গঙ্গার নিচ দিয়ে যেভাবে গেল কলকাতা মেট্রোরেল

গঙ্গার ৩৩ মিটার নিচ দিয়ে তৈরি হয়েছে টানেল। কারণ, কলকাতার গঙ্গার তলায় মাটি খুব নরম। তাই অনেকটা গভীরে না গিয়ে টানেল তৈরি সম্ভব ছিল না। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সেই টানেল তৈরি হয়েছে। মেট্রোও ঢুকে পড়লো সেই টানেলে। ঘোষণা হলো, আপনারা এবার গঙ্গার নিচে প্রবেশ করছেন। রোমাঞ্চিত হলেন এই পরীক্ষামূলক যাত্রার সওয়ারিরা।

ভারতের মধ্যে কলকাতাই প্রথম, যেখানে নদীর তলা দিয়ে মেট্রো ছুটবে। এখন তার পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হলো। এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের গোড়ায় যাত্রীদের জন্য খুলে দেয়া হবে এই লাইন।

যখন ঘোষণা হলো গঙ্গার নিচ দিয়ে যাচ্ছে মেট্রো, তখন নিঃসন্দেহে একটা অন্যরকম অনুভূতি হয়। যে চেনা গঙ্গায় কতবার নৌকা বা লঞ্চে চড়েছি, কতবার স্নান করেছি, ঘাটের পাশে চুপ করে বসে থেকেছি, এবার পাতালপথে সেই নদীর তলা দিয়ে মেট্রোয় যাত্রায় অনুভূতিটা একেবারে অন্যরকম।

মেট্রো তখন টানেলে ঢুকে পড়েছে, কৌতূহলী কয়েকজন যাত্রী জানালার কাচে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন, টানেলটা কীরকম তা দেখার জন্য।

গঙ্গার তলা দিয়ে যাত্রা শেষ। লিখে দিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। টানেল শেষ হয়ে গেছে।

মেট্রোর এই যাত্রা শুরু হলো হাওড়া ময়দান থেকে। হাওড়া স্টেশনের পাশে। হাওড়া স্টেশন থেকেই তো ১৬৯ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম রেল চলাচল শুরু হয়েছিল। হাওড়ায় স্টেশন তৈরির কাজ শেষ। ঝকঝকে স্টেশনে মোটামুটি সবকিছুই তৈরি।

যখন মেট্রো নিয়মিতভাবে চলাচল শুরু করবে তখন গঙ্গার নিচে ৫২০ মিটারের টানেল পেরোতে লাগবে ৪৫ সেকেন্ড। তবে পুরো যাত্রায় গঙ্গাদর্শনের সুযোগ হবে না। টানেল ছাড়িয়ে আসার পরেও নয়। কারণ, মেট্রো এখানে পুরোটাই চলবে মাটির নিচ দিয়ে।

হাওড়া ময়দান থেকে আপাতত ট্রেন চলবে কলকাতার অফিসপাড়া বিবাদী বাগ হয়ে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। ফলে অফিসযাত্রীরা উপকৃত হবেন। এসপ্ল্যানেডে স্টেশন তৈরির কাজ চলছে। কয়েক মাসের মধ্যে তা তৈরি হয়ে যাবে।

যারা এই মেট্রো চালানোর দায়িত্বে আছেন, তাদের কাছেও এটা নতুন একটা অভিজ্ঞতা। সকলে মিলে পরামর্শ করছেন। সব দেখেশুনে নিচ্ছেন।

এই ইস্টওয়েস্ট মেট্রো চলবে বিধাননগর বা সল্টলেক থেকে হাওড়া পর্যন্ত। এখন সল্টলেক থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ট্রেন চলছে। এবার চলবে এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া। কিন্তু পুরোটা কবে চলবে বলা যাচ্ছে না। কারণ, বৌবাজারে মেট্রোর কাজ নিয়ে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই বাড়িতে ফাটল দেখা দিচ্ছে। বাসিন্দাদের হোটেলে নিয়ে রাখতে হচ্ছে। তাদের বিকল্প বাসস্থান দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।