরদার করার জন্য" মাসিংই উপযুক্ত নেতা৷''
ডিডাব্লিউ উপদেষ্টা বোর্ডের উপ-পরিচালক আখিম ডার্কসও ডয়চে ভেলের কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও পুনর্গঠনে মাসিংয়ের সাফল্যের প্রশংসা করেছেন৷ "ভূ-রাজনৈতিকভাবে চ্যালেঞ্জিং সময়ে" ডিডাব্লিউ "বিশ্বে একটি প্রাসঙ্গিক কণ্ঠস্বর হিসেবে উপস্থিত থাকা এবং মানুষকে বিনামূল্যে তথ্য প্রদান করা" নিশ্চিত করার জন্য মাসিংয়ের সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডার্কস৷
মাসিং তার নেতৃত্বের উপর আস্থা রেখে ডিডাব্লিউর ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করার সুযোগ দেয়ার জন্য কাউন্সিলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷
মাসিং বলেন, ‘‘তথ্যভিত্তিক, নির্ভরযোগ্য সাংবাদিকতা আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ এবং এআই-সংশ্লিষ্টতা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রবাহের সময়কালে আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷’’
ব্রডকাস্টিং কাউন্সিলের সাত সদস্যের নির্বাচন কমিটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে মাসিংয়ের নিয়োগ ঘোষণা করেছে৷
বিদায়ী মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ ২০১৩ সাল থেকে এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেন৷
ডিডাব্লিউর নেতৃত্বদানকারী প্রথম নারী
৩ মে, ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই প্রথম কোনো নারীকে মহাপরিচালক পদে পেতে যাচ্ছে ডয়চে ভেলে৷
আইনজীবী হিসাবে যোগ্যতা অর্জন করা মাসিং ২০০৬ সালে ডিডাব্লিউ-তে যোগদান করেন এবং ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা দলের অংশ হন৷ এর আগে তিনি জার্মান পাবলিক ব্রডকাস্টার এআরডি এবং ফ্রাংকো-জার্মান ব্রডকাস্টার আর্টে-র প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন৷
মাসিং বন শহরের আন্তর্জাতিক বেটোফেনফেস্ট এবং ইউনিভার্সিটি হসপিটাল বন-এর উপদেষ্টা বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন৷
কর্মজীবনে মাসিং ডিজিটাল রূপান্তর, সাংগঠনিক সংস্কৃতি এবং টেকসই বিষয়ক ইস্যুর ওপর মনোনিবেশ করেছেন৷
ডিডাব্লিউ-র পরিচালনা সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা, কৌশলগত ও পরিচালনামূলক কার্যক্রম দেখভাল এবং সমন্বয়ের দায়িত্ব মহাপরিচালকের৷
ডিডাব্লিউ আইন অনুসারে ব্রডকাস্টিং কাউন্সিল গোপন ব্যালটের মাধ্যমে মহাপরিচালককে ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত করে৷ নির্বাচনে জয়ী হতে হলে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়৷ মেয়াদ শেষে এই পদে পুনর্নির্বাচনের সুযোগ রয়েছে৷
ডিডাব্লিউ জার্মানির আন্তর্জাতিক সম্প্রচারক এবং বিশ্বের ৩২টি ভাষায় সংবাদ ও তথ্য সরবরাহ করে৷ ১৪০টি বিভিন্ন দেশের প্রায় চার হাজার কর্মী টিভি, অনলাইন এবং রেডিও পরিষেবার মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে ৩২ কোটি ব্যবহারকারীর কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়৷
সংবাদ ও তথ্যের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ও মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন, বিশ্ব বাণিজ্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বাস্থ্য শিক্ষা, পরিবেশ সুরক্ষা, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের মতো বিষয়গুলোতে জোর দেয় ডয়চে ভেলে৷