কলকাতার রাস্তায় কেন দণ্ডি কাটলেন নারীরা?
নারীদিবসের দিন কলকাতার রাস্তায় দণ্ডি কাটতে দেখা গেল এই মেয়েদের। কেন এই কাজ করলেন তারা?
অভিনব প্রতিবাদ
গত ৭২৫ দিন ধরে আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতামান পেরোনোর পরেই দুর্নীতির জন্য তারা চাকরি পাননি বলে অভিযোগ। নারীদিবসে নারীদেরকেই সামনে রেখে তাদের প্রতিবাদ মিছিল এগিয়ে চলে। কালো পোশাক পরা নারীরা দণ্ডি কাটতে কাটতে এগিয়ে যান। কেউ ভেঙে পড়েন কান্নায়।
দুইটি সংগঠনের ডাকে
এই বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল দুইটি সংগঠন। একটি হলো ময়দানে গান্ধী-মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসা নবম-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকপদে চাকরিপ্রার্থীদের সংগঠন। তারা শিয়ালদহ থেকে রওয়ানা হয়ে এসএন ব্যানার্জি রোড হয়ে মঞ্চে ফেরেন। অন্যটি সরকারি কর্মীদের সংগঠন, যারা ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছে।
ধর্মতলায় দণ্ডি কাটা
ধর্মতলায় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয় মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের দণ্ডি কাটা। তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সেই জন্য রাস্তায় জল ছেটাচ্ছিলেন পুরুষ কর্মপ্রার্থীরা। এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘শুনেছি দণ্ডি কাটলে ভগবানও প্রার্থনা পূরণ করেন। নারীদিবসে আমাদের মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর কানে কি এই কাতর আবেদন পৌঁছচ্ছে না?”
'দয়া চাই না, চাকরি চাই'
কারও কারও দাবি, তারা লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৫০০ টাকার দয়া চান না, চান স্বনির্ভর হতে। বুধবার তিলোত্তমার রাজপথ সাক্ষী ছিল এমনই এক মিছিলের যার পুরোভাগে ছিলেন এসএলএসটি ২০১৬’র বঞ্চিত চাকরিপার্থী নারীরা।
সঙ্গী পুরুষরাও
নারীরা একা ছিলেন না। ছিলেন পুরুষ বিক্ষোভকারীরাও। নারীরা যখন দণ্ডি কাটছিলেন, তারা র্সাতয় জল ছিটিয়ে দিচ্ছিলেন। নারী সহযোদ্ধাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখতে সর্বত্রই ছিলেন পুরুষ কর্মপ্রার্থীরা।
ঘুম ভাঙবে কবে?
মিছিলে এক চাকরিপ্রার্থীকে কুম্ভকর্ণ সাজানো হয়। কুম্ভকর্ণ ঘুমিয়ে আছেন আর তাঁর কানের কাছে সমানে শাঁখ ও কাঁসর বাজাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। চিৎকার করে তাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘কুম্ভকর্ণ সরকার, এ বার জাগা দরকার।’ কুম্ভকর্ণ হলেন রামায়ণের চরিত্র ও বারণের ভাই, যিনি ছয় মাস ঘুমাতেন, ছয় মাস জাগতেন।
প্রতীকী মরদেহ
মিছিলে ছিল কর্মপ্রার্থীদের প্রতীকী মরদেহও। তাদের দাবি এই রাজ্যে যোগ্য কর্মপ্রার্থীদের মৃত্যু হয়েছে।
সফল হননি
তাদের আর্জি নিয়ে বহুবার নানা উপায়ে তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা, কিন্তু এখনো তারা সফল হননি। উল্টে তারা পেয়েছেন পুলিশের মার আর জেলে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা। এবার তারা অভিনব প্রতিবাদ দেখালেন।