ইরাক-যুদ্ধ ও বিশ্ব নিরাপত্তা
১৮ অক্টোবর ২০০৪জাতিসংঘের মহাসচীব কোফি আন্নানের মতে, ইরাক-যুদ্ধ বিশ্বকে নিরাপদ করে নি এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক লড়াই-এও সেরকম কোন অবদান রাখে নি৷
ব্রিটিশ টেলিভিশন আইটিভি-এর সঙ্গে এক সাক্ষাত্ কারে- যা নাকি প্রচারিত হয় গত রবিবার, জাতিসংঘের মহাসচীব আন্নান বলেন, বিশ্বের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে তথা সন্ত্রাসবাদের হুমকী মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে৷ আন্নান বলেন, আমি মনে করি সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে গোটা বিশ্ব বর্তমানে অত্যন্ত জটিল ও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন৷ আমার বিশ্বাস সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে এবং তা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে৷ আমাদের এমন সহযোগিতা করতে হবে- যাতে বিভিন্ন দেশের সরকার নানা তথ্যের বিনিময় করতে পারে এবং সন্ত্রাসীরা যাতে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সমর্থন না পায় এবং কোন সুযোগসুবিধা না পায়- তা নিশ্চিত্ করতে হবে৷
জাতিসংঘের মহাসচীব কোফি আন্নানের সাক্ষাত্ কারের লিখিত সংস্করণটি প্রকাশিত হয় ব্রিটিশ টেলিভিশন আইটিভিতে সাক্ষাত্ কারটি প্রচারিত হওয়ার আগে৷
জাতিসংঘের মহাসচীব আন্নান জোর দিয়ে বলেন যে, আগামী জানুয়ারী মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষপথে ইরাক এখন ভাল অবস্থায় রয়েছে৷ তবে তিনি মত প্রকাশ করেন যে, নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে যদি কোন অনিয়ম দেখা দেয়, তাহলে তা তিনি প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে ছাড়বেন না৷
ইরানের পরমাণু কর্মসূচী সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করতে গিয়ে আন্নান এ মর্মে সাবধানবানী উচ্চারণ করে বলেন যে, দেশটির বিরুদ্ধে এই প্রশ্নে যদি সামরিক আক্রমন চালানো হয়, তাহলে তাতে কোন উপকার হবে না৷ আন্নান বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক আক্রমনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তবে তা হয়তো জাতিসংঘ সনদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে না৷ আমি মনে করি , জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাও বিষয়টিকে এভাবেই দেখবে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে, ইরান তার পরমাণু কর্মসূচীর মাধ্যমে পরমানু অস্ত্রশস্ত্র অর্জনের প্রচেষ্টা করছে৷ কিন্তু ইরান বারংবার বলেছে যে, সে শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দশ্যে তার পরমাণু কর্মসূচী গ্রহণ করেছে৷
এদিকে, ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্টোনিও মার্টিনো বলেছেন, তাঁর দেশ ইরাক থেকে তার সৈন্য হ্রাসের কথা চিন্তাভাবনা করছে৷ তবে মন্ত্রীর মতে, এটা নির্ভর করবে ইরাকে দুই হাজার পাঁচ সালের গোড়ায় অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের ফলাফলের ওপরে৷ উল্লেখ্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পর ইতালিরই সবচেয়ে বেশি সৈন্য ইরাকে মোতায়েনরত৷
আবদুস সাত্তার৷