ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
১৪ জুন ২০২৫পালটাপালটি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে
ইসরায়েলের হামলায় ৭৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরান।
দেশটির আধা-সরকারি তাসনিম সংবাদ সংস্থা এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন শনিবার ইসরায়েলি হামলায় আরও তিনজন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। তাসনিম জানিয়েছে, বিজ্ঞানীদের নাম আলী বাকি করিমি, মনসুর আসগারি এবং সাইদ বোরজি। তবে এই তিনজন কখন নিহত হয়েছেন, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
এর আগে শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের হামলায় আরও ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হওয়ার খবর ইরান জানিয়েছিল।
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় রেডিও শনিবার জানিয়েছে, শুক্রবারের ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই জেনারেল নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে হামলায় প্রাণ হারানো ঊর্ধ্বতন ইরানি সামরিক কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়ালো আট জনে।
সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের গোয়েন্দা উপ-প্রধান জেনারেল গোলামরেজা মেহরাবি এবং এর ডেপুটি চিফ অফ অপারেশনস জেনারেল মেহেদি রব্বানি উভয়ই ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন।
নিহত যেসব শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার নাম আগে ঘোষণা করা হয়েছিল তারা হলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, আধাসামরিক বিপ্লবী গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি এবং গার্ডের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির প্রধান জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ইরানের হামলায় তিন জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাত ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে। তবে ক্ষেপণাস্ত্রটি কোথায় আঘাত করেছে তা জানানো হয়নি।
সাত সেনা সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর বাড়ি ফেরত গেছেন বলেও জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
তেহরানকে 'পুড়িয়ে ফেলার' হুমকি দিলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ইরান ইসরায়েল লক্ষ্য করে আরও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে তেহরানে ব্যাপক হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটৎস। ইরানের রাজধানীতে ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস করেন।
কাটৎস এক বিবৃতিতে বলেছেন, "ইরানের একনায়ক ইরানের নাগরিকদের জিম্মি করে তুলছেন।"
তিনি বলেন, "যদি [ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী] খামেনি ইসরায়েলি হোম ফ্রন্টের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ অব্যাহত রাখেন - তাহলে তেহরান পুড়ে যাবে।"
আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো অবৈধ।
পারমাণবিক সরঞ্জাম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার দাবি ইরানের
ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনার সরঞ্জাম এবং উপকরণগুলো ইসরায়েলের আক্রমণের আগে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার কথা জানিয়েছে ইরান। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুস কামালভান্দি শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ-কে এই তথ্য জানিয়েছেন।
রাজধানী তেহরানের প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই স্থাপনাটি ভূগর্ভের গভীরে অবস্থিত এবং বিমান-বিধ্বংসী কামান দিয়ে সজ্জিত।
এই স্থাপনায় অন্যান্য সরঞ্জামের মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজও রয়েছে।
২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এর কাছে এই স্থাপনার অস্তিত্বই স্বীকার করেনি ইরান। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অবশ্য আগে থেকেই এই স্থাপনাটি নির্মাণ হয়েছে, এমন কথা বলে আসছিল।
এডিকে/এআই (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)