চীনা ফ্লু ও শ্বাসকষ্ট: ভারতের ছয় রাজ্যে সতর্কতা জারি
২৯ নভেম্বর ২০২৩রাজস্থান, কর্ণাটক, উত্তরাখণ্ড, তামিলনাড়ু, গুজরাট ও হরিয়ানা রাজ্য সরকার সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে।
কর্ণাটক সরকার জানিয়েছে, মানুষ যেন এই জ্বর ও শ্বাসকষ্টের বিষয়ে অবহিত থাকেন। এর জন্য কী করতে হবে এবং কী করা উচিত নয় তা জানেন এবং মেনে চলেন। বলা হয়েছে, হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ডেকে রাখতে হবে, বারবার হাত ধুতে হবে বা স্যানিটাইজ করতে হবে, জনবহুল জায়গায় গেলে মাস্ক পরতে হবে, মুখে হাত দেয়া চলবে না।
রাজস্থান সরকারের জারি করা সতর্কতায় বলা হয়েছে, এখনই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে হাসপাতালগুলিকে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে মেডিসিন ও শিশু বিভাগকে সতর্ক থাকতে হবে।
উত্তরাখণ্ড সরকার বিশেষ করে চামোলি, উত্তরকাশী ও পিথোরাগড় জেলাকে সতর্ক করে দিয়েছে। এই তিন জেলাই চীন সীমান্তে।
হরিয়ানা সরকার নির্দেশ দিয়েছে, কোথাও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বাড়ার খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে যেন তা সরকারের নজরে আনা হয়। তামিলনাড়ু সরকারও সব হাসপাতালকে সতর্ক থাকতে বলেছে। একই নির্দেশ দিয়েছে গুজরাটও।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে সব রাজ্যকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, এই সময় যেন বাড়তি নজরদারি রাখা হয়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পার্থপ্রতীম বোসও সম্প্রতি ডিডাব্লিউকে জানিয়েছিলেন, ''এই সময় খুব সাবধানে থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ফ্লু ও নিউমোনিয়ার ইঞ্জেকশন নেয়া উচিত। দিল্লির মানুষ এমনিতেই দূষণের কারণে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবহাওয়ার কারণেও এই সময় সর্দি-জ্বর-শ্বাসকষ্ট বেশি হয়। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানা খুবই জরুরি।''
চীনের অবস্থা
চীনে বিপুল সংখ্যক মানুষ সর্দি-জ্বর-শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার কারণ জানানোর জন্য চীনকে অনুরোধ করে। বার্তাসংস্থা এপি জানাচ্ছে, চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন কোনো ভাইরাসের জন্য এটা হচ্ছে না। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, রাইনোভাইরাস, আরএসভি, অ্যাডিনোভাইরাসেই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মানুষকে মাস্ক ব্যবহার করতে বলেছেন এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জনবহুল জায়গার উপর নজর রাখতে বলেছেন।
চীনে বাচ্চারা বেশি করে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বেজিং-সহ উত্তর চীনে এর প্রাদুর্ভাব বেশি। কর্তৃপক্ষ বাচ্চাদের অন্য কোনো অসুখের বাড়াবাড়ি না হলে তাদের হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন গত ১৩ নভেম্বর সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছিল, বাচ্চারা বিশেষ করে শ্বাসকষ্টজনিত অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঠান্ডা পড়ছে এবং কোভিডের বিধিনিষেধ পুরোপুরি তুলে নেয়ার কারণেই এটা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, তাদের হাতে এই মুহূর্তে যথেষ্ট তথ্য নেই। তাই এই রোগও অতিমারির আকার নেবে কি না, তা তারা বলতে পারছেন না।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স, পিটিআই)