কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলা
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫মঙ্গলবার কাতারে হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। আক্রমণের কথা স্বীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানিয়েছেন, হামাস নেতাদের আক্রমণের উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
ঘটনার পর ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে দোহা। উল্লেখ্য, কাতারের মধ্যস্থতাতেই এতদিন ধরে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছিল। এদিনের এই ঘটনার পর কাতার জানিয়ে দিয়েছে, এরপর আর আলোচনা চালানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
অন্যদিকে হামাস দাবি করেছে, তাদের নেতারা বেঁচে আছেন। ইসরায়েলের হামলায় তারা নিহত হননি।
গাজা আলোচনা
এদিন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মেদ বিন আবদুলরহমান আল থানি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, ''এদিনের ঘটনার পর আর কোনো কিছুই বৈধ নয়।'' তবে একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য কাতার সবরকম চেষ্টা চালিয়েছে। ভবিষ্যতেও তার ব্যতিক্রম হবে না।
তবে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে নেতানিয়াহুকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন শেখ মোহাম্মেদ। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহু 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস' চালাচ্ছেন। গোটা অঞ্চলকে এমন এক অস্থিরতার জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল, যা আর মেরামত করা সম্ভব হবে না।
যদিও নেতানিয়াহুর বক্তব্য, এই আক্রমণ সম্পূর্ণ বৈধ এবং প্রয়োজনীয়। চারজন ইসরায়েলের সেনা নিহত হওয়ার পর এবং জেরুসালেমের বাসস্ট্যান্ডে হামলার ঘটনা ঘটার পর তিনি এই আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
অ্যামেরিকার দাবি
এদিকে অ্যামেরিকা জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার সতর্কবার্তা কাতারকে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা। কিন্তু বার্তা পাঠাতে তাদের একটু দেরি হয়েছিল।
কাতার জানিয়েছে, বোমা বর্ষণের শব্দ যখন শুরু হয়েছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা তাদের কাছে পৌঁছায়। ঘটনা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর অ্যামেরিকা বার্তা দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী।
কাতার মন্ত্রিসভার মুখপাত্রও এক্স হ্যান্ডেলে একই অভিযোগ করেছেন। অ্যামেরিকা হামলা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ স্বীকার করেছে অ্যামেরিকা। সমাজ মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, 'কাতারকে জানাতে একটু সময় লেগেছে আমাদের।'
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একজোট
কাতারের প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের সমস্ত রাষ্ট্রগুলির ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। এমন বর্বরোচিত কাণ্ডের জবাব দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইসরায়েল এই কাজ তার সঙ্গে আলোচনা করে করেনি। এবিষয়ে অ্যামেরিকা কিছু জানতো না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, কাতারের আমির এবং প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানিয়েছেন, এমন ঘটনা আর ঘটবে না।
ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি সকলেই ইসরায়েলের এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা করেছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)