ছয়শ কোটি টাকায় সুন্দর হলো কর্তব্যপথ, বসলো নেতাজির মূর্তি
দিল্লির বিজয়চক থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দীর্ঘ পথ ঢেলে সাজানো হলো। ইন্ডিয়া গেটে বসলো নেতাজির মূর্তি। নতুন সাজে সজ্জিত পথ ঘুরে দেখলো ডিডাব্লিউ।
নতুন সাজ
একদিকে রাষ্ট্রপতি ভবন, অন্যদিকে ইন্ডিয়া গেট, মাঝখানে তিন কিলোমিটার রাস্তা। এই রাস্তাতেই হয় প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড। এই রাস্তার দুই পাশ সুসজ্জিত করা হলো। বসানো হলো গ্রানাইট পাথর, সবুজ ঘাসের লন, ৯৭৪টি বাতিস্তম্ভ। ঝকঝকে চেহারায় আত্মপ্রকাশ করলো এই তিন কিলোমিটার রাস্তা ও তার আশপাশ।
রাজপথ থেকে কর্তব্যপথ
আগে এই রাস্তার নাম ছিল রাজপথ। এখন তার নামবদল করে রাখা হয়েছে কর্তব্যপথ। রাজপথ নাম আর চাননি মোদী। এখন থেকে কর্তব্যপথ দিয়েই প্রজাতন্ত্র দিবসের শোভাযাত্রা যাবে।
ছয়শ কোটি টাকা
এই পর্বের কাজের জন্য লেগেছে ছয়শ কোটি টাকা। তবে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের এটা একটা অংশমাত্র। পুরো প্রকল্প যথন চালু হবে, তখন সেখানে থাকবে নতুন পার্লামেন্ট ভবন, প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতির বাসভবন, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের অফিস। পুরো কাজ করতে লাগবে ২০ হাজার কোটি টাকা। আপাতত তিন কিলোমিটারের পথ খুলে দেয়া হলো।
নেতাজির মূর্তি
ইন্ডিয়া গেটের পাশে বসেছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি। নেতাজির মূর্তি ২৮ ফুট উঁচু। এই মূর্তি উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
একটি পাথর থেকে তৈরি
নেতাজির এই মূর্তি তৈরি হয়েছে একটাই গ্রানাইট পাথরের ব্লক থেকে। এই ব্লকের ওজন ছিল ২৮০ মেট্রিক টন। শেষ পর্যন্ত মূর্তির ওজন হয়েছে ৬৫ মেট্রিক টন। মূল ভাস্কর ছিলেন অরুণ যোগরাজ। মডেল তৈরি করেছেন নরেশ কুমাওয়াত।
আগে ছিল রাজার মূর্তি
যেখানে নেতাজির মূর্তি স্থাপিত হলো, সেখানে একসময় ব্রিটিশ রাজা পঞ্চম জর্জের মার্বেল মূর্তি ছিল। ১৯৩৯ সালে সেই মূর্তিটি ওখানে স্থাপিত হয়। স্বাধীনতার পর সেখান থেকে মূর্তিটি সরিয়ে নেয়া হয়। ১৯৬৮ সাল থেকে জায়গাটা খালি ছিল। এবার নেতাজির মূর্তি বসলো সেখানে।
সবুজ মাঠ
কর্তব্যপথের দুই পাশ এখন ঘন সবুজ ঘাসে ঢাকা। নতুন করে ঘাস লাগানো হয়েছে। এই জায়গাটি দিল্লির মানুষের কাছে খুব প্রিয়। সন্ধ্যার পর তারা সপরিবারে এখানে সময় কাটাতে পছন্দ করেন।
মানুষের আসা শুরু
খুলে দেয়া হয়েছে সেন্ট্রাল ভিস্তার এই অংশটি। তারপরই মানুষ আসতে শুরু করেছেন এখানে। তাদের নিরাপত্তার জন্য কর্তব্যপথের দুই পাশের এলাকায় সিসিটিভি বসেছে। প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। এখানে যারা আসবেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বোট ক্লাব থেকে
একসময় এই অঞ্চলের নাম ছিল বোট ক্লাব। অতীতে দিল্লির বড় বড় জনসভা হতো এখানে। পরে অবশ্য জনসভা নিষিদ্ধ করা হয়। জলের জায়গা আবার সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
সেলফি তোলার জায়গা
ইন্ডিয়া গেট ও নেতাজির মূর্তিকে পিছনে রেখে চলছে সেলফি তোলা। দিল্লির মানুষের কাছে নতুন আকর্ষণ এই সেন্ট্রাল ভিস্তা।
বিতর্কও আছে
এত বিপুল টাকা খরচ করে সেন্ট্রাল ভিস্তা নির্মাণ নিয়ে সমালোচনাও আছে। সমালোচকদের বক্তব্য, দেশের অর্থনীতি যখন চাপে, তখন এত খরচ করে এই প্রকল্প নেয়া উচিত হয়নি। তবে সরকারের দাবি, সবদিক ভেবে দেখেই এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সেন্ট্রাল ভিস্তা হলো বিশ্বমানের পরিকল্পনা।