চ্যাটজিপিটি আর মানুষের লেখার পার্থক্য ধরতে পারে ‘শার্লক'
২২ এপ্রিল ২০২৫টম ট্লক অনলাইনে ভুয়া তথ্য প্রতিরোধের এক মিশনে নেমেছেন৷ তিনি একটি টুল তৈরি করেছেন যা জার্মান ভাষায় তৈরি কোনো লেখা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে লেখা হয়েছে কিনা, তা সনাক্ত করতে পারে৷
এআই টেক্সট ডিটেক্টর ‘শার্লক'-এর ডেভেলপার টম ট্লক বলেন, ‘‘চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য বড় ভাষা মডেলগুলো সবচেয়ে সম্ভাব্য শব্দ নিয়ে সবসময় কাজ করে৷ তারা সম্ভাব্যতা নিয়ে কাজ করে৷ এবং এই সম্ভাব্যতার বিতরণ সনাক্ত করা যায় - এটা তাদের লেখাগুলোর ধরনের মতো৷ আমার মডেল এই ধরন এবং মানুষের লেখার মধ্যে পার্থক্য করে৷ এক্ষেত্রে যে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হয় তাহচ্ছে মানুষ ধারনা করা যায় না এমন শব্দও লেখে৷ আমরা একটু বেশি সৃজনশীল৷''
অনলাইন থেকে নেয়া লেখা পরীক্ষা করে দেখা যাক৷ ট্লক তার মাস্টার্স থিসিসের অংশ হিসেবে টুলটি তৈরি করেছেন৷ এটি দুই সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে মানুষের লেখা সনাক্ত করতে পারে৷
বর্তমান টুলটিকে প্রশিক্ষণে পাঁচ লাখ মানুষের তৈরি এবং এআইয়ের তৈরি লেখা ব্যবহার করা হয়েছে৷ লেখা যাচাইয়েরক্ষেত্রে এটি নব্বই শতাংশেরও বেশি নিঁখুত৷ এটি প্রবন্ধ, অনলাইন পোস্ট বা টুইট সবকিছুই যাচাই করতে পারে৷ তবে এটি ভুল তথ্য শনাক্ত করতে পারে না৷ শুধু সেগুলো মানুষের লেখা নাকি যন্ত্রের তা জানাতে পারে৷
টম ট্লক বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে ভুল তথ্য এবং অপতথ্য৷ মানুষ এই মডেলগুলো ব্যবহার করে৷ কখনো হয়ত চ্যাটজিপিটি কোনো ভুল করে এবং সেটা ছড়াতে থাকে৷ আবার কখনো মন্দ লোকেরা অপতথ্য ছড়ায়৷ তারা বট ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়া এবং কমেন্টে সেকশনে সেগুলো ছড়িয়ে দয়৷ একজন পাঠক তখন হয়ত ভাবে ‘আমি এটা কয়েকশত বার দেখেছি - এটা নিশ্চয়ই সত্যি৷'''
শার্লক তৈরিতে দুই বছরের বেশি সময় লেগেছে এবং এটি ক্রমশ বিকশিত হচ্ছে৷ টুলটিকে প্রশিক্ষণে চ্যাটজিপিটি সৃষ্টির আগের প্রকাশিত মানুষের লেখা ব্যবহার করা হয়েছে৷ উইকিপিডিয়াসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম থেকে সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে৷ ট্লক এটিকে আরো সমৃদ্ধ করার কাজ করছেন৷
টম ট্লক বলেন, ‘‘আমি চাইবো সব এআইয়ের তৈরি লেখায় উল্লেখ থাক যে এগুলো এআইয়ের তৈরি৷ তখন আমি যদি ইন্সটাগ্রাম বা টুইটারে যাই তাহলে বুঝবো কোনটা এআইয়ের তৈরি এবং সেটা কতটা নির্ভরযোগ্য হতে পারে৷ ''
বর্তমানে চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য এআই টেক্সট টুল শুধু লেখা তৈরির চেয়েও বেশি কিছু করে৷ কিন্তু সেগুলোর প্রোগ্রাম কোড, উপস্থাপনা, গণ ইমেল এবং একই ধরনের অনলাইন পোস্ট সনাক্ত করা যায়৷ কিন্তু এভাবে এআইয়ের তৈরি লেখা বাড়তে থাকলে তখন তা চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়বে৷
মিনিস্ট্রি অব ট্রান্সপোর্ট এন্ড ডিজিটাল ইনফ্রাস্টাকচারের অধ্যাপক হান্স ফেদেরাথ বলেন, ‘‘যেহেতু এই এআই প্রযুক্তি আরো সহজলভ্য হচ্ছে, এগুলো আরো কনটেন্ট তৈরি করবে৷ এবং কিছু সেবাদাতা রয়েছে যারা বিশেষভাবে এধরনের এআই ব্যবহার করে কৌশলে মতামত পরিবর্তন করছে এবং বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে৷''
টম ট্লকের এআই সনাক্তকারকটি এখন অবধি বেশ শক্তিশালী টুল৷ তবে কার্যকারিতা ধরে রাখতে এই প্রযুক্তির বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে এটি হালনাগাদও করতে হবে৷
প্রতিবেদন: স্ফেন রিকেন/এআই