আহমেদাবাদে বিমান বিধ্বস্ত: একজন জীবিত উদ্ধার, নিহত বাকি ২৪১
১২ জুন ২০২৫আহমেদাবাদ পুলিশের কমিশনার এ পি মালিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জীবিত উদ্ধার করা যাত্রী বিমানের ১১এ আসনে বসেছিলেন। পুলিশ তাকে উদ্ধার করেছে। তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। তার টি শার্টে রক্তের দাগ লেগে আছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার বলেছেন, বিমানটি যে আবাসিক এলাকায় গিয়ে পড়ে, সেখানেও কিছু মানুষ মারা গেছেন। মেডিক্যাল কলেজের যে মেসে বিমানটি পড়েছিল, সেখানে অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন বলে খবর এসেছে। তবে এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সরকারি ঘোষণা হয়নি।
আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার মিনিট দুয়েক পরেই তা নীচে নেমে আসে এবং ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে আকাশে। গুজরাট পুলিশকে উদ্ধৃত করে বার্তাসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, বিমানে ২৪২ জন যাত্রী ও বিমানকর্মী ছিলেন। বিমানটি এয়ার ইন্ডিয়ার ৭৪৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান। এই বিমানকে খুবই নিরাপদ বলে মনে করা হয়।
এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৭১ বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন যাচ্ছিল। ১টা ৩৮ মিনিটে সেটি বিমানবন্দর থেকে ছাড়ে। কয়েক মিনিট পরে তা বিধ্বস্ত হয়। বিমানে গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও বিমানে ছিলেন।
আহতদের সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিমানটি জনবহুল এলাকায় ভেঙে পড়েছে। ফলে যেখানে বিমানটি পড়েছে, সেখানেও অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকছে। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, একজন ক্যানাডার ও সাতজন পর্তুগিজ নাগরিক ছিলেন।
সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও পেশাদার পাইলট রাজীব প্রতাপ রুডি এনডিটিভিকে বলেছেন, বিমানে ৮০ থেকে ৯০ টন জ্বালানি ছিল। এই অবস্থায় বিমানটি ভেঙে পড়া মানে বোমা বিস্ফোরণের মতো ঘটনা। অসামরিক বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মোহোল বলেছেন, দুর্ঘটনার কারণ জানতে আরো কিছু সময় লাগবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুর্ঘটনা নিয়ে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা হৃদয়বিদারক ঘটনা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আহমেদাবাদ যাচ্ছেন। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রীও যাচ্ছেন সেখানে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কাইর স্টারমার বলেছেন, এই দুর্ঘটনায় তিনি শোকস্তব্ধ।
এয়ার ইন্ডিয়ার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ক্ষয়-ক্ষতি খতিয়ে দেখছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানটি ৮২৫ ফুট ওঠার পর নিচে নামে এবং ভেঙে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী জয়েশ জানিয়েছেন, ''মেঘানিনগর ও শাহিবাগের মধ্যে বিমানটি ভেঙে পড়ে। আমি পাঁচশ মিটার দূরে বসেছিলাম। বাড়ির উপর বিমানটি পড়ে। প্রচুর ধোঁয়া ওঠে। বড় বিমান ছিল। আমি দেখতে গেছিলাম। তখন পুলিশের গাড়ি এসে গেছে। প্রচুর দমকলের গাড়ি এসে যায়। পাশেই সিভিল হাসপাতাল। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্স আসে।''
দুর্ঘটনার পর আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে বিমানের ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়। বিকেল পাঁচটার পর তা আবার শুরু হয়।
জিএইচ/এসিবি (রয়টার্স, এএনআই, পিটিআই)