তারা এখন সাইবার বুলিংয়ের শিকার। কোচের বিরুদ্ধে নারী ফুটবলারদের বিদ্রোহের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দুই ভাগে বিভক্ত।এক পক্ষ নারী ফুটবলারদের প্রতি এতটাই আক্রমণাত্মক যে এমনকি অনবরত ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিও আসছে৷ ফেসবুক পোস্টে এমন অভিযোগের কথা খুব স্পষ্ট করেই উল্লেখ করেছেন জাপানি বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি ফুটবলার মাতসুশিমা সুমাইয়া।
সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের অধীনে দীর্ঘদিন অনুশীলন করেছেন মেয়েরা। ফলে ফুটবলারদের সঙ্গে একটা বোঝাপড়ার সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই গড়ে ওঠে ছোটনের। গড়ে ওঠে স্নেহ, ভালোবাসার সম্পর্ক। কিন্তু বিদেশি কোচ মেয়েদের খুব বেশি চেনেন না। ফলে শুধু মাঠের পারফরম্যান্স দিয়েই মূল্যায়ন করতে চান সবাইকে। তাছাড়া বাটলারের চোখে জুনিয়ররাই যেন সব, তারাই বাংলাদেশের নতুন ভবিষ্যৎ।
মারিয়া মান্দা, সানজিদা আক্তারদের ফুটবল ক্যারিয়ারের প্রথম কোচ মফিজ উদ্দিন মনে করেন সিনিয়র-জুনিয়রের লড়াই এভাবে সামনে এনে নারীদের দলটাকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলেছেন বাটলার, "আমি মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জেনেছি, কোচ চাইছেন তিনি দীর্ঘমেয়াদে একটা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চালাবেন। এবং এটা করতে গেলে উনি জুনিয়রদের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল বেশি থাকবেন স্বাভাবিক। সিনিয়রদের বয়স হয়ে গেছে। কিছুদিন পর তাদের পারফর্ম্যান্সের ঘাটতি হবে। উনি ভবিষ্যতের চিন্তা করে জুনিয়রদের বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদের বর্তমানকে নিয়ে ভাবা উচিত আগে।''
মফিজ উদ্দিন আরো মনে করেন, পারফর্ম্যান্সের কারণে নয়, ব্যক্তিগত ঈর্ষা, অহমের জায়গা থেকেই ব্রিটিশ কোচ কোনো কোনো ফুটবলারকে একাদশে রাখেন না, "উনি কিন্তু পারফর্ম্যান্সের কারণে বাদ দেননি কাউকে। যেমন নেপালে মাসুরার সঙ্গে টুপি পরা নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব হয়েছে কোচের। মাসুরা জানতো না যে টুপি পরে খাবার টেবিলে যাওয়া ইংলিশ রীতিতে অন্যায়। কোচ এটা নিয়ে ওখানে মাসুরার সঙ্গে রাগারাগি না করলেও পারতেন।” মাসুরাও দাবি করেন, সাফের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে একাদশে তাকে না রাখার ওটাই বড় কারণ।
তবে টুপি পরা ইস্যুতে কোচকে অভিযুক্ত করাটা যুক্তিসঙ্গত মনে করেন না জাতীয় নারী ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ডালিয়া আক্তার, "আমার কাছে মনে হয়েছে ইস্যুটা খুব একটা বড় না। বড় করা হয়েছে। কোচ বলেছে টুপি পরা যাবে না, মনের মধ্যে বিষয়টা লাগিয়ে ফেলেছে। এটা প্রেস মিটে বলাও যুক্তিসঙ্গত না। আমাদের সময়ে সমস্যা দেখা দিলে কোচের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছি।”