চিকাগোয় বারাক ওবামা তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা টীম পেশ করলেন
২ ডিসেম্বর ২০০৮সেই সঙ্গে এক নূতন কাঠিন্য এবং অনমনীয়তার আভাস৷
চিকোগোর সাংবাদিক সম্মেলনে হিলারি ক্লিন্টনের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে যে দু’টি বিশেষণ ব্যবহার করলেন ওবামা, সে দু’টি হল ‘‘টাফ’’ অর্থাৎ শক্ত, এবং ‘‘স্মার্ট’’ অর্থাৎ চালাক-চতুর৷ জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ওবামার বাণী হল, যে মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রকেও শক্ত হতে হবে, যদিও একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বে কোনো দেশের ভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্যই তার একার নয়৷
টাফ অথচ স্মার্ট
ক্লিন্টন যেন সেই সূত্র ধরেই চিকাগোতে বললেন: মার্কিণ জনগণ শুধু স্বদোশেই এক নূতন দিকনির্দ্দেশ কামনা করেনি, তারা চেয়েছে, ইতিবাচক পরিবর্তনের শক্তি হিসেবে বিশ্বে আমেরিকার ভাবমূর্ত্তির নবীকরণের এক নূতন প্রচেষ্টা৷ মার্কিণীরা জানে, যে তাদের নিরাপত্তা, তাদের মূল্যবোধ এবং তাদের স্বার্থ শুধুমাত্র বলপ্রয়োগ করে সুরক্ষিত অথবা অগ্রণী করা সম্ভব নয়, এবং একা মার্কিণীদের পক্ষেও সম্ভব নয়৷ সক্রিয় কূটনীতির মাধ্যমে, যাবতীয় পন্থা ব্যবহার করে এমন একটি ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সহযোগীদের সংখ্যা বেশী এবং প্রতিপক্ষদের সংখ্যা স্বল্প, যারা স্বাধীনতা, শান্তি এবং সমৃদ্ধি খোঁজে তাদের সুযোগ বেশী এবং ঝুঁকি কম৷ – আগামী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তাঁর এই প্রথম মন্তব্যে হিলারি ক্লিন্টনের মধ্যে যেন টাফ এবং স্মার্টের সেই প্রচ্ছন্ন মিশ্রণের এক ঝলক দেখা গেল৷
বাজপাখি না পারাবত?
চিকাগোয় ওবামার কিছু মন্তব্য তাঁর শান্তিপ্রেমী সমর্থকদের চিন্তায় ফেলতে পারে৷ মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী সামরিক বাহিনী বজায় রাখতে হবে, বলেছেন বারাক ওবামা৷ এবং যোগ করেছেন, যে সন্ত্রাসবাদীদের পলায়নের কোনো পথ থাকবে না৷
যুক্তরাষ্ট্রের বৈরীদের প্রতি ওবামার স্পষ্ট সঙ্কেত হল, যে ইরাক যুদ্ধের প্রতি তাঁর সুবিদিত বিরোধিতা সত্ত্বেও মার্কিণ স্বার্থ বিপন্ন হলে তিনি সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না৷
মুম্বই ও তার ফলশ্রুতি
ওবামা আপাততঃ মুম্বই প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের উপমহাদেশে উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টায় হস্তক্ষেপ করতে চাননি, কিন্তু জানিয়েছেন, যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিসা রাইস তাঁকে একাধিক বার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন, এবং তিনি স্বয়ং সপ্তাহান্তে টেলিফোনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর সঙ্গে কথা বলেছেন৷
পরোক্ষভাবে ওবামা তাঁর মনোভাব জানান এই বলে, যে উগ্রপন্থীরা নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করছে, এমন একটি বিশ্ব বরদাস্ত করা সম্ভব নয়৷ এ ধরণের বিপদের মোকাবিলার জন্য মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্র শুধু তার সামরিকই নয়, বরং পূর্ণ কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক শক্তিও ব্যবহার করবে৷ সন্ত্রাস কোনো সীমান্তে আটক থাকে না – গত সপ্তাহের ঘটনাবলী সে-কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, বললেন বারাক ওবামা৷