চলে গেলেন ফুটবলার হাবিব
১৬ আগস্ট ২০২৩জাতীয় দলের একসময়ের নিয়মিত সদস্য হাবিব কলকাতার তিন প্রধানেই খেলেছেন। তবে সবচেয়ে বেশিদিন খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলে। সেখানেই খেলা শুরু করেছিলেন এবং শেষ করেন মোহনবাগানের হয়ে খেলে। তার অনবদ্য স্কিল তো ছিলই, সেই সঙ্গে ছিল ফুটবলের প্রতি অফুরান আবেগ, লড়াই এবং দায়বদ্ধতা। গত শতকের ৬০ ও ৭০-এর দশকে কলকাতা ময়দান কাঁপানো হাবিব অ্যালঝেইমার্সে ভুগছিলেন।
ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন ৭৪ বছর বয়সে তিনি মারা গেলেন। ২০১৯ সালে শতবর্ষের অনুষ্ঠানে হাবিবকে সম্মানিত করেছিল ইস্টবেঙ্গল। তখন হাবিব কলকাতায় এসেছিলেন। ইস্টবেঙ্গলে হাবিব প্রথমবার এসেছিলেন ১৯৬৬ সালে।
এশিয়ান গেমসে যে ভারতীয় দল সৈয়দ নঈমুদ্দিনের নেতৃত্বে ব্রোঞ্জ জিতেছিল, তারও সদস্য ছিলেন হাবিব। কলকাতায় তাকে বলা হতো 'বড়ে মিঞাঁ', আর তার ভাই আকবরকে 'ছোটে মিঞাঁ'। সেই হাবিবের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে আনন্দবাজারকে নঈম বলেছেন, ''হাবিব কখনো লড়াই ছেড়ে পালাতো না। যেমন সিরিয়াস ছিল, তেমনই শৃঙ্খলাপরায়ণ। হাবিব চলে যাওয়ায় ভারতীয় ফুটবলের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।''
সাবেক ফুটবলার প্রসূন বন্দ্য়োপাধ্যায় মনে করেন, হাবিব অবশ্যই ভারতের সর্বকালের সেরা ফুটবলারের তালিকায় থাকবেন।
সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার হয়ে খেলার সময় হাবিবকে সমানে মেরে যান পাঞ্জাবের ফুটবলাররা। ম্যাচের শেষে জ্ঞান হারান হাবিব। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। স্যালাইন দিতে হয়। পরের ম্যাচের আগে হাসপাতাল থেকে বন্ড সই করে মাঠে নেমে বাংলাকে জিতিয়েছিলেন। এমনই ছিল তার দায়বদ্ধতা।
চিরদিন সকলের আগে প্র্যাকটিসে এসেছেন। পুরো দলের মধ্যে হার না মানা লড়াইয়ের মনোভাব সঞ্চারিত করেছেন। মোহনবাগানের সঙ্গে কসমসের খেলার পর পেলে তাকে খুঁজেছেন।
এই পেশাদার ফুটবলার কোনোদিন চাকরি করেননি। ফুটবলই ছিল তার সব। ধ্যান, জ্ঞান, আনন্দ, দুঃখ সব। সেই হাবিব চলে গেলেন। ভারতীয় ফুটবলের অনেকখানি শূন্য করে দিয়ে।
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, আনন্দবাজার)