উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কিছু আলোচিত ঘটনা ও বক্তব্য
২০২৪ সালের ৮ আগস্ট শপথ গ্রহণের পর থেকে বেশ কিছু ঘটনা এবং বক্তব্যের কারণে আলোচনা-সমালোচনায় থেকেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া৷ তার কয়েকটি নিয়ে আজকের ছবিঘর...
হেলিকপ্টারে চড়ে উত্তরবঙ্গ সফর
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়াঁর উত্তরবঙ্গ সফর ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়৷ বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী তখন ফেসবুকে অনেকে দাবি করেন, উপদেষ্টা মাত্র ছয় দিনে ২৮ বার হেলিকপ্টারে চড়েছেন। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী কটাক্ষ করে লিখেন, ‘‘নয় কিলো রাস্তা, উনি চাইলে রকেটে চড়েও যেতে পারতো।”
আসিফ মাহমুদের ব্যাখ্যা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০০ টাকার কম্বল বিতরণ করতে ৬ দিনে ২৮ বার হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করার সমালোচনার জবাবে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এক পোস্টে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘‘ছয় দিনে ২২টি উপজেলা ভ্রমণের সিদ্ধান্ত হয়, যা গাড়িতে কাভার করা অসম্ভব।’’ দীর্ঘ সেই পোস্টে উপদেষ্টা আরো বলেন, “বিগত দুই দিনের সফরে ঢাকা থেকে যাওয়া-আসাসহ মোট ছয় বার হেলিকপ্টারে যাতায়াত” করেছেন তিনি।
বাবার ঠিকাদারি
গত এপ্রিলে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্সের বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন এক সংবাদকর্মী। ‘বাবার ভুলের জন্য’ ক্ষমা চেয়ে ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ লেখেন, যে-কোনো ব্যক্তি লাইসেন্স করতেই পারে, ‘‘তবে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়ানো স্পষ্টভাবেই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট।’’ তিনি জানান, ‘‘আজ বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে।’’
এপিএস কাণ্ড
এর আগে আসিফ মাহমুদের বন্ধু ও সহকারি একান্ত সচিব মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে৷ সমালোচনা শুরু হলে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মোয়াজ্জেম হোসেনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে আসিফ মাহমুদ দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে অব্যাহতির সম্পর্ক অস্বীকার করে বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘‘তার এপিএস স্থায়ী চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বর্তমান পদ থেকে পদত্যাগ করার আবেদন আগেই করেছিলেন। সেটিই মঞ্জুর করা হয়েছে।’’
বিমানবন্দরে ম্যাগাজিন-বিড়ম্বনা
২৯ জুন ভোরে ‘ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে’ অংশ নিতে মরক্কোয় গেছেন আসিফ মাহমুদ৷ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্যানিংয়ের সময় তার ব্যাগে গুলিভর্তি ম্যাগাজিন পাওয়া যায়। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘‘আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে।’’ পরে এ বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ‘‘যখন সরকারি প্রটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’’
সংবাদমাধ্যমকে চাপ দেয়া প্রসঙ্গে
ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন ধরা পড়ার খবর একটি সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সরিয়ে নিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়৷ পরে চাপ দিয়ে খবরটি সরিয়ে নিতে বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করে ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘‘চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি যে এত কিছু ঘটেছে।’’
‘আমাদের সশস্ত্র অভ্যুত্থানের প্রস্তুতিও ছিল’
গত ২১ মার্চ আরেকটি ফেসবুক পোস্ট ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়৷ সেখানে গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়াঁ লিখেছিলেন, ‘‘আমাদের সশস্ত্র অভ্যুত্থানের প্রস্তুতিও ছিল। এমনকি ৫ তারিখে যদি আমরা সফল না হতাম তাহলে আমরা অস্ত্র তুলে নেয়ার ঘোষণা দিতাম। নাহিদ ভাই ভিডিও বার্তা রেডি রেখেছিল। এমনকি আমি কী ঘোষণা দেবো সেটাও রেডি ছিল।’’