কেন এমএ বেবিকে সাধারণ সম্পাদক করলো সিপিএম?
৭ এপ্রিল ২০২৫তার পুরো নাম মারিয়ম আলেকজান্ডার বেবি, তবে সিপিএমে তিনি এমএ বেবি বলেই পরিচিত। কেরালার সাবেক মন্ত্রী, সাবেক সাংসদ, এসএফআই নেতা, যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেবি যথেষ্ট অভিজ্ঞ ও দলে গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
সাধারণ সম্পাদক পদে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মহারাষ্ট্রের কৃষক নেতা ও পেশায় চিকিৎসক অশোক ধাওয়ালে। সীতারামের মৃত্যুর পর মহম্মদ সেলিম জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গে দলের হাল ফেরাতে চান। সর্বভারতীয় দায়িত্ব নেবেন না।
আগামী বছর মে মাসে কেরলায় বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। এপ্রিল-মে নাগাদ পশ্চিমবঙ্গেও নির্বাচন হতে পারে। কেরালাই একমাত্র রাজ্য যেখানে বামেরা ক্ষমতায় আছে। আগামী নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বামেরা এক বা একাধিক আসনে জিতলেই সেটা তাদের পক্ষে বড় সাফল্য হবে। কেরালার নেতারাও চাইছিলেন, তাদের রাজ্য থেকেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আসুক। এই পরিস্থিতিতে কেরালার বেবিকেই গুরুত্ব দিয়েছে সিপিএম।
প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''অশোক ধাওয়ালে মহারাষ্ট্রের মানুষ। নাসিক থেকে মুম্বই কৃষকদের লং মার্চ করে তিনি প্রচারে এসেছেন, গুরুত্ব পেয়েছেন। কিন্তু সর্বভারতীয় রাজনীতির অভিজ্ঞতা তার নেই। কিন্তু বেবির আছে। তাই তাকে বেছে নিয়েছে সিপিএম।''
বেবির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, কেরালায় দলকে জেতানো, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় দলের বেহাল অবস্থা কাটিয়ে সিপিএমকে আবার রাজ্যের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক করা।
সিপিএমে নিয়ম হয়েছে, ৭৫ বছর বয়স হলে আর পলিটব্যুরোতে থাকা যাবে না। একারণে প্রকাশ কারাট, বৃন্দা কারাট, সূর্যকান্ত মিশ্র, মানিক সরকাররা আর পলিটব্যুরোতে নেই। তবে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বয়স ৭৫ হয়ে গেলেও তাকে পলিটব্যুরোতে রেখে দেয়া হয়েছে। বেবির বয়স ৭০ বছর। সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার মেয়াদ তিন বছর। তাই তিনি দুইবার সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সূর্যকান্তর জায়গায় পলিটব্যুরোতে এসেছেন শ্রীদীপ ভট্টাচার্য।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে মীনাক্ষী
পশ্চিমবঙ্গের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছেন। মীনাক্ষী রাজ্যে খুবই পরিচিত নাম। সাংগঠনিক দক্ষতা আছে। সিপিএমের যুবদের সভায় ব্রিগেড ভরিয়ে দিয়ে তিনি অনেককে চমকে দিয়েছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাওয়ায় তিনি যুব সংগঠন ছেড়ে পুরোপুরি দলের মূল সংগঠনকে সময় দেবেন।
মীনাক্ষী ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছেন কনীনিকা ঘোষ বোস, সৈয়দ হোসেন, দেবব্রত ঘোষ, সমন পাঠক। বাদ বেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব, অঞ্জু কর, রেখা গোস্বামী ও অমিয় পাঠক। হুগলির দেবব্রত ঘোষ সিপিএমে একটা রেকর্ড করেছেন। তিনিই হুগলি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়া প্রথম নেতা। এছাড়া মহম্মদ সেলিম, তপন সেন, নীলোৎপল বসু-সহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন। কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে আছেন।
জিএইচ/এসজি(সিপিএমের সংবাদ বিবৃতি)