জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়ে আলোচনা শুরু হল সংস্থার সদর দফতরে
১৩ জুলাই ২০০৫জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়ে আলোচনা শুরু হল গত সোমবার নিউ ইয়র্কে বিশ্ব সংস্থার ১৯১টি সদস্যরাষ্ট্রের মাঝে৷ কীভাবে জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নিরাপত্তা পরিষদের সম্প্রসারণ করা হবে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হবে৷ জার্মানি হল চারটি দেশের মধ্যে একটি যে নিরাপত্তা পরিষদের নতুন স্থায়ী সদস্যের দাবী করছে এবং দেশটিও এর একটি সদস্য হতে আগ্রহী৷ কিন্তু পরিষদের সংস্কার-ধ্যানধারণার প্রতিরোধ দৃশ্যত অনেক বেশি জার্মানির কূটনীতিকরা বিগত কিছুদিন ধরে যা ভেবেছিলেন তার চেয়ে৷
সত্যি বলতে কি, জার্মানি, জাপান, ভারত ও ব্রাজিল ধারণা করেছিল ব্যাপারটা সহজ৷ কিন্তু আসলে তা নয়-যদিও দেশ চারটি সুপরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হচ্ছিল- যাতে তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ লাভ করে৷
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ঐ চারটি দেশ যখন তাদের খসড়া প্রস্তাব পেশ করে তখনই স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, দেশগুলো যত সহজ ভেবেছিল নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হওয়ার ব্যাপারে আসলে তা নয়৷ এখন দেখা যাচ্ছে আফ্রিকার গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো তাদের সমর্থনে এগিয়ে আসছে না৷
অন্যদিকে, চার গোষ্ঠীর প্রবল বিরোধীরা চুপ করে নেই৷ ইতালি, পাকিস্তান এবং মেক্সিকোও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পেশ করেছে- যাতে বলা হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ বাড়ানোর প্রয়োজন নেই৷ এটা গোপন কিছু নয় যে, এখানে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্বীতা কাজ করছে৷ ইতালি জার্মানির বিরুদ্ধে, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে এবং মেক্সিকো ব্রাজিলের বিরুদ্ধে৷ এই দেশগুলো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিতর্কে যথার্থ যুক্তিতর্ক খাড়া করেছে৷ জাতিসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত চার গোষ্ঠীকে এ মর্মে দোষারোপ করেছেন যে, তারা যদিও ন্যায়ের কথা বলছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা অনৈতিক অভিযান চালাচ্ছে জাতিসংঘে দুই-শ্রেণীর-ব্যবস্থা চালু করার উদ্দেশে৷ বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদে যে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রয়েছে তাদের সংখ্যা আর বাড়ানোর প্রয়োজন নেই ৷ স্থায়ী সদস্য দেশগুলো হল সুবিধাভোগী৷ তাই এদের সংখ্যা আর বাড়ানোর দরকার নেই৷ যদি তাই হয় তাহলে জাতিসংঘের অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো দ্বিতীয় শ্রেণীতে পরিণত হবে৷
চীনও চার গোষ্ঠীর ঘোষিত বিরোধী বিশেষ করে জাপানের৷ দেশটি বলছে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের সময় এখনো হয় নি ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এখন সংস্কারের বিরোধীতার কথা প্রকাশ্যভাবে বলছে৷ যদি এর ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয় তাহলে এই দেশ দুটি সংস্কারের বিপক্ষে ভোট দেবে৷ সংস্কার বিষয়ক শীর্ষ-বৈঠক হওয়ার কথা আগামী সেপ্টেম্বরে৷