আদর্শ মোকাবিলায় ‘দল নিষিদ্ধ' কি কার্যকর পন্থা?
১৬ মে ২০২৫বাংলাদেশে বিপুল জনসমর্থন থাকা দল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর থেকে এই আলোচনা উঠেছে সমাজের নানা স্তরে৷
দলটির প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের হত্যার দায়ে শত শত মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়ের হয়েছে দলটির প্রধানসহ অনেকের বিরুদ্ধে৷
এছাড়াও আওয়ামী শাসনামলে (২০০৮-২০২৪) গুমসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগেও তদন্ত চলছে৷
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তির বিচারের বিধান থাকলেও সেটি সংশোধন করে দলকেও বিচারের আওতায় আনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনার পতনের পর দায়িত্ব নেয়া বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার৷
এইসব মামলায় বিচার হওয়ার আগ পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার৷ এরপর দলটির নিবন্ধনও স্থগিত করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন৷ ফলে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে, সেটিতে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রায় অনিশ্চিত বলেই ধারণা করা হচ্ছে৷
কিন্তু এর ফলে কী প্রভাব পড়তে পারে? অন্যান্য নানা দেশের উদাহরণ কী বলে?
জার্মানিতে কট্টরপন্থার ইতিহাস
১৯৪৫ সালের ৮ মে নাৎসি বাহিনী মিত্রবাহিনীর কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের পর জার্মানি কার্যত পরিচালিত হচ্ছিলো মিত্র বাহিনীর (যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়ন) এর অ্যালাইড কন্ট্রোল কাউন্সিলের মাধ্যমে৷ ১৯৫৫ সালে প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর পশ্চিম জার্মানি সার্বভৌমত্ব ফিরে পায়৷
জার্মানিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর পরাজয়ের পরপরই দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়৷ এমনকি দলটির নানা স্লোগান, স্বস্তিকাসহ অন্যান্য প্রতীক, এমনকি নাৎসি স্যালুটও রয়েছে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায়৷
ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে দলটির শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং শান্তির বিপক্ষে অপরাধের দায়ে বিচার শুরু হয়৷
১৯৪৯ সালে জার্মানির নতুন সংবিধান গৃহীত হয়, যেটি ‘বেসিক ল' বা ‘মৌলিক আইন' নামে পরিচিত৷ এই সংবিধানে নাৎসি পার্টির মতো অগণতান্ত্রিক দলগুলোর উত্থান ঠেকানোর জন্য বলা হয়েছে- ‘‘যেসব দল, তাদের লক্ষ্য বা তাদের অনুসারীদের আচরণের কারণে, স্বাধীন গণতান্ত্রিক মৌলিক ব্যবস্থাকে দুর্বল বা বিলুপ্ত করতে বা জার্মানির ফেডারেল প্রজাতন্ত্রের অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে চায়, তারা অসাংবিধানিক হবে৷''
কিন্তু কোনো দল ‘স্বাধীন গণতান্ত্রিক মৌলিক ব্যবস্থাকে দুর্বল' করছে কিনা, সেটা নির্ধারণ হবে কিভাবে? এজন্য জার্মানিতে একটি সাংবিধানিক আদালত রয়েছে, সেটিই কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা যাবে কিনা, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে পারে৷
১৯৪৯ সালেই সোশ্যালিস্ট রাইশ পার্টি- এসআরপি নামে একটি দল প্রতিষ্ঠা হয়, যাদের রাজনৈতিক আদর্শ ছিল নব্য-নাৎসি৷ ১৯৫০ সালের পর বেশ কয়েকটি স্থানীয় নির্বাচনে এই দলটি কোনো কোনো অঞ্চলে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পায়৷
১৯৫২ সালে দলটিকে উগ্র আদর্শ এবং গণতন্ত্র পরিপন্থি কার্যক্রমের কারণে নিষিদ্ধ করা হয়৷ ১৯৫৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টি অব জার্মানি- কেপিডি পশ্চিম জার্মানির পার্লামেন্টে আসন থাকা সত্ত্বেও নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়৷ সাংবিধানিক আদালত তাদের রায়ে ঘোষণা দেয় যে, কেপিডি দলটি জার্মানির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন মডেলে মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়৷ কিন্তু ১৯৬৮ সালেই আবার জার্মান কমিউনিস্ট পার্টি- ডিকেপি নামে এই দলের সমর্থকেরাই কার্যক্রম শুরু করেন৷
ডিকেপি দলকে এখন উগ্র-বামপন্থি হিসাবে বিবেচনা করা হলেও আনুষ্ঠানিক কোনো নিষেধাজ্ঞা তাদের ওপর নেই৷
গত কয়েক দশকে আরেকটি দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি- এনপিডিকে নিষিদ্ধ করার জন্য জার্মান সরকার বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছে৷ কিন্তু প্রতিবারই তা ব্যর্থ হয়েছে৷ সবশেষ ২০১৭ সালে সাংবিধানিক আদালত রায় দেয়, এনপিডি একটি সংবিধানবিরোধী দল এবং তাদের আদর্শ নাৎসিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হলেও জার্মানির গণতন্ত্র উৎখাতের মতো সামর্থ্য বা রাজনৈতিক প্রভাব দলটির নেই৷ ফলে এখনও দলটি বৈধভাবেই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছে৷
নিষিদ্ধ করতে চাওয়া দল হয়ে গেল নির্বাচনে দ্বিতীয়
অলটারনেটিভ ফর ডয়েচলান্ড- এএফডি দলটিকেনিয়ে গত কয়েক বছর ধরে চলছে ব্যাপক আলোচনা৷ অভিবাসনবিরোধী এবং মুসলিমবিরোধী এই কট্টর ডানপন্থি দলটিকে নিষিদ্ধ করা উচিত কিনা, এ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত জার্মানির রাজনৈতিক নেতারাও৷
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা- সংবিধান সুরক্ষা দপ্তর সম্প্রতি এটিকে ‘নিশ্চিত ডানপন্থি চরমপন্থি' হিসেবে তালিকাবদ্ধ করেছে৷
অবশ্য এএফডি বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছে এবং এখন রায় না হওয়া পর্যন্ত এই কথার ব্যবহার স্থগিত রাখবে গোয়েন্দা সংস্থা৷
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সবশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত উত্থান ঘটেছে দলটির৷ ২০ দশমিক আট শতাংশ ভোট পেয়ে পার্লামেন্টে ১৫২টি আসন নিশ্চত করেছে দলটি৷ অন্য সব রাজনৈতিক দল এএফডির সঙ্গে কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় সরকারে যেতে না পারলেও সবচেয়ে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসাবে জার্মানির আগামী কয়েক বছরের নীতিতে বড় ধরনের প্রভাব রাখতে পারবে এএফডি৷
বেশিরভাগ জার্মানের মতামত হলো যে এএফডির এজেন্ডা গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মানবিক মর্যাদার পরিপন্থি৷ নিষেধাজ্ঞার বিরোধীরা মনে করছেন, এমন সিদ্ধান্ত জার্মান সমাজে বিভাজনকে আরও বাড়িয়ে তুলবে৷ তারা বলছেন, নিষিদ্ধ করলেই ছয় কোটি ভোটারের মধ্যে এএফডিকে সমর্থন দেয়া এক কোটির বেশি ভোটার রাতারাতি দেশ থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবেন না৷ অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞার সমর্থকেরা জোর দিয়ে বলছেন, গণতন্ত্রের শত্রুদের গণতন্ত্র ধ্বংস করার মতো অবস্থানে রাখা উচিত নয়৷
লাইপজিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলসে ফ্রেংকেল-ব্রুন্সভিক ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি রিসার্চের উপপরিচালক ইয়োহানেস কিস মনে করেন, এএফডি নিষিদ্ধ করার আবেদনটি পরীক্ষা করা উচিত৷ তবে এএফডির মতো দলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করে দেয়ার বিপদ সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি৷
কিস ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘এরপর যদি মনে হয় যে এএফডি মৌলিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিপন্ন করে না, তাহলে আমাদের পার্লামেন্টে তাদের মোকাবিলা করে যেতে হবে৷''
তবে এর উলটোটা হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি৷ বলেন, ‘‘যদি এটি সত্যিই একটি হুমকি হিসাবে বিবেচিত হয়, তাহলে আমাদের সমাজে বিভক্তির বিষয়টি মোকাবিলা করতে হবে৷ কিন্তু অন্তত আমাদের এখন এমন কোনও ব্যক্তি নেই যিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এমন বিভাজনকে উৎসাহিত করবেন৷''
অভিবাসন, জলবায়ু সুরক্ষা এবং বেকারত্ব ভাতার মতো বিষয়গুলোতে এএফডি ছাড়াও জার্মানির বিভিন্ন গোষ্ঠী একে অপরের বিরোধী অবস্থান নিয়েছে৷
তবে কিস মনে করেন অন্য অনেক সমাজের মতো সামগ্রিকভাবে এখনও জার্মান সমাজ এতটা বিভক্ত হয়নি৷ কিস বলেন, ‘‘প্রকৃত মেরুকরণের চেয়ে ধারণা করা মেরুকরণ অনেক বেশি শক্তিশালী৷ (জার্মানিতে) এটি এখনও যুক্তরাষ্ট্রের মতো নয়, যেখানে গভীর বিভাজন রয়েছে৷ সেখানে আপনি যে ইস্যুই উত্থাপন করুন না কেন, আপনি হয় একদিকে বা অন্য দিকে থাকবেন৷''
বাংলাদেশে পরিস্থিতি কী!
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে উৎখাতে অংশ নেয়া আন্দোলনকারী এবং তাদের সমর্থকেরা দলটিকে প্রায়ই জার্মানির নাৎসি পার্টির সঙ্গে তুলনা করেন৷
২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের সবশেষ তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন নানা ধরনের কারচুপি, অন্য দলের বয়কট ইত্যাদি কারণে বিতর্কিত৷ তবে ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রথমবার ক্ষমতায় আসে, সেটিতে দলটি ৪৮ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল৷ এর আগে ২০০১ সালের নির্বাচনে আসনসংখ্যায় হারলেও মোট ভোটের হিসাবে শীর্ষে ছিল আওয়ামী লীগই৷ বিএনপি ১৯৩ আসন এবং আওয়ামী লীগ মাত্র ৬২টি আসন পায় অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে৷ কিন্তু বিএনপির ৩৩ দশমিক ছয় শূন্য শতাংশ ভোটের বিপরীতে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৩৭ দশমিক চার শূন্য শতাংশ৷
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন স্থগিত করা কার্যত নিষেধাজ্ঞারই নামান্তর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ রাজনীতি বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান মনে করেন ‘‘আওয়ীমী লীগের মতো দল নিষিদ্ধ করে কোনো ফল হয় না৷''
এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে ‘শর্টকাটে দল নিষিদ্ধ' না করে বরং রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার দিকে যাওয়া ভালো হতো বলে মনে করেন জাহেদ উর রহমান৷ তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেককে চিনি, যারা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ন্যূনতম সুবিধা নেয়নি, তারা এখনও নির্বাচন হলে নৌকায় ভোট দিতে চায়৷ এই লোকগুলোর পছন্দের দলকে আমরা যদি মনে করি প্রাসঙ্গিক থাকবে না, বা তারা জিতবে না, তাহলে পলিটিক্স দিয়ে সে ফাইটটা করা উচিত৷ সেটা বেশি কঠিন হলেও টেকসই৷''
এমন তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তের পেছনে আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবির পাশাপাশি অনেকের ‘রাজনৈতিক হিসাবনিকাশ' আছে বলেও মনে করেন জাহেদ৷
আরেকটি রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীও এর আগে নানা সময়ে নিষিদ্ধ হলেও নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে উঠে দলটি বারবারই ফিরে এসে নির্বাচনেও অংশ নিয়েছে৷ আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগেও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল, সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও এখনও দলটি নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় নিবন্ধন ফিরে পায়নি৷
জাহেদ উর রহমান মনে করেন, ‘‘বরং এমন নিষেধাজ্ঞা এক ধরনের ভিকটিমহুড তাদের পলিটিক্সে কাজ করার সম্ভাবনা আছে৷ কোনো না কোনোভাবে তারা ফিরে আসবে৷ এই দলটাকে এভাবে নিষিদ্ধ করে রাখা যাবে কিনা, এ নিয়েও আমার মনে প্রশ্ন আছে৷''
সরকারের প্রকাশ করা গেজেটে গণমাধ্যমকেও আওয়ামী লীগের বক্তব্য প্রচারের বিধিনিষেধের আওতায় আনা হয়েছে৷ তবে এটিও স্পষ্ট নয় খোদ সাংবাদিকদের কাছেই৷
দ্যা ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, ‘‘একটা বিধান যদি থাকে, যে এখন থেকে নিষিদ্ধ একটা পার্টি৷ এরপর মানুষ দেখলো তারা অ্যাকটিভিটি করলো, কিন্তু আমরা তা প্রকাশ করলাম না৷ মানুষ তখন ভাবতে পারে, সংবাদপত্র এটা কিভাবে স্কিপ করে গেলো? এটা তো স্বাভাবিক জিনিস না৷ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় এখানে একটু হস্তক্ষেপ হয়ে যায় বলে মনে করি৷''
এমন বিধানের ফলে সাংবাদিকরা সেল্ফ-সেন্সরশিপে ঢুকে যাবেন বলে আশঙ্কা এই সম্পাদকের৷ ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, ‘‘সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে একটা বিধান কিন্তু আছে৷ সেই বিধানের অধীনে সরকার চাইলে যেকোনো অ্যাকশন নিতে পারে৷ এখানে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে৷ এটা অ্যাপ্লিকেশনের ব্যাপার৷ সরকার যদি চায়, টুঁটি চেপে ধরতে পারে, আবার ওভারলুকও করতে পারে৷ তবে শঙ্কা থেকেই যায়৷''
এই অস্পষ্টতা নিয়ে কথা বলেছেন জাহেদ উর রহমানও৷ আওয়ামী লীগের বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে, এমনকি ডিডাব্লিউকে দেয়া সাক্ষাৎকারও এর আওতায় পড়ে কিনা, এ নিয়েও অস্পষ্টতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি৷ জাহেদ বলেন, ‘‘স্বাভাবিকভাবেই, যখন দ্বিধা থাকে তখন সাংবাদিকদের কাজ করাটাও কঠিন হয়ে যায়৷ অস্পষ্টতা সবসময় প্রবলেম্যাটিক৷''
তবে সাংবাদিকদের এখন অন্য নানা পক্ষের চাপেও পড়তে হচ্ছে৷ সম্প্রতি সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করাকে কেন্দ্র করে একটি সংগঠনের হুমকিতে চাকরিচ্যূত হয়েছেন একাধিক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক৷ জাহেদ উর রহমানের মতে, ‘‘অল্প কিছু মানুষও যদি ডিসাইড করে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে, তাহলেও অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে৷''
‘‘সবকিছু মিলিয়ে আসলে এই রিলেটেড একটা বাজে পরিস্থিতি তৈরি হলো৷ যেখানে সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতা ঠিকঠাকমতো কাজ করতে পারে না, সেখানে অনিবার্যভাবেই প্রবলেম আসবে,'' মনে করেন জাহেদ উর রহমান৷