গাছ নিয়ে দুর্নীতি
৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৮সেই বট গাছটির আনুমানিক বয়স আড়াই হাজার বছর৷ পবিত্র এই গাছটির ডাল কেটে বিক্রি করা হয় ২০০৬ সালে৷ থাইল্যান্ডে বসে ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ডালটি বিক্রি করা হয়৷ গাছটির কয়েকজন রক্ষক এই ঘটনা ঘটায়৷ এছাড়া নিয়মিতই গোপনে গাছটির পাতা বিক্রি করা হতো এবং বিক্রয়লব্দ অর্থ নির্দিষ্ট কয়েকজনের পকেটে জমা হতো৷ এসব বিষয় জানাজানি হওয়ার পর শুরু হয় অনুসন্ধান৷ সেই অনুসন্ধানে প্রমান মেলে যে শুধু ডাল কাটা বা পাতা বিক্রি নয়, আরো অনেক অনিয়ম চলছে এই গাছটিকে ঘিরে৷ বিশেষ করে নিয়মিতই চুরি যাচ্ছে ভক্তদের দেয়া আর্থিক অনুদান৷ প্রতি বছর কমপক্ষে এক লক্ষ বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং পর্যটক ঐ গাছটি দেখতে যায়৷ আর তাই অনুদানও নেহায়েত কম মেলে না৷
গৌতম বুদ্ধের ছোয়া পাওয়া এই গাছটিকে ঘিরে এসব ঘটনা বেশ বিরুপ প্রভাব ফেলেছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে৷
ঐ গাছকে ঘিরে যে অনিয়ম, দুর্নিতি হচ্ছে তা বন্ধ করার জন্য ক্যাম্পেইন করছেন হিন্দু পুরোহিত অরুপ ভ্রামচারি৷ এই প্রসঙ্গে তিনি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমি একজন হিন্দু হিসেবে আন্দোলন করছি না৷ আমি আন্দোলন করছি এজন্য যে আমি ভগবানকে ভালবাসি৷ বুদ্ধ ভগবানের সন্তান ছিলেন এবং এখানে কেউ একজন তার সম্পত্তির সঙ্গে খারাপ আচরন করছে৷
গাছটিকে ঘিরে এসব অনিয়ম, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তিনজনকে৷ এরা হচ্ছেন বৌদ্ধ ট্যাম্পেল ম্যানেজমেন্ট কমিটির সাবেক সাধারন সম্পাদক, একই কমিটির সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা এবং একজন সাবেক প্রধান পুরোহিত৷ ভারতীয় পুলিশ তাদের চিন্হিত করেছে এবং তদন্তের জন্য প্রত্যেকের ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরন চেয়েছে৷
উল্লেখ্য এই ঘটনার ফলে হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে কিছুটা দুরত্বও তৈরি হয়েছে৷ বিশেষ করে চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কয়েকজন হিন্দু হওয়ায় দাবি উঠেছে যে, বৌদ্ধ ট্যাম্পেল ম্যানেজমেন্ট কমিটিতে কোন হিন্দু থাকতে পারবে না৷ তবে স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট জিতেন্দ্র শ্রীভাস্তব জানিয়েছেন, একজন চোর হিন্দু বা বোদ্ধ হতে পারে৷ আমরা চোরকে চোর হিসেবেই দেখবো, কোন ধর্ম হিসেবে নয়৷