ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ইস্তফা, গ্রেপ্তার
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪বুধবার সাত ঘণ্টা ধরে জেরা করার পর হেমন্ত সোরেনকে গ্রেপ্তার করে ইডি। তবে তার আগে হেমন্ত গোঁ ধরে বসেছিলেন, তাকে রাজভবনে নিয়ে যেতে হবে এবং তিনি রাজ্যপালের কাছে আগে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। তার নিজের শক্তি দেখাবেন। তারপর অ্য়ারেস্ট মেমোতে সই করবেন।
তবে ভারতে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় এভাবে পদ ছড়া ও গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগে লালুপ্রসাদ ও জয়ললিতার ক্ষেত্রেও এই ঘটনা ঘটেছিল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও সমানে সমন পাঠাচ্ছে ইডি। তিনি সেই সব সমন অগ্রাহ্য করছেন। হেমন্তের গ্রপ্তারির পর প্রশ্ন উঠেছে, এরপর কি কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারিও আসন্ন?
ইডি-র কর্মকর্তারা হেমন্তকে রাজভবনে নিয়ে যান। হেমন্ত জোটের সব বিধায়ককে রাজভবনে আসার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বিধায়কদের রাজ্যপালের কাছে প্যারেড করানো হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ এভাবেই দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিধায়কদের রাজভবনের গেটে আটকে দেয়া হয়। হেমন্ত তারপর সমর্থনকারী বিধায়কদের তালিকা রাজ্যপালের হাতে তুলে দেন।
হেমন্ত প্রথমে তার স্ত্রীকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে দলের কয়েকজন বিধায়ক আপত্তি জানান। তাছাড়া ছয় মাসের মধ্যে জিতে আসার বিষয়টিও ছিল। সকলের সম্মতিতে ঠিক হয়েছে, দলের প্রবীণ নেতা চম্পাই সোরেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন। রাজ্যপালকেও সেটা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। রাজ্যপাল আমন্ত্রণ জানালে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারবেন। এখনো সেই আমন্ত্রণ পাননি তিনি।
হেমন্তের কবিতা
গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই হেমন্ত এক্স-এ একটি কবিতা পোস্ট করেন। হিন্দিতে লেখা এই কবিতার মর্মার্থ, ''এটা একটা বিরতি, জীবন একটা বড় যুদ্ধ, আমি তার প্রতিটি মুহূর্ত লড়াই করেছি, কিন্তু আমি সমঝোতা ভিক্ষা করব না। এই যুদ্ধে জয়পরাজয় নিয়ে আমি ভীত নই. ক্ষুদ্রতা আমাকে স্পর্শ করে না, তুমি মহান, সেভাবেই থাক। আমার মানুষের এই কষ্ট, আমি বৃথা যেতে দেব না, আমি হার মানব না।''
ইডি-র অভিযোগ
ইডি-র অভিযোগ, হেমন্ত সোরেন ও তার সহযোগীরা জোর করে প্রচুর জমি অধিকার করেছেন। এই জমি কেলেঙ্কারি ও অর্থপাচারের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইডি-র দাবি, তাদের কাছে এই বিষয়ে প্রচুর তথ্যপ্রমাণ আছে। তাই হেমন্তকে গ্রেপ্তার করেছেন।
ইডির দাবি, দালাল ও ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে এই কাজ করেছেন হেমন্ত সোরেন। তারা জমির দলিল বদল করেছেন। জাল দলিল তৈরি করেছেন। তাতে মালিকদের নামবদল করে দেখানো হয়েছে। তার বিত্তিতে জমি কেনাবেচা হয়েছে। আর হেমন্ত ও তার সহযোগীদের প্রচুর আর্থিক লাভ হয়েছে বলে ইডির এক কর্মকর্তা এনডিটিভি-কে জানিয়েছেন।
কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া
ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের জোটসঙ্গি হলো কংগ্রেস। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, ''ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে হেমন্ত সোরেনকে পদত্য়াগ করতে বাধ্য করলো ইডি। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মূলে আবার কুঠারাঘাত করা হলো। আইন সংশোধন করার পর তা দিয়ে এখন বিরোধী নেতাদের ভয় দেখানো হচ্ছে।''
তার অভিযোগ, ''ঝাড়খণ্ডের মতো প্রতিটি বিরোধী শাসিত সরকারকে অস্থির করার কাজে লেগে রয়েছে বিজেপি।''
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)